এইচপির পাকিস্তানি স্পিন বোলিং কোচ আরশাদ খানের কাছে রাকিবুল হাসান খুবই প্রতিভাবান একজন স্পিনার। চায়না ম্যান নুহায়েল সানদিদ, লেগ স্পিনার স্বাধীন ইসলামকে আগামীর তারকা মনে করছেন তিনি। এইচপির ট্রেনিং সেশনে সেভাবেই স্পিনারদের তৈরি করছেন আরশাদ। তিনি জানান, পাঁচ মাসের মধ্যেই ভালো মানের স্পিনার জাতীয় দলের পাইপলাইনে সংযুক্ত করতে পারবেন। বাংলাদেশের স্পিন বোলিং সম্ভাবনা, এইচপি এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়ে আরশাদ খানের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সেকান্দার আলী 

সমকাল: বাংলাদেশের উদীয়মান স্পিনারদের কেমন দেখছেন?

আরশাদ: বাংলাদেশের ক্রিকেট সঠিক পথেই আছে। বিশেষ করে, এইচপি কার্যক্রম সেরা। ফিটনেস, ফিল্ডিং, বোলিং ও ব্যাটিং নিয়ে দারুণ কাজ হচ্ছে। আমার  কাজ হলো স্পিনারদের টেকনিক্যাল ও ট্যাকটিকেল দিকগুলো শেখানো। আমার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের পুরো অভিজ্ঞতা ছেলেদের দেওয়ার চেষ্টা করছি। ছেলেরা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ খেলেছে। সেখানে সবল ও দুর্বল দিকগুলো দেখা হয়েছে। ট্রেনিংয়ে স্কিল উন্নত করার কাজ হচ্ছে। ম্যাচ সিনারিওয়েতে নিজেদের উন্নতি দেখাচ্ছে ছেলেরা। দেড় মাসের মতো টেকনিক্যাল দিক নিয়ে কাজ করা হবে। 

সমকাল: বেশির ভাগ ছেলেই তো তরুণ। আন্তর্জাতিক মানের প্রতিভা দেখতে পান ক্যাম্পে?

আরশাদ: ছেলেরা যে প্রতিভাবান, তাতে সন্দেহ নেই। দেশের সেরা উদীয়মান স্পিনাররা ক্যাম্পে আছে। এখান থেকেই ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক স্পিনার পাবে বাংলাদেশ। এখন যারা আছে, রাকিবুল  হাসান  তাদের মধ্যে অভিজ্ঞ এবং আন্তর্জাতিক অভিষেক করা ক্রিকেটার। সে জানে কীভাবে ক্রিকেট খেলতে হয়, কীভাবে চাপ সামলাতে হয়। নিজের উন্নতির জন্য সে অনেক পরিশ্রম করছে। আশা করি, শিগগিরই সে ভালোভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবে। 

সমকাল: কোনো ভালো লেগ স্পিনার পেলেন?

আরশাদ: একটা ছেলেকে দেখেছি যে পরীক্ষা দিচ্ছে। নাঈম হোসেন সাকিব আছে, চায়না ম্যান নুহায়াল সানদিদ বেশ ভালো। এই ছেলেটার মধ্যে প্রতিভা আছে। যদিও বয়স কম, শারীরিকভাবে অতটা সক্ষম হয়ে ওঠেনি। ট্রেনিংয়ের ভেতর দিয়ে সে উন্নতি করছে। টেকনিক্যাল স্কিলে উন্নতি চোখে পড়ার মতো। সে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে গেলে অনেক বড় স্পিনার হতে পারবে। আশা করি, ছয় মাসে সে তৈরি হতে পারবে। নাঈম আহমেদ খুব সম্ভাবনাময় অফ স্পিনার। সে বেশ লম্বা। তারও ভালো করার সম্ভাবনা আছে। মাহফুজুর রহমান রাব্বি কঠিন পরিশ্রম করছে। সবাই চেষ্টা করছে। ছোট ছোট টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। যাতে তারা ক্ষুরধার হয়ে উঠতে পারে। বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, লাইন লেন্থ নিয়ে কাজ হচ্ছে। অনূর্ধ্ব-১৯ দলে একজন লেগ স্পিনার আছে, নাম স্বাধীন ইসলাম। সে খুবই ভালো। 

সমকাল: উইকেটের সুবিধা না পেলে বাংলাদেশের স্পিনাররা ভালো করতে পারেন না। ফ্ল্যাট উইকেটে বল টার্ন করাতে অদক্ষ। যে কারণে বিদেশে স্পিনাররা বেশি ভালো করতে পারেন না।  

আরশাদ: ফ্ল্যাট উইকেটে খেললে এই স্কিলগুলো শিখবে। নিজেদের প্রয়োজনেই শিখবে। না হলে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকবে না। বলের গ্রিপ, কবজির ব্যবহার, আঙুলের কাজ, লুপ ভালো হলে যে কোনো কন্ডিশনে স্পিনাররা লড়াই করতে পারবে। আমি চেষ্টা করছি ফ্ল্যাট উইকেটে খেলাতে। নেটেও ফ্ল্যাট উইকেট দেওয়া হচ্ছে। আমি মনে করে বেশ কয়েকজন স্পিনার তৈরি হয়ে যাবে। বাংলাদেশ দলের প্রয়োজন হলে এখান থেকে নিতে পারবে। 

সমকাল: জাতীয় দলের কোনো স্পিনার আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে টিপস নেওয়ার জন্য?

আরশাদ: কয়েকজন স্পিনারের সঙ্গে এরই মধ্যে কথা বলেছি। যদিও তাদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়নি। আশা করি, আমাদের দেখা হবে এবং অভিজ্ঞতা শেয়ার করব।  

সমকাল: আব্দুর রাজ্জাক ও সাকিব আল হাসানের পর সাদা বলের জন্য ভালো বাঁহাতি স্পিনার নেই জাতীয়  দলে। সে শূন্যতা পূরণ করার মতো কেউ আছে এইচপিতে? 

আরশাদ: সাকিব ও রাজ্জাক উঁচু মানের স্পিনার। তারা লম্বা সময় দেশের জন্য খেলেছে। আমরা চেষ্টা করব তাদের জায়গায় নতুন কাউকে ফিট করতে। একজন নয়, একাধিক বাঁহাতি স্পিনার যেন জাতীয় দলের পাইপলাইনে সরবরাহ করতে পারি, সে চেষ্টা থাকবে। রাকিব, রাব্বি, আশরাফুল সম্ভাবনাময়। আমার বিশ্বাস তারা ভালো করবে। এই মুহূর্তে রাকিব সেরা পছন্দ হতে পারে। সে মেধাবী স্পিনার। নিজের উন্নতির জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে।  

সমকাল: পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনায় গেলে এইচপির কার্যক্রম কেমন? 

আরশাদ: বাংলাদেশের সেরা প্রোগ্রাম এইচপি। এখানে ট্রেনিং করার পর কেউ ভালো খেলোয়াড় না হতে পারলে, সে অভাগা। এমন কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই, যা এইচপিতে দেওয়া হচ্ছে না। দু’জন ব্যাটিং কোচ আছে। পেস ও স্পিন কোচ আছে। প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা অনুশীলন করা হয়ে। শেখার জন্য শীর্ষ জায়গা এইচপি। 

সমকাল: এবার জানতে চাই পাকিস্তান ছেড়ে বাংলাদেশে কেন এলেন?

আরশাদ: আমি পিসিবিতে এখনও কাজ করছি। বিসিবির সঙ্গে বছরে পাঁচ মাসের চুক্তি। তিন বছর কাজ করব। আসলে বাংলাদেশ আমার জন্য সৌভাগ্যের ভেন্যু। আমার প্রথম আন্তর্জাতিক ওয়ানডে উইকেট এখানে পেয়েছি। আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে আউট করেছিলাম (হাসি)। ৯ বা ১০ বার বাংলাদেশে এসেছি। দেড় বছর আগে কাজের প্রস্তাব পেয়েছিলাম। এবার সেটাকে গ্রহণ করেছি। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এইচপ স ক য় ড ফ ল য ট উইক ট র জন য ক জ কর আরশ দ সমক ল

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে কারখানায় শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আরও একজন গ্রেপ্তার

গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে কারখানায় চুরির অপবাদ দিয়ে হৃদয় (১৯) নামের এক শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির এক নিরাপত্তাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতে কোনাবাড়ীর সেলিমনগর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

নতুন করে গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম শফিকুল ইসলাম (৩০)। তিনি রাজশাহীর বাগমারা এলাকার হাটমাদনগর গ্রামের বাসিন্দা ও গ্রিনল্যান্ড লিমিটেড নামের কারখানাটির নিরাপত্তাকর্মী।

আরও পড়ুনগাজীপুরে চুরির অপবাদ দিয়ে কারখানায় শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা, অনির্দিষ্টকালের ছুটি ঘোষণা৩০ জুন ২০২৫

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন বলেন, গোপন সংবাদে খবর পেয়ে সোমবার মধ্য রাতে ওই এলাকার একটি বাসা থেকে শফিকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে তাঁর জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

এ ঘটনায় হৃদয়ের বড় ভাই লিটন মিয়া বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় গত শনিবার রাতে একটি হত্যা মামলা করেন। তবে এতে জড়িত কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। ওই মামলায় রোববার হাসান মাহমুদ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি ওই কারখানার শ্রমিক।

কোনাবাড়ীর গ্রিনল্যান্ড লিমিটেড নামের কারখানায় শনিবার ভোরের দিকে হৃদয়কে রশি দিয়ে বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ঘটনার একটি ভিডিও রোববার রাতে ছড়িয়ে পড়লে কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। হৃদয় টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার শুকতার বাইদ গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। তিনি কারখানাটিতে মেকানিক হিসেবে কাজ করতেন।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, হৃদয় কাজ শেষে বাসায় না ফেরায় শনিবার বিকেলে তাঁর ভাই লিটন ও মা কারখানার দিকে যান। সেখানে গিয়ে কারখানায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ দেখে জানতে পারেন, চুরির অপবাদ দিয়ে হৃদয়কে হত্যা করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করা হয়েছে। পরে তাঁরা লাশের সন্ধান চাইলে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজে আছে বলে জানানো হয়। সেখানে গিয়ে তাঁরা মরদেহটি শনাক্ত করেন। পরে ময়নাতদন্ত শেষে লাশটি তাঁদের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান।

আরও পড়ুনলক্ষ্মীপুরে চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা, ২ জন আটক৩১ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খুলনায় ১৯ হাজার ইয়াবাসহ একজন আটক, বড় মাদকের চালান জব্দ
  • এবারও ডারউইনে টি–টোয়েন্টি দল পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ, আছে পাকিস্তান আর নেপালও
  • রাজস্থলীতে দুই অটোরিকশার সংঘর্ষে মাছ ব্যবসায়ী নিহত
  • চট্টগ্রামে আরও ১৫ জনের করোনা শনাক্ত
  • ফারাজ হোসেন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে চিকিৎসা পেলেন কয়েক শ মানুষ
  • ছোটু ও নানাভাইকে স্মরণ
  • ফোনালাপ ফাঁসের জেরে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বরখাস্ত
  • নারীরা তাদের স্বামীদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারেন, সম্পর্কের বির্বতন নিয়ে অনুপম
  • গাজীপুরে কারখানায় শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আরও একজন গ্রেপ্তার