এস আলম ও পিকে হালদারসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের ৩ মামলা
Published: 3rd, July 2025 GMT
ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে প্রায় ২৭১ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাত ও পাচারের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম মাসুদ ও আলোচিত পিকে হালদারসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (২ জুলাই) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এসব মামলা দায়ের করা হয়।
দুদকের মহাপরিচালক মো.
আরো পড়ুন:
অর্থপাচার মামলায় কলকাতায় পি কে হালদারের জামিন
‘বিচার শেষ না হওয়ায় পি কে হালদারকে ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না’
প্রথম মামলার এজাহারে বলা হয়, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেড (বর্তমানে আভিভা ফাইন্যান্স) থেকে জাল কাগজপত্রের ভিত্তিতে একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোস্তফা অ্যান্ড কোম্পানির নামে ৩২ কোটি ৫০ লাখ টাকার মেয়াদি ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ করা হয়। পরে সেই টাকা কয়েক ধাপে স্থানান্তর হয়ে এস আলম গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডে চলে যায়।
এই মামলার আসামিরা হলেন- এস আলম গ্রুপের সাবেক চেয়ারম্যান ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেড সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, এম আলম গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ, পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসান, পরিচালক শাহানা ফেরদৌস, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদার, রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের সাবেক ইভিপি ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রধান রাশেদুল হক, একই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ও কর্পোরেট ফাইন্যান্স বিভাগ প্রধান নাহিদা রুনাই, রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের ক্রেডিট কমিটির এসভিপি ও মেম্বার কাজী আহমেদ জামাল, সাবেক ডেপুটি ম্যানেজার জুমারাতুল বান্না, মারিন ভেজিটেবল অয়েলস লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহমেদ, পরিচালক টিপু সুলতান, মো. ইসহাক ও মেসার্স মোস্তফা অ্যান্ড কোম্পানির মালিক মো. গোলাম মোস্তাফা।
দ্বিতীয় মামলায় নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান মেসার্স এ এম ট্রেডিংয়ের নামে জালিয়াতির মাধ্যমে ১০৪ কোটি ২০ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ ও ৩৪ কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক অসদাচরণ ও বিশ্বাসভঙ্গ করে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ঋণপ্রস্তাব প্রস্তুত এবং ঋণ অনুমোদন, ঋণ প্রদান এবং ঋণের নামে ১০৪ কোটি ২০ লাখ ৭৭ হাজার ৭০৮ টাকা আত্মসাৎ ও ৩৪ কোটি টাকা এস আলম সুপার এডিবল অয়েল নামে প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর/রূপান্তর/হস্তান্তর করা হয়েছে।
এই মামলার আসামিরা হলেন- এস আলম গ্রুপের সাবেক চেয়ারম্যান ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেড সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, এম আলম গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ, পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসান, পরিচালক শাহানা ফেরদৌস, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদার, রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের সাবেক ইভিপি ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রধান রাশেদুল হক, একই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ও কর্পোরেট ফাইন্যান্স বিভাগ প্রধান নাহিদা রুনাই, রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের ক্রেডিট কমিটির এসভিপি ও মেম্বার কাজী আহমেদ জামাল, সাবেক ডেপুটি ম্যানেজার জুমারাতুল বান্না, মারিন ভেজিটেবল অয়েলস লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহমেদ, পরিচালক টিপু সুলতান, মো. ইসহাক ও মেসার্স মেসার্স এ এম ট্রেডিংয়ের মালিক আলহাজ কবির আহম্মদ।
তৃতীয় মামলায় নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাইফুল অ্যান্ড কোম্পানির নামে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে ৭১ কোটি ৫১ লাখ টাকার ঋণ ও ২৪ কোটি টাকার মানিলন্ডারিংয়ের অপরাধে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
ওই মামলার এজাহার বলা হয়, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের কর্মকর্তা এবং মেসার্স সাইফুল অ্যান্ড কোম্পানির মালিক সাইফুল ইসলামের সঙ্গে যোগসাজশে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ২০১৩ সালের ৩ অক্টোবর তারিখে মেয়াদি ঋণ মঞ্জুর করা হয়। ঋণের ২৪ কোটি টাকা ২০১৩ সালের ৪ নভেম্বর সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, দিলকুশা শাখা থেকে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, খাতুনগঞ্জ শাখার মেসার্স সাইফুল অ্যান্ড কোম্পানি হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে একই দিনে মারিন ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেড হয়ে এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডের হিসাবে স্থানান্তর হয়। প্রতিটি ধাপেই জালিয়াতি ও অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের ঘটনা সংঘটিত হয় বলে দুদক মনে করে।
এই মামলার আসামিরা হলেন—এস আলম গ্রুপের সাবেক চেয়ারম্যান ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেড সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, এম আলম গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান, আব্দুস সামাদ, পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসান, পরিচালক শাহানা ফেরদৌস, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদার, রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের সাবেক ইভিপি ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রধান রাশেদুল হক, একই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ও কর্পোরেট ফাইন্যান্স বিভাগ প্রধান নাহিদা রুনাই, রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের ক্রেডিট কমিটির এসভিপি ও মেম্বার কাজী আহমেদ জামাল, সাবেক ডেপুটি ম্যানেজার জুমারাতুল বান্না, মারিন ভেজিটেবল অয়েলস লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহমেদ, পরিচালক টিপু সুলতান, মো. ইসহাক ও মেসার্স সাইফুল অ্যান্ড কোম্পানির মালিক সাইফুল ইসলাম।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ল য় ন স ফ ইন য ন স ল ম ট ড র র ল য় ন স ফ ইন য ন স র এস আলম গ র প র স ব স থ ন ন তর ক গজপত র জন র ব র আস ম র আহম দ ইসল ম র আহম
এছাড়াও পড়ুন:
কাপাসিয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে হামলা, গাড়ি ভাঙচুর
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে কয়েকজন ব্যক্তি। এ ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের নয়ানগর এলাকার আমরাইদ–গিয়ায়পুর সড়কের পাশে অবস্থিত মেসার্স জমজম ট্রেডার্স মিনি পেট্রোল পাম্পে ঘটনাটি ঘটে।
আরো পড়ুন:
নড়াইলে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে জখম, গ্রেপ্তার ২
খিলগাঁওয়ে ছিনতাইকারীর গুলিতে যুবক আহত
কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুর রব বলেন, “মোবাইল কোর্ট চলাকালে কিছু উত্তেজিত লোক ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়িতে হামলা চালায়। ঘটনায় জড়িত ফারুক মিয়া নামে একজনকে আটক করা হয়েছে এবং আরো কয়েকজনকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানায়, জমজম ট্রেডার্স মিনি পেট্রোল পাম্পে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়। সেখান থেকে প্রায় ৫০ লিটার ভেজাল পেট্রোল জব্দ করা হয় এবং পাম্পের মালিককে ১০ দিনের মধ্যে কাগজপত্র যাচাই করে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
অভিযানের সময় উপস্থিত কিছু ব্যক্তি ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং ‘ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা ইট নিক্ষেপ করে ম্যাজিস্ট্রেটের ব্যবহৃত হায়েস মাইক্রোবাসে হামলা চালায়। এতে গাড়ির সামনের ও পাশের কাচ ভেঙে যায়। পরে কাপাসিয়া থানা থেকে পুলিশ সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ফারক মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে। এ ঘটনায় বিপিসির একজন কর্মকর্তা বাদী হয়ে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
পদ্মা অয়েল কোম্পানির ম্যানেজার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, “অভিযান শেষে আমরা কাগজপত্র যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছিলাম। ঠিক তখনই কয়েকজন লোক আমাদের গাড়িতে হামলা করে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সিমল সরকারসহ আমাদের দলের সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।”
এ বিষয়ে জানতে পাম্পের মালিক মো. মোতাহার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/রফিক/মাসুদ