এক দলকে সরিয়ে আরেক দলকে বসানোর জন্য কেউ রক্ত দেয়নি: নাহিদ
Published: 1st, July 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, শুধু ক্ষমতার পরিবর্তনের জন্য, এক দলকে সরিয়ে আরেক দলকে বসানোর জন্য কেউ রক্ত দেয়নি, গণ-অভ্যুখান করেনি।
আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটায় গাইবান্ধা শহরের পৌর শহীদ মিনার চত্বরে জুলাই গণ-অভ্যুখানের বর্ষপূতি উপলক্ষে আয়োজিত পদযাত্রা কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে আমরা চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, লুটপাট, দখলদারত্বের আর কোনো সুযোগ দেব না। ইনশা আল্লাহ, আমরা–আপনারা একসঙ্গে যে দেশ গড়ার ডাক দিয়েছি, সেই দেশ গড়ে আমরা আবার ঘরে ফিরব।’ তিনি বলেন, ‘জুলাই গণহত্যাসহ গত ১৬ বছরে যত অপকর্ম হয়েছে, খুনি হাসিনা ও এই আওয়ামী লীগ, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ, তাদের বিচার অবশ্যই এই বাংলার মাটিতেই হতে হবে। তাদের বিচার অবশ্যই আমরা নিশ্চিত করব এবং নতুন বাংলাদেশের জন্য যে সংস্কার, রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের মধ্য দিয়ে নির্বাচনে যেতে হবে।’
গাইবান্ধার অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, কেন্দ্রীয় সদস্য ফিহাদুর রহমান প্রমুখ।
এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আজকের এই দিনে জুলাই গণ-অভ্যুখানের যাত্রা শুরু হয়েছিল। সারা বাংলাদেশের ছাত্র–জনতা একটি যৌক্তিক আন্দোলনে নেমে এসেছিল। সেই আন্দোলনে যখন খুনি হাসিনা সরকার পুলিশ এবং ছাত্রলীগ দিয়ে দমন–নিপীড়ন চালায়; ছাত্র, সাধারণ জনগণের ওপর নির্বিচার গুলি চালায়, তখন ছাত্র–শ্রমিক–সাধারণ জনগণ এক দফার দাবিতে রাজপথে নেমে এসেছিল। আমরা বলতে চাই, এই গণ-অভ্যুখানে হাজারো মানুষ শহীদ হয়েছে। হাজার হাজার ছাত্র–জনতা আহত হয়েছে। একটা নতুন বাংলাদেশের জন্য। এই বাংলাদেশে কোনো বৈষম্য থাকবে না, গণতন্ত্র থাকবে। সেই বাংলাদেশে কথা বলতে গেলে পুলিশ আপনার ওপর গুলি চালাবে না। আপনি কথা বলতে চাইলে, প্রতিবাদ করতে চাইলে প্রতিবাদ করবেন। জুলাই গণ-অভ্যুখান সেই প্রতিবাদ শিখিয়েছে আমাদের। আমরা যেন প্রতিবাদ থেকে সরে না আসি।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আপনাদের যে অধিকার, এলাকার সমস্যা, সেগুলো আপনারা নির্ভয়ে বলবেন। আমাদের ভয় কিন্তু ২০২৪ সালে ভেঙে গেছে। নতুন করে কোনো ভয়ের সংস্কৃতি এই বাংলাদেশে হতে দেব না। শহীদেরা রক্ত দিয়েছেন, প্রয়োজনে আমরা আবারও নিজের রক্ত দেব। জুলাই গণ-অভ্যুখানের পথেই এই বাংলাদেশকে চলতে হবে।’
জুলাই গণ-অভ্যুখানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এনসিপি ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ শুরু করেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে রংপুরের পীরগঞ্জের বাবনপুর জাফরপাড়া গ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: রক ত দ র জন য ক দলক এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার
বাংলাদেশে জনগণের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি হলেও এখানে পেশা হিসেবে নার্সদের অমর্যাদাসম্পন্ন একটা অবস্থানে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘নার্সদের ডাক্তারি ব্যবস্থার অধীন একটা পেশা হিসেবে যে দেখা হয়, আমরা মনে করি এটা ভুল। এখান থেকে মুক্ত হতে হবে। নার্স সেবাটা স্বাস্থ্যসেবার একটা মৌলিক দিক। ফলে তাঁদের স্বাধীনভাবে এই পেশাকে চর্চা করবার সুযোগ–সুবিধা দিতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফরহাদ মজহার। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ও স্বাস্থ্য আন্দোলন। স্বাস্থ্য আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেন ফরহাদ মজহার।
সরকার স্বাস্থ্যকে এখন আর জনগণের অধিকার হিসেবে স্বীকার করছে না বলে অভিযোগ করেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘এখন স্বাস্থ্যকে অধিকার নয়, বাজারজাত পণ্য বানানো হয়েছে। টাকা থাকলে চিকিৎসা পাবেন, টাকা না থাকলে নয়।’
নার্সদের স্বাধীন পেশাগত চর্চা, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, ন্যায্য বেতন ও মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সদেরকে ডাক্তারদের হুকুমমতো চলতে হবে—এই ধারণা ভাঙতে হবে। স্বাস্থ্য মানে শুধু প্রেসক্রিপশন নয়, প্রতিরোধও একটি বড় দিক। নার্সদের মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে জনগণ প্রকৃত স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সিং স্বাস্থ্যসেবার এক মৌলিক দিক। কিন্তু আমাদের সমাজে চিকিৎসাকে ডাক্তারিকরণ বা মেডিক্যালাইজেশন করা হয়েছে। অনেক রোগে ডাক্তার কিংবা ওষুধের প্রয়োজনই হয় না। এ জায়গায় নার্সরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম। এক মাসের মধ্যে নার্সিং কমিশন গঠনের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন বিএনএর সহসভাপতি মাহমুদ হোসেন তমাল। এতে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপারসন জরিনা খাতুন, সহসভাপতি মনির হোসেন ভূঁইয়া এবং সংগঠনের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী।