গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট থেকে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনকে প্রত্যাহারের ঘোষণা
Published: 1st, July 2025 GMT
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট থেকে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার ও সাধারণ সম্পাদক সৌরভ রায় এক বিবৃতিতে এই ঘোষণা দেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের গঠনকালে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনবিরোধী লড়াইয়ের অংশ হিসেবে 'আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ ও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার' রাজনৈতিক ডাককে সামনে রেখে ১৩ দফা দাবির ভিত্তিতে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন এই জোটে যুক্ত হয়েছিল। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে খুনি হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটেছে এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের গঠনকালীন রাজনৈতিক কর্মসূচির প্রাসঙ্গিকতার অবসান হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট উপযুক্ত রাজনৈতিক কর্মসূচি হাজির করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং নিছক ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচি পালনের একটি মঞ্চে পরিণত হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটভুক্ত অধিকাংশ ছাত্র সংগঠন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সঙ্গে যুক্ত থাকায় সেসব রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে থাকে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসন ও তার মদদদাতা ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী লড়াইয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ভূমিকা নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কঠোর সমালোচনা রয়েছে। আমরা মনে করি, সংস্কার নয়- জনগণের সার্বিক মুক্তির লক্ষ্যে শ্রমিক কৃষক ছাত্র জনতার হাতে ক্ষমতা আনতে গণঅভ্যুত্থানের রাজনৈতিক প্রস্তুতি নেওয়াই এখনকার কর্তব্য। গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থান এর বিপরীতে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এমতাবস্থায় বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ল দ শ ছ ত র ফ ড র শন গণত ন ত র ক ছ ত র জ ট র জন ত ক আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
আবার জনগণের ভোটাধিকার হরণের ষড়যন্ত্র চলছে: জামায়াত
আবারও দেশের জনগণের ভোটাধিকার হরণের পাঁয়তারা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, জনগণের বিপরীতে দাঁড়াবেন না। আরেকটি এক-এগারোর ক্ষেত্র তৈরি করবেন না।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে এক বিক্ষোভ সমাবেশে জামায়াতের এই নায়েবে আমির এ কথা বলেন। জুলাই ঘোষণা এবং জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে এ কর্মসূচির আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জামায়াত।
আবদুল্লাহ তাহের বলেন, ‘নির্বাচন যে তারিখে দিছে, এটা ঠিক আছে। আমরা তার আগেও নির্বাচন চাইছিলাম। ডিসেম্বর হলেও আমরা করতাম। মানুষ আশা করে, এবার একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। আমরা ইলেকশন চাই, সিলেকশন চাই না।’
বিদেশের ডিজাইনে (ছকে) পরিকল্পিত নির্বাচনের বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সমাবেশে আবদুল্লাহ তাহের বলেন, দেশের মানুষ জীবন এবং রক্ত দিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করবে। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে যেতে চায়, কিন্তু তার আগে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার বিষয়গুলো জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। নির্বাচনের জন্য আনন্দমুখর পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সরকারকে আলোচনা টেবিলে বসার জন্য আহ্বান জানান জামায়াত নেতা আবদুল্লাহ তাহের। তিনি বলেন, ‘দেশকে অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে যাবেন না। জনগণের বিপরীতে দাঁড়াবেন না। আরেকটি এক-এগারোর ক্ষেত্র তৈরি করবেন না।’
আবদুল্লাহ তাহের বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক দল এবং রাজনীতিবিদেরা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে সবাই মিলে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হবে। অতীতের মতো অংশগ্রহণহীন নির্বাচন করলে এবার বাংলাদেশ টিকবে না, স্বাধীনতা টিকবে না।’
জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুল্লাহ তাহের বলেন, এই সরকারের প্রধান কাজ সংস্কার করা। তারা সংস্কারের জন্যই কমিশন তৈরি করেছে। সে কমিশনের সবাই ঐকমত্য হওয়ার পর সরকার বলে এটির আইনি ভিত্তি নেই। তাহলে সংস্কার হলো কোথায়? তিনি বলেন, যেসব বিষয় ঐকমত্য হয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে আগামী নির্বাচন হতে হবে।
একটি জরিপের কথা উল্লেখ করে আবদুল্লাহ তাহের বলেন, ‘দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়। তারা পিআরের পক্ষে। কিন্তু আপনারা যাঁরা বিরোধিতা করছেন, আপনাদের কি বিরোধিতা করার অধিকার আছে?’
জামায়াতের সহকারী সেক্রটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের আগেই দেখছি, কোনো কোনো দলের কেন্দ্রীয় নেতারা নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিলে জিহ্বা কেটে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিচ্ছেন। আমরা লক্ষ করছি, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি ঘোষণা করছেন; কিন্তু এখনো জিহ্বা কেটে নেওয়ার কথা বলা এই সন্ত্রাসীকে কেন গ্রেপ্তার করতে পারেননি?’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল। সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, আবদুল হালিম, ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের আমির সেলিম উদ্দিন প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে বিজয়নগর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি কাকরাইল ও মৎস্য ভবন হয়ে শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় নেতা-কর্মীদের হাতে প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।