সিন্ধুসহ অভিন্ন নদীগুলোর পানি পাবে না পাকিস্তান: মোদি
Published: 23rd, May 2025 GMT
যেসব নদীর ওপর ভারতের অধিকার রয়েছে, সেগুলো থেকে পাকিস্তান আর পানি পাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৃহস্পতিবার রাজস্থানের একটি জনসভায় মোদি বলেন, প্রতিটি সন্ত্রাসী হামলার জন্য পাকিস্তানকে চড়া মূল্য দিতে হবে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকেও মূল্য দিতে হবে, পাকিস্তানের অর্থনীতিকেও মূল্য দিতে হবে।
ভারতশাসিত কাশ্মীরে গত ২২ এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করে ভারত। এটি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নেওয়া ভারতের কয়েকটি পদক্ষেপের একটি।
ভারত হামলাকে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট দাবি করলেও ইসলামাবাদ অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এর পর ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার আগে দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী প্রায় তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল।
পাকিস্তানে অভিন্ন নদনদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দেওয়ার যে কোনো পদক্ষেপ ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানিচুক্তি পাকিস্তানের কৃষি খাতে প্রয়োজনীয় ৮০ শতাংশ পানির নিশ্চয়তা দেয়।
মোদির পানি বন্ধের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী। তিনি বলেন, ভারত পাকিস্তানের পানি সরবরাহ বন্ধ করতে পারে– এমন চিন্তা করা পাগলামি। শুধু কোনো পাগলই এটি ভাবতে পারে যে, ভারত পাকিস্তানের পানি বন্ধ করতে পারবে। ২৪ কোটি জনসংখ্যার একটি দেশের পানি বন্ধ করা সম্ভব নয়।
নরেন্দ্র মোদির মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ছয়টি নদী কাশ্মীর থেকে উৎপন্ন হয়েছে এবং জাতিসংঘের রেজ্যুলেশন অনুযায়ী কাশ্মীর এখনও একটি বিতর্কিত অঞ্চল। কাশ্মীরের জনগণ যদি পাকিস্তানের সঙ্গে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে ওইসব নদী আমাদের হবে। ওই সময় পরিস্থিতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে– ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব থাকবে পাকিস্তানের ওপর।
এদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত নিয়ে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে খোঁচা দিয়েছেন দেশটির প্রধান বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, শুধু ক্যামেরার সামনেই আপনার রক্ত গরম হয় কেন? মূলত ‘শরীরে রক্ত নয়, আমার শিরায় সিঁদুর টগবগ করে ফুটছে’— মোদির এমন বক্তব্যের জবাবেই রাহুল এই মন্তব্য করেছেন। খবর ডন ও এনডিটিভির।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁদপুরে জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা, হাসপাতাল বন্ধ
চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে নবজাতক দাফনের সময় নড়ে ওঠা এবং পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হয় শহরের তালতলা দি ইউনাইটেড হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ফারুক হোসেন গাজী (৪৫)। এই ঘটনায় আগামী দুই দিনের মধ্যে রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তর করে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন হাসপাতালটিতে নানা অবৈধ কার্যক্রম চলে আসছে। ওই নবজাতকের জন্মও হয় এই হাসপতালে। জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা করার ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের এবং পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নবজাতককে কবরস্থানে নিয়ে আসা ওয়ার্ড বয় ফারুক গাজীকে গ্রেপ্তার করে।
এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন পৌর কবর স্থানের কেয়ারটেকার মো. শাহজাহান মিয়াজী।
এদিকে দি ইউনাইটেড হাসপাতালে এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি বলেন, “হাসপাতালে এসে ব্যবস্থাপনায় জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া মিলেনি। চিকিৎসক নেই, হাসপাতালের প্যাথলজি ও ওটির সঠিক পরিবেশ নেই। একই সাথে পোস্ট অপারেটিভ রোগীর জন্য কোন সুব্যবস্থা নেই এবং হাসপাতালের কাগজপত্রও নবায়ন নেই।”
তিনি আরো বলেন, “প্রাথমিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং ওটি, প্যাথলজি ও সংশ্লিষ্ট কক্ষ সীলগালা করা হয়েছে। একই সাথে রোগীদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্য স্থানে সেবার ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের অভিযানে পরিচালিত কার্যক্রম সিভিল সার্জন বরাবর প্রদান করা হবে। সিভিল সার্জন হাসপাতালের নিবন্ধন বাতিলসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পারবেন।”
এ ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল হাসান ফয়সাল, জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান। অভিযানে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ সহযোগিতা করেন।
অপরদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত শেষে হাসপাতালের ড্রাগ সনদসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরীক্ষা করে দেখেন জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান।
ঢাকা/অমরেশ/এস