নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনায় প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র চেয়ে করা রিটের শুনানি ২২ জুন
Published: 25th, May 2025 GMT
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনার ক্ষেত্রে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রপ্রক্রিয়া আহ্বান করার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানি পিছিয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ২২ জুন শুনানির দিন রেখেছেন।
বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তাজরুল হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার শুনানির এ দিন ধার্য করেন।
নিউমুরিং টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষে সংগঠনের সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন ওই রিট করেন। ‘নিউমুরিং সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে’ শিরোনামে ২৬ এপ্রিল প্রথম আলোতে প্রতিবেদন ছাপা হয়। এই প্রতিবেদনসহ এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন রিটে যুক্ত করা হয়েছে। রিটটি ২০ মে শুনানির জন্য উঠলে রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আজ বেলা দুইটায় শুনানির জন্য দিন রেখেছিলেন।
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম এবং আইনজীবী আনোয়ার হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো.
বিষয়টি উঠলে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এটি পলিসির বিষয়, নির্দেশনা প্রয়োজন। লার্নেড ফ্রেন্ড (রিট আবেদনকারীর আইনজীবী) হজ করতে যাচ্ছেন। ১৪ জুন তাঁর দেশে ফেরার কথা। এর এক সপ্তাহ পর শুনানির দিন রাখা যেতে পারে।
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের কাছ থেকে নির্দেশনা নেওয়ার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল সময় চেয়েছেন। রিটটি ২২ জুন শুনানির জন্য আসবে।
রিটের আবেদনে দেখা যায়, দেশীয় অপারেটরদের অনুমতি না দিয়ে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) আইন ও নীতি লঙ্ঘন করে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না—এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। যেকোনো অপারেটরকে এনসিটি পরিচালনার জন্য দায়িত্বে (নিযুক্ত) করার আগে সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতি অনুসারে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক বিডিং (দরপত্র আহ্বান) নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না—সে বিষয়েও রুল চাওয়া হয়েছে। রিটে নৌপরিবহনসচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিট আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর ভাষ্য, ২০১৯ সালে সমঝোতা স্মারকের মধ্য দিয়ে প্রক্রিয়া শুরু হয়। টার্মিনাল অপারেটর সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) ডিপি ওয়ার্ল্ডকে দায়িত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। জিটুজির ভিত্তিতে প্রকল্পের কাজ পেতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে দুই হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অথচ পিপিপি কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে দেওয়া প্রজেক্ট প্রোফাইলে অনুমিত বিনিয়োগ হিসেবে দুই শ কোটি টাকা দেখা যায়, যা জিটুজি গাইডলাইন–২০১৭ সংশ্লিষ্ট বিধির পরিপন্থী।
প্রথম আলোতে গত ২৬ এপ্রিল প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রয়োজনীয় সবকিছু আছে এবং ভালোভাবে চলতে থাকা এই টার্মিনাল আওয়ামী লীগ আমলে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ আমলের সেই ধারাবাহিকতা এগিয়ে নিচ্ছে। বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম টার্মিনাল অপারেটর সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডকে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে জিটুজি ভিত্তিতে টার্মিনালটি পরিচালনার ভার দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এর বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরে সরব বন্দরের শ্রমিক-কর্মচারীরা। আন্দোলন-বিক্ষোভও করছেন তাঁরা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রক র য় ন র জন য আইনজ ব সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ফেসবুকে স্ট্যাটাস, নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে সারজিস আলমকে নোটিশ
ফেসবুকে উচ্চ আদালত সম্পর্কে দেওয়া স্ট্যাটাস ‘মর্যাদাহানিকর’ ও ‘অবমাননাকর’ উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বরাবরে নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। আজ শনিবার এ নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে সারজিস আলমকে স্ট্যাটাসের বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। পাশাপাশি নোটিশ গ্রহণের দুই ঘণ্টার মধ্যে প্রকাশ্য সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশের জনগণের কাছেও তাঁকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তা না হলে সারজিস আলমের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করবেন বলে নোটিশে উল্লেখ করেছেন নোটিশদাতা আইনজীবী।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিন ওই নোটিশ পাঠিয়েছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রেজিস্ট্রি ডাকযোগে সকাল ১০টার দিকে সারজিস আলমকে আদালত অবমাননার অভিযোগে নোটিশটি পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে উল্লেখিত তথ্য অনুসারে, ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়-ডিক্রি ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী মামুনুর রশিদ। শুনানি শেষে গ্রহণযোগ্য নয় বলে হাইকোর্ট ২২ মে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রিটটি সরাসরি খারিজ করে দেন।
নোটিশের ভাষ্য, ‘২২ মে রায় ঘোষণার পর আপনি (সারজিস আলম) ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে ১১টা ৪৯ মিনিটের দিকে ওই রায় নিয়ে একটি প্রতিক্রিয়া দেন। এই স্ট্যাটাস গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ওই স্ট্যাটাসে উল্লেখিত মন্তব্যের মাধ্যমে রাষ্ট্রের অন্যতম স্তম্ভ বিচার বিভাগের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করেছেন। যা দেশের উচ্চ আদালত, যথা-সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি মর্যাদাহানিকর ও আদালত অবমাননাকর।’