মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নিয়ে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, সদর দপ্তরের অনুমোদন ছাড়া আমদানিকৃত মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন না করার জন্য সব সার্কেল অফিসকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি বিআরটিএর পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) শীতাংশু শেখ বিশ্বাসের সই করা নির্দেশনায় এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ইদানীং লক্ষ করা যাচ্ছে কিছু কিছু অসাধু মোটরসাইকেল আমদানিকারক সেমি নকড ডাউন (এসকেডি) বা কমপ্লিটলি নকড ডাউন (সিকেডি) অবস্থায় মোটরসাইকেল আমদানি করে তার আমদানিসংক্রান্ত কাগজপত্র জালিয়াতি করে কমপ্লিটলি বিল্ড ইউনিট (সিবিইউ) হিসেবে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করছে।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশ লঞ্চ হলো সিএফ মটোর ৩ বাইক

বাইক ডেলিভারি নেওয়ার আগেই এগুলো দেখে নিন, নইলে ঠকবেন

এছাড়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে ১৬৫ সিসির বেশি সিসি সম্পন্ন মোটরসাইকেলকে ১৬৫ সিসি, বা তার চেয়ে কম সিসিবিশিষ্ট মোটরসাইকেল হিসেবে ঘোষণা করে কাস্টমস থেকে ছাড় করা হচ্ছে এবং বিআরটিএ থেকে রেজিস্ট্রেশনের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ধরনের ত্রুটিপূর্ণ মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন বন্ধে বিআরটিএ সদর কার্যালয় থেকে মোটরসাইকেলের সব কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে সিবিইউ বা এসকেডি অবস্থায় আমদানি করা মোটরসাইকেলগুলোর চেসিস ও ইঞ্জিন নম্বরের তালিকা অনুমোদন ও বিআরটিএ আইএস এ আপলোড করা হবে। তার পরিপ্রেক্ষিতে সার্কেল অফিসগুলো রেজিস্ট্রেশন দেবে।

নির্দেশনায় আরো বলা হয়, তাই আগামী ৩১ জুলাইয়ের পর থেকে সিবিইউ/এসকেডি অবস্থায় আমদানি করা সব মোটরসাইকেলের চেসিস ও ইঞ্জিন নম্বরের তালিকা অনুমোদন ছাড়া মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো।

এ বিষয়ে বিআরটিএর চেয়ারম্যানে অনুমোদন রয়েছে। এটির ব্যত্যয় ঘটলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ঢাকা/হাসান/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব আরট এ আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

টাকা ছাড়া কথাও বলেন না শিক্ষা কর্মকর্তা

টাকা ছাড়া কিছুই বোঝেন না গাজীপুর সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সালাম। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে গিয়েও যেন টাকা দিতে হয় শিক্ষকদের। তাঁর কাছে জিম্মি সদর উপজেলার ১৬৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ হাজার ১০০ শিক্ষক ও ৯৬৩টি কিন্ডারগার্টেনের কয়েক হাজার শিক্ষক। 

শিক্ষকদের অভিযোগ– বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিবন্ধন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বরাদ্দ, শিক্ষক বদলি ও বিদ্যালয় পরিদর্শন, সব ক্ষেত্রেই টাকা দিতে হয়। প্রতিবাদ করলেই বাধ্যতামূলক বদলি করে দেন। শিক্ষা কর্মকর্তা সালামের বিরুদ্ধে একাধিক বিভাগীয় মামলাও হয়েছে। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম। তিনি বলেন, ‘চাকরির ১৯ বছর আমাকে ২২ বার বদলি করা হয়েছে। দুদকে ২টি মামলা হয়েছে। তবে মামলাগুলো নিষ্পত্তি হয়েছে। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।’

সূত্র মতে, আব্দুস সালাম চলতি বছরের গোড়ার দিকে গাজীপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে তিনি সুনামগঞ্জের শাল্লা, গাইবান্ধা সদর, রাঙামাটির বরকলসহ কয়েকটি উপজেলায় দায়িত্ব পালন করেছেন। আগের প্রতিটি কর্মস্থলে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ায় শাস্তিমূলক বদলি হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অন্তত ৩টি বিভাগীয় মামলা রয়েছে।

ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত ২ জুন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন গাজীপুর কেজি স্কুল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোছাদ্দিকুর রহমান। অভিযোগে বলা হয়, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের সময় নিবন্ধনের জন্য আব্দুস সালাম ৩ লাখ টাকা করে ঘুষ দাবি করেছেন।

ভাওয়াল মডেল একাডেমির পরিচালক লুৎফর রহমানের ভাষ্য, গত মে ৬ শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম তাঁর স্কুল পরিদর্শন করেন। নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে তাঁর কার্যালয়ে যেতে বলেন। এরপর সব কাগজপত্রের একটি ফাইল নিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর হাতে ফাইল দিলে তিনি বলেন, ‘ফাইল ঠিক থাকলে এটা ধুইয়া পানি খান। ফাইল দরকার নাই। আমাকে টাকা দেওয়া লাগবে।’

ভবানীপুর এলাকার মা একাডেমি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মুসলিমা খাতুন জানান, নিয়ম অনুযায়ী তাঁর স্কুলের নিবন্ধনের জন্য সব কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়। এরপরও নিবন্ধন বাবদ ৩ লাখ টাকা দাবি করেছেন শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম।

বানিয়ারচালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিখা আক্তারের ভাষ্য, স্কুল মেরামতের জন্য সম্প্রতি সদর উপজেলার তিনটি স্কুলে ২ লাখ টাকা করে বরাদ্দ আসে। টাকা ছাড় করতে আব্দুস সালাম তাঁর অফিসের কর্মচারীর মাধ্যমে প্রতিটি স্কুলপ্রধানের কাছে ৪০ হাজার টাকা চেয়েছেন। কিন্তু তিনি টাকা দিতে রাজি হননি।

তাঁর বিরুদ্ধে কয়েক দফা সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগও দেওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই শিক্ষা অধিদপ্তর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদ ভূঁইয়া বলেন, ‘একটি প্রশিক্ষণে ঢাকায় আছি। তবে তাঁর বিরদ্ধে করা অভিযোগ মন্ত্রণালয় তদন্ত করছে।’

শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, কেজি স্কুলগুলোর নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করেছে সরকার, কিন্তু নিবন্ধন করছে না কেউ। নিবন্ধন না করে স্কুল চালানো মানে শিক্ষার্থীদের কাছ কর্তৃপক্ষ চাঁদাবাজি। স্কুলগুলো নিবন্ধন করতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। নিবন্ধন করতে বলায় ঘুষ চাওয়ার মিথ্যা অভিযোগ করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এস আলম ও পিকে হালদারসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের ৩ মামলা
  • টাকা ছাড়া কথাও বলেন না শিক্ষা কর্মকর্তা