ইশরাকের শপথ ঘিরে রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ
Published: 22nd, May 2025 GMT
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ানোর আইনগত জটিলতা হাইকোর্টের আদেশে দূর হলেও রাজনৈতিক অঙ্গনে সৃষ্টি হয়েছে নতুন উত্তাপ। ইশরাকের শপথ ঘিরে শুরু হওয়া আন্দোলন এখন রূপ নিচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের স্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাজধানীর কাকরাইল মসজিদ সংলগ্ন আন্দোলনের স্থান ঘুরে দেখা যায়, বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শুধু শপথে দাবিতেই সীমাবদ্ধ নেই, তারা এখন নির্বাচনের দাবিও জোরালোভাবে তুলে ধরছেন।
খিলগাঁও থানার ৭৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মিছিল নিয়ে আসা মনির হোসেন বলেন, “আমরা চাই অতিদ্রুত ইশরাক ভাইকে মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানো হোক। পাশাপাশি এ আন্দোলনের ময়দান থেকেই নির্বাচনের রোডম্যাপ চাই আমরা। সরকারের অবস্থান অবশ্যই স্পষ্ট করতে হবে। সাধারণ মানুষ আজ নির্বাচন চায়।”
আরো পড়ুন:
৪৮ ঘণ্টার জন্য আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা ইশরাকের
দুই উপদেষ্টা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত লড়াই চলবে: ইশরাক
ওয়ারি থানা থেকে আসা আরেক আন্দোলনকারী আদম আলী বলেন, “নির্বাচনের বিকল্প কিছু নেই। আমাদের নেতা ইশরাক হোসেনের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। তাকে দ্রুত শপথ পড়ানো হোক।”
নেতাকর্মীরা স্লোগানে মুখর করছিলেন কাকরাইলের রাজপথ। তাদের কণ্ঠে শোনা যাচ্ছিল ‘আসিফের চামড়া, তুলে নেব আমরা’, ‘ইশরাক ভাইয়ের ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘এই মুহূর্তে দরকার, নির্বাচিত সরকার’, ‘শহীদ জিয়ার সৈনিকেরা, এক হও লড়াই কর’ ইত্যাদি স্লোগান।
এদিন বিকেলে হাইকোর্ট বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা একটি রিট আবেদন খারিজ করে দেন। বিচারপতি মো.
এ বিষয়ে ইশরাক হোসেনের আইনজীবীরা জানান, আদালতের এই আদেশের ফলে তার শপথ গ্রহণে আর কোনো আইনগত বাধা রইল না।
বিকেল সোয়া ৪টার দিকে আন্দোলনের মঞ্চে সংহতি জানাতে এসে ইশরাক হোসেন নিজেও সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন দক্ষিণ সিটির মানুষ। আমার শপথে বিলম্ব করে জনগণের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। তবে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। একইসঙ্গে আমাদের দাবির পেছনে আছে গণমানুষের রায়।”
সেগুন বাগিচার বাসিন্দা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা (অব.) তৌহিদুর রহমান বলেন, “ইশরাককে ঘিরে আন্দোলনের সূচনা হলেও এখন বিএনপি এই প্ল্যাটফরমকে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে ব্যবহার করছে। দলীয় নেতাদের মতে, সরকার যদি রোডম্যাপ না দেয়, তাহলে এই আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।”
তিনি বলেন, “একটি নির্বাচিত সরকারের মেয়রের শপথের মতো সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় বিলম্ব রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি করে। আদালতের আদেশ ইতিবাচক। এখন রাজনৈতিক সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচনের প্রশ্নে স্পষ্টতা দরকার।”
ঢাকা/এএএম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ড এসস স ইশর ক হ স ন র জন ত সরক র ব এনপ র শপথ
এছাড়াও পড়ুন:
যৌতুকের মামলার আগে মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক করা নিয়ে মহিলা পরিষদের উদ্বেগ
যৌতুক দাবি, যৌতুকের কারণে সাধারণ জখমের শিকার নারীদের মামলা করার আগে বাধ্যতামূলক মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বিধান করার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। আজ সোমবার এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করে বিধানটি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এ বিবৃতি দেন। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ১ জুলাই ‘আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ জারির মাধ্যমে আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০–এর ২১ ধারায় নতুন বিধান যুক্ত করে যৌতুক দাবি, যৌতুকের কারণে সাধারণ জখমের শিকার নারীদের মামলার আগে বাধ্যতামূলক মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। নতুন যুক্ত বিধান অনুসারে যৌতুক দাবি, যৌতুকের কারণে সাধারণ জখমের শিকার ভুক্তভোগী নারীকে লিগ্যাল এইড অফিসে মধ্যস্থতার মাধ্যমে নিষ্পত্তির উদ্দেশ্যে আবেদন করতে হবে এবং মধ্যস্থতা–প্রক্রিয়ায় ব্যর্থ হলে বিরোধের কোনো পক্ষ প্রয়োজনে উপযুক্ত আদালতে মামলা করতে পারবেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, যৌতুক দাবি, যৌতুকের কারণে সাধারণ জখমের শিকার নারীদের বাধ্যতামূলক মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বিধান যুক্ত করার মাধ্যমে নারীর ন্যায়বিচারের অভিগম্যতা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। বিচারপ্রার্থী ভুক্তভোগী নারীকে বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতার দিকে ঠেলে দেওয়ার মানে হচ্ছে তাঁকে আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিত করা। মধ্যস্থতায় কোনো একটি পক্ষ আপসে রাজি না হলে নির্যাতনের শিকার নারী পরে মামলা করে তা প্রমাণে বাধাগ্রস্ত হতে পারেন। এতে ভুক্তভোগীর হয়রানি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যৌতুক প্রতিরোধের জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন হয়েছে। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যৌতুক প্রতিরোধে আইন হয়েছে। আইনে যৌতুককে দণ্ডণীয় অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা ঠিক হবে না, যাতে যৌতুকের মতো অপরাধ সমাজে প্রশ্রয় পায়। আইনে বাধ্যতামূলক মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বিধান যুক্ত করার মাধ্যমে যৌতুক, যৌতুকের কারণে সাধারণ জখমের মতো অপরাধকে কম গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বাধ্যতামূলক বিচারপূর্ব মধ্যস্থতা নারীর ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। যৌতুক দাবি, যৌতুকের কারণে সাধারণ জখমের শিকার নারীদের সরাসরি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাওয়ার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, যা নারীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে যৌতুক দাবি, যৌতুকের কারণে সাধারণ জখমের শিকার নারীদের মামলার আগে বাধ্যতামূলক মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বিধানটি পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানায় মহিলা পরিষদ। পাশাপাশি যৌতুকের মতো বিষয়টিকে সমাজ থেকে নির্মূলের লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। বিবৃতিতে যৌতুকের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা বাড়ানোসহ সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলারও আহ্বান করা হয়েছে।