ঘটনার পর ১০ তলার ফ্ল্যাটের গ্রিল ভেঙে পালিয়ে যান স্বামী
Published: 12th, July 2025 GMT
চট্টগ্রাম নগরের রৌফাবাদ এলাকায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর ১১ টুকরা করেছিলেন স্বামী মো. সুমন আলী। এরপর ঘরের বিভিন্ন জায়গায় এসব টুকরা ছড়িয়ে দেন। সবাই টের পেয়ে যাওয়ার পর ফ্ল্যাটের গ্রিল ভেঙে ১০ তলা থেকে পালিয়ে যান তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানাধীন ফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে সুমনকে গ্রেপ্তারের পর আজ শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব।
নগরের চান্দগাঁও এলাকায় র্যাব–৭–এর মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বলা হয়, ৯ জুলাই রাতে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন রৌফাবাদ পাহাড়িকা হাউজিং সোসাইটির একটি ফ্ল্যাটে ফাতেমা বেগমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেন স্বামী মো.
র্যাব জানায়, নিরাপত্তাকর্মী মশিউর রহমান জোর করে সুমনের বাসায় ঢুকে কক্ষের বিভিন্ন স্থানে রক্তের দাগ, শৌচাগারের ভেতরে রক্তমাখা কাপড় ও কমোডে শরীরের টুকরা অংশ দেখতে পান। এরপর ফ্ল্যাটের দরজায় কোনোভাবে তালা ঝুলিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের ডাকতে নিচে যান। এর মধ্যেই সুমন বাসার গ্রিল ভেঙে কৌশলে নিচে নেমে পালিয়ে যান। গতকাল শুক্রবার রাতে র্যাব–৭ চট্টগ্রাম, র্যাব–৯ সিলেট ও র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা অভিযান চালিয়ে সুমনকে গ্রেপ্তার করে।
মো. সুমন আলী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে জানিয়েছে, তাঁর বাড়ি কুমিল্লার সদর দক্ষিণের সুয়াগাজী গ্রামে। তাঁর বাবার নাম সুন্দর আলী। ১০ বছর আগে ফাতেমা বেগমের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। পরবর্তী সময়ে সুমন কর্মসংস্থানের জন্য সৌদি আরবে যান। গত বছরের জুনে দেশে ফিরে একটি পিকআপ গাড়ি চালাতে শুরু করেন। দেশে ফেরার পর প্রায় সময় স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ঝগড়া হতো। ৯ জুলাই রাতেও ঝগড়া হয়। বাগ্বিতণ্ডার এক পর্যায়ে তাঁর স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেন। হত্যায় তিনি দুটি চাকু ব্যবহার করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যাব–৭–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান। তিনি জানান, এ ঘটনায় নিহত ফাতেমা বেগমের বড় ভাই মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার বায়েজিদ থানায় মামলা করেন। আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যশোর প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া, মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন।
আহত পাঁচ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত দফায় দফায় ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ (অপরাধ) সুপার আবুল বাশার, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসনাত খানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন। পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছে।
শিক্ষার্থী, স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন আম বটতলা বাজারে মুঠোফোন মেরামত করতে এক দোকানে যান। এ সময় ওই দোকানদারের সঙ্গে ওই নারী শিক্ষার্থীর কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ওই নারী শিক্ষার্থীকে অশ্লীল কথা বলেন। এরপর ওই শিক্ষার্থীর বন্ধুরা সমবেত হয়ে ওই দোকানে গিয়ে দোকানদারকে মারপিট করেন। এরপর গ্রামবাসী একত্র হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয়।
সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা শুনে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রদের সঙ্গে স্থানীয়দের ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চার-পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তাদের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত হলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’