যুদ্ধজাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করলো উত্তর কোরিয়া
Published: 25th, May 2025 GMT
উত্তর কোরিয়া গত বৃহস্পতিবার একটি যুদ্ধজাহাজ উদ্বোধনের সময় দুর্ঘটনার দায়ে তিন শিপইয়ার্ড কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে। দেশটির সংবাদমাধ্যম আজ রবিবার এ তথ্য জানিয়েছে। খবর বিবিসির।
পাঁচ হাজার টনের যুদ্ধজাহাজটি গত বৃহস্পতিবার (২২ মে) আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের সময় সেটির তলদেশের কিছু অংশ ভেঙে পড়ে, যার ফলে জাহাজটি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন উপস্থিত ছিলেন।
কিম এই ঘটনাকে ‘অপরাধমূলক কাজ’ বলে বর্ণনা করেন, যার তদন্ত চলছে।
আরো পড়ুন:
যুদ্ধজাহাজ দুর্ঘটনা উত্তর কোরিয়ার ‘মর্যাদা ও গর্ব’ নষ্ট করেছে: কিম
ইউক্রেন যুদ্ধে সেনা পাঠানোর কথা স্বীকার করল উত্তর কোরিয়া
উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে, আটককৃতদের মধ্যে উত্তর চংজিন শিপইয়ার্ডের প্রধান প্রকৌশলী রয়েছেন। ওই শিপইয়ার্ডে যুদ্ধজাহাজটি নির্মাণ করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে নির্মাণ প্রধান এবং একজন প্রশাসনিক ব্যবস্থাপককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনজন ‘দুর্ঘটনার জন্য দায়ী’।
এর আগে গত শুক্রবার কেসিএনএ জানায়, শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপক হং কিল হোকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো তলব করেছে।
স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, যুদ্ধজাহাজটি নীল টারপলিন দিয়ে ঢাকা অবস্থায় পড়ে আছে, জাহাজের একটি অংশ স্থলে রয়েছে।
কিম বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, “দুর্ঘটনাটি ‘সম্পূর্ণ অসাবধানতা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং অবৈজ্ঞানিক অভিজ্ঞতাবাদ’ এর কারণে সৃষ্ট।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উত্তর কোরিয়ার নেতা আরো বলেছিলেন, “এক মুহূর্তের মধ্যে আমাদের জাতির মর্যাদা এবং গর্বকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।”
তিনি আরো যোগ করেন, যারা ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন ভুল’ করেছেন তাদের আগামী মাসে অনুষ্ঠিত পূর্ণাঙ্গ সভায় মোকাবিলা করা হবে।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কী শাস্তি হতে পারে তা স্পষ্ট নয়। তবে উত্তর কোরিয়ার মানবাধিকারের রেকর্ড খুবই খারাপ।
সামরিক দুর্ঘটনার তথ্য উত্তর কোরিয়া সাধারণত প্রকাশ করে না, যদিও তারা অতীতে কয়েকবার এটি করেছে।
বৃহস্পতিবারের ঘটনাটি উত্তর কোরিয়া দেশের পশ্চিম উপকূলে একটি নতুন পাঁচ হাজার টনের যুদ্ধজাহাজ উন্মোচনের কয়েক সপ্তাহ পরে ঘটলো। দেশটির কর্মকর্তারা সেসময় জানিয়েছিলেন যে, এ ধরনের যুদ্ধজাহাজ ৭০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে সজ্জিত।
কিম এই যুদ্ধজাহাজকে দেশের নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে একটি ‘অগ্রগতি’ বলে অভিহিত করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে, এটি আগামী বছরের শুরুতে মোতায়েন করা হবে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ঘটন জ হ জট
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’
নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি।
৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে।
আরো পড়ুন:
দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে
সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা
২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা।
চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী।
উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।”
চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়।
মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত