রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর উত্তর পাশে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের খোলা জায়গাটি থেকে দেখা যায় স্থপতি লুই আই কানের নকশায় গড়ে ওঠা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতীক—জাতীয় সংসদ ভবন। সংসদের দক্ষিণ প্লাজার সামনের এই খোলা জায়গা ‘ভিউ পয়েন্ট’ নামেও পরিচিত।

শহুরে ব্যস্ত জীবনের ফাঁকে নগরবাসী এখানে যান অবসর কাটাতে, হাঁটতে কিংবা প্রকৃতির কাছে কিছুটা সময় কাটাতে। কিন্তু রাজনৈতিক বাস্তবতা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে জায়গাটি এখন একরকম বাজারে রূপ নিয়েছে।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার পাশে দক্ষিণ প্লাজার সামনে মাঝের প্রায় ২০০ মিটার জায়গাজুড়ে তিন সারিতে বসানো হয়েছে ১৫৭টি দোকান। কোনো কোনো দোকানে আবার টুল বসিয়ে খাবারের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। এই অংশ থেকে খামারবাড়ি মোড়ের দিকে আরও ৩১টি ও আড়ং মোড়ের দিকে রয়েছে আরও ২৩টি দোকান। এর বাইরে রয়েছে ভ্রাম্যমাণ চা-সিগারেট, মুড়ি-চানাচুর বিক্রির হকার।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব দোকান অবৈধ এবং সিটি করপোরেশনের কোনো অনুমোদনও নেই।

সরেজমিনে দেখা গেছে, অস্থায়ী এসব দোকানে বসেই চলছে খাবার তৈরি। রান্নার আগের কাটাকাটি, বাছাবাছি, ধোয়ামোছার কাজ করা হচ্ছে সংসদ ভবনের সামনের এই খোলা জায়গায়। ফুচকা, চটপটি থেকে শুরু করে বার্গার, পিৎজা, হাঁসের মাংস ও রুটি, ভাজাপোড়া খাবারের দোকানে গিজগিজ করছে এলাকা।

শুধু খাবার নয়, বাচ্চাদের খেলনা, সাজগোজের উপকরণ, গৃহসজ্জার পণ্যও বিক্রি হচ্ছে এখানে। উচ্ছিষ্ট খাবার, পাত্র, প্লেট ধোয়ার পানি যত্রতত্র ফেলে দেওয়া হচ্ছে। এতে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। দোকানের সারি ও আবর্জনায় পরিস্থিতি এমন যে খোলামেলা বসার কিংবা হাঁটার জায়গাটুকুও থাকছে না।

যাঁরা আগে অবসরে সময় কাটাতে ভিউ পয়েন্টে যেতেন, এখন এড়িয়ে চলছেন। কেউ কেউ এসে পরিস্থিতি দেখে ফিরে যাচ্ছেন। সপ্তাহের অন্যান্য দিনে তুলনামূলক ভিড় কম থাকলেও সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিনে পুরো জায়গা হয়ে উঠছে জমজমাট বাজার।

ভ্রাম্যমাণ দোকানে ভরে গেছে সংসদ ভবনের সামনের এলাকা। গতকাল রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র স মন র

এছাড়াও পড়ুন:

শতবর্ষের মাইলফলক পেরোলেন মাহাথির

শতবর্ষের মাইলফলক পেরোলেন আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার হিসেবে পরিচিত মাহাথির মোহাম্মদ। আজ বৃহস্পতিবার ছিল তাঁর শততম জন্মদিন। দীর্ঘ এই জীবনে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে তিনি সাফল্যের এক অনুপ্রেরণা। শততম জন্মদিনেও তাই থামতে নারাজ মালয়েশিয়ার সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। তাঁর মতে—‘অবসর মানে আপনি কিছুই করছেন না।’

মাহাথির ২৪ বছর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। প্রথমে ১৯৮১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত—টানা ২২ বছর। পরের দুই বছর ছিল ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত। মালয়েশিয়ার অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন এনেছিলেন তিনি। অবকাঠামোগত নজিরবিহীন পরিবর্তন এসেছিল তাঁর হাত ধরে। তবে মাহাথিরের বিরোধী মত দমন, মানবাধিকার রক্ষা নিয়ে সীমিত অঙ্গীকার নিয়েও কম আলোচনা হয়নি।

মাহাথিরের জন্ম ১৯২৫ সালের ১০ জুলাই, মালয়েশিয়ার কেদাহ রাজ্যের প্রধান শহর আলোর সেতারে। তাঁর দাদা ভারতের কেরালা থেকে সেখানে অভিবাসী হন। বাবা মোহাম্মদ ইস্কান্দার ছিলেন একটি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলের প্রধান শিক্ষক। মাহাথির চল্লিশের দশকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশোনা করেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় সিতি হাসমাহর। পরিচয় থেকে পরিণয়। এরপর বিয়ে।

গাইনোকোলজিতে এমবিবিএস শেষ করে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন মাহাথির। শুরু করেন চিকিৎসাসেবা। একসময় তাঁর মধ্যে ধারণা আসে, বিপুল মানুষের সেবা করতে হলে রাজনীতির বিকল্প নেই। সেই চিন্তা থেকে রাজনীতির ময়দানে পা রাখেন। ১৯৮১ সালে ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (ইউএমএনও) থেকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন মাহথির মোহাম্মদ।

আশির দশকে ‘লুক ইস্ট পলিসি’ বা পূর্বকে অনুসরণ করার নীতি গ্রহণ করেন মাহাথির। অর্থনীতির পশ্চিমা মডেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমান। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মাহাথিরের প্রথম ২২ বছরে মালয়েশিয়ায় পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার, এক্সপ্রেসওয়ে, বিমানবন্দরসহ নানা অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে। ১৯৯৭ সালের অর্থনৈতিক সংকটও দক্ষতার সঙ্গে সামাল দেন তিনি।

শততম জন্মদিনেও শারীরিক ও মানসিকভাবে এখনো সক্রিয় মাহাথির। আজ মালয়েশিয়ার পুত্রজায়া শহরে নিজ অফিসে পরিচিত সাফারি স্যুট পরে সকাল সকাল হাজির হন তিনি। জন্মদিন উপলক্ষে এক পডকাস্টে মাহাথির বলেন, ‘আমি সব সময় কাজকর্মের মধ্যে থাকি। মানুষ কেন বিশ্রাম নিতে চায়, তা আমি বুঝি না। বলতে চাচ্ছি যে আপনি অবকাশের জন্য ছুটি নিতে চান, তার মানে আপনি কিছু করছেন। অবকাশযাপনও একটি কাজ। তবে কিছু মানুষ অবসর নিতে চান এবং বিশ্রাম করতে চান। বিশ্রামের অর্থ কী? আপনি কিছুই করছেন না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জোতার স্মৃতিকে ‘চিরস্থায়ী’ করতে অবসরে লিভারপুলের ২০ নম্বর জার্সি
  • দুই দেশের হয়ে টেস্ট খেলা পিটার মুরের অবসর
  • আরএসএসের প্রধান তবে কি ৭৫ বছরে মোদিকেও অবসরে যাওয়ার কথা বললেন
  • ১৮ জন বিচারককে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার
  • দুর্নীতির অভিযোগে ১৮ বিচারককে অবসরে পাঠাল সরকার
  • ১৮ বিচারককে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার
  • শতবর্ষের মাইলফলক পেরোলেন মাহাথির
  • ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর মুখে হঠাৎ অবসরের কথা
  • দুদকের মামলায় সিলেট কারাগারে কাশিমপুরের সাবেক জেলসুপার