বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের নিবন্ধন শুরু
Published: 12th, July 2025 GMT
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে আবারও শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াড (বিডিজেএসও)। এরই মধ্যে অনলাইনে ১১তম বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে, চলবে ২৭ জুলাই পর্যন্ত। অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়া বিজয়ী শিক্ষার্থীরা আগামী ২৩ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর রাশিয়ায় অনুষ্ঠেয় ২২তম আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডে (আইজেএসও) বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাবে। বরাবরের মতো এবারও এ অলিম্পিয়াড যৌথভাবে আয়োজন করছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি ও বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন। গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের পুরো আয়োজন বেশ কিছু ধাপে সম্পন্ন হবে। প্রথম ধাপ হলো অনলাইন নিবন্ধন, এরপর আঞ্চলিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। আঞ্চলিক পর্যায়ে বিজয়ী শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে জাতীয় পর্বের অলিম্পিয়াডে, যা ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় পর্ব থেকে নির্বাচিত সেরা ৪০ শিক্ষার্থীকে নিয়ে আয়োজন করা হবে বিডিজেএসও ক্যাম্প। এরপর ক্যাম্পের সেরা শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল গঠন করা হবে। এই দলের প্রশিক্ষণ ও ক্যাম্প চলবে দেড় মাসব্যাপী। এরপর বিচারকদের রায়ে সেরা ৬ শিক্ষার্থীর সমন্বয়ে বাংলাদেশ দল গঠন করা হবে।
বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াড তিনটি শ্রেণিতে— প্রাইমারি (তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি), জুনিয়র (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি) এবং সেকেন্ডারি (নবম থেকে একাদশ শ্রেণি) আয়োজন করা হবে। অলিম্পিয়াডের মূল বিষয় হিসেবে থাকবে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান। অলিম্পিয়াডে নিবন্ধনসহ বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে এই ঠিকানায়।
বরাবরের মতো এবারও বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের টাইটেল স্পনসর হিসেবে রয়েছে আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড পিএলসি। আয়োজন সহযোগী হিসেবে রয়েছে প্রথম আলো এবং ম্যাসল্যাব। ম্যাগাজিন পার্টনার বিজ্ঞানচিন্তা এবং কিশোর আলো।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন স অল ম প য অল ম প য় ড
এছাড়াও পড়ুন:
‘সাজিদ হত্যার ৯০তম দিন, এরপর কি আমি?’
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারে বিলম্ব হওয়ায় ক্যাম্পাসে প্রতীকী বোর্ড স্থাপনের মাধ্যমে অভিনব প্রতিবাদ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর ১টায় ক্যাম্পাসের বটতলায় এ বোর্ডটি স্থাপন করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
দুই স্ত্রীর বিবাদে প্রাণ গেল যুবদল নেতার
মানিকগঞ্জে ৫ লাশ উদ্ধার
বোর্ডটিতে বড় অক্ষরে লেখা আছে, “সাবধান! সাজিদ হত্যার ৯০তম দিন, এরপর কি আমি?”
এছাড়া নিচে হ্যাশট্যাগে ইংরেজিতে লেখা হয়েছে, “জাস্টিজ ফর সাজিদ।”
এ সাইনবোর্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের প্রতি দ্রুত ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও মামলার অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে তারা বলছেন, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে এমন হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি হতে পারে।
উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী বোরহান কবির বলেন, “সাজিদের মৃত্যুর ৯০ দিন পার হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। সাজিদ হত্যার ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। তাই সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে একটি বোর্ড গঠন করেছে।”
তিনি প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে এটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লজ্জাজনক ও ন্যায়বিচার বিলম্বিত করার উদাহরণ হয়ে থাকবে।”
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক ফেরদৌস ইমনের বলেন, “সাজিদ হত্যার বিচার বিলম্বিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা একটি বোর্ড স্থাপন করেছে, যেখানে প্রতিদিন দিন গণনা বদলে দেখানো হবে কতদিন পার হচ্ছে। এই বোর্ডের মাধ্যমে তারা প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা, বিচার বিলম্ব ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি সবার সামনে তুলে ধরতে চায়।”
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ইবি শাখা সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত বলেন, “আজ সাজিদ আব্দুল্লাহ হত্যার ৯০ দিন হয়ে গেল। এই উপস্থাপিত বোর্ড আমাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে- একজন শিক্ষার্থী হারিয়ে গেলেন, কিন্তু হত্যাকাণ্ডের কোনো হদিস বা কারা হত্যা করল এটা আমরা এখনো জানি না।”
তিনি বলেন, “এ বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের ভাবিয়ে তোলে। এটি আমাদের নিরাপত্তার প্রশ্ন। আরো কেউ বলির পাঠা হবে কিনা? এভাবে কেউ হারিয়ে যাবে কিনা? প্রশাসনকেও ভাবিয়ে তোলে। সেখানে এ বিষয়ে এমন অভিনব প্রতিবাদকে আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি।”
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, “সাজিদ আব্দুল্লাহকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর দীর্ঘ সময় পার হলেও তদন্তে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই, যা প্রশাসনের ব্যর্থতা নির্দেশ করে। মামলাটি সিআইডির কাছে হস্তান্তর হলেও তদন্তের গতি সন্তোষজনক নয়।”
তিনি প্রশাসনের দায়বদ্ধতা ও সিআইডির তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “দ্রুত ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে তদন্তের অগ্রগতি নিয়মিতভাবে শিক্ষার্থীদের জানাতে হবে।”
ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, “শহীদ সাজিদ আব্দুল্লাহকে বিশ্ববিদ্যালয়েই শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনার ৯০ দিন পার হওয়া সত্ত্বেও প্রশাসন ও পুলিশ কোনো কার্যকর অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তাই সাজিদের খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। যতদিন দাবি পূরণ না হবে, ততদিন আন্দোলন ও অবস্থান চালিয়ে যেতে শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে একজোট থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।”
গত ১৭ জুলাই বিকেলে শাহ আজিজুর রহমান হল পুকুর থেকে আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ভিসেরা রিপোর্ট অনুযায়ী সাজিদকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী