ঝিনাইদহে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জব্দ করা শতকোটি টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে মহেশপুরে ৫৮ বিজিবির সদর দপ্তরে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মাদকদ্রব্য ধ্বংস করা হয়। মাদকগুলো গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মহেশপুর ও চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার ভারতীয় সীমান্ত এলাকা থেকে জব্দ করা হয়।

বিজিবির দেওয়া তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত মহেশপুর ও জীবননগর সীমান্তসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৫ হাজার ৮১৩ বোতল ফেনসিডিল, ৩৮ হাজার ৯৮০ বোতল ভারতীয় মদ, ২৯ বোতল এলএসডি, ৯০ কেজি কোকেন, ৩৬ কেজি হেরোইন, ৬ কেজি ক্রিস্টাল মেথ আইস, ১৩০ কেজি গাজা, ৬৬ হাজার ইয়াবা বড়ি, ২১ হাজার ভায়াগ্রা এবং ২০ হাজার বাংলাদেশি ও ভারতীয় ওষুধ ধ্বংস করা হয়। ধ্বংস করা মাদকের বাজারমূল্য ১১৯ কোটি ৬৪ লাখ ৮৩ হাজার ২০২ টাকা।

মাদকদ্রব্য ধ্বংস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিজিবির যশোর দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কবির। এ সময় অন্যদের মধ্যে কুষ্টিয়া সেক্টর কমান্ডার আহসান হাবিব, ঝিনাইদহ ৫৮ বিজিবির পরিচালক লে.

কর্নেল রফিকুল আলমসহ ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কবির বলেন, মাদক থেকে দেশকে রক্ষা করতে সীমান্তে বিজিবি কঠোর নজরদারি রেখেছে। পাশাপাশি মাদকের বিস্তার রোধে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সচেতন হতে হবে। অভিভাবকদের সন্তানের চলাফেরার গতিবিধিতে খেয়াল রাখতে হবে।

স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, সম্প্রতি মাদক চোরাকারবারিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের মাদক বাংলাদেশে ঢুকছে। প্রতিদিনই সীমান্তে র‍্যাব, পুলিশ ও বিজিবির হাতে মাদকের চালান ধরা পড়ছে। তবে যা আটক হচ্ছে, তার কয়েক গুণ ঢুকছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহেশপুরে প্রায় ৫৭ কিলোমিটার ভারতীয় সীমান্ত আছে। এর মধ্যে প্রায় ১১ কিলোমিটারে কোনো কাঁটাতারের বেড়া নেই। এলাকাজুড়ে আছে কোদলা নদী। এসব এলাকা দিয়ে রাতের আঁধারে মাদকদ্রব্য আসছে। বিভিন্ন সময় এসব সীমান্ত পথ দিয়ে অবৈধভাবে পারাপার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র ও স্বর্ণও আটক হচ্ছে।

ঝিনাইদহ ৫৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্নেল রফিকুল আলম বলেন, মাদক পাচার রোধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে কাজ করছে বিজিবি। সীমান্ত এলাকাগুলোতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ধ ব স কর ঝ ন ইদহ

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার

ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।

আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।

বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।

অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।

আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ