সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আকাশ ভ্রমণের স্বপ্নপূরণ করেছে বেসরকারি বিমান সংস্থা নভোএয়ার। বুধবার জাগো ফাউন্ডেশনের পরিচালনাধীন স্কুল থেকে ৩০ শিশুকে নভোএয়ারের একটি ফ্লাইট ঢাকা থেকে কক্সবাজারে ঘুরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এদিন কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ‘বিচ ক্লিনিং’ কর্মসূচি পালন করা হয়।
নভোএয়ারের ১২ বছরপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে ‘ড্রিম ফ্লাইট’ ও ‘বিচ ক্লিনিং’ এর আয়োজন করা হয়।
নভোএয়ার ঢাকা থেকে সকাল ১০টা ২০মিনিটের ফ্লাইটে শিশুদের নিয়ে কক্সবাজার যায় এবং কক্সবাজার থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার ফ্লাইটে ঢাকায় আসে। শিশুরা কক্সবাজারে সমুদ্রসৈকত, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কক্সবাজার ঘাঁটি, কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন করে আনন্দঘন সময় কাটায়।
স্বপ্নপূরণের অনুভূতি প্রকাশ করে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মায়মুনা রহমান বলে, ‘প্লেনে করে সমুদ্রসৈকত ঘুরতে যাব, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর উড়োজাহাজ দেখতে পারব, এটা আমি কখনো কল্পনাও করিনি। নভোএয়ারের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, তারা আমাদের এই স্বপ্নপূরণ করেছে।
তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র হানিফ মিয়া বলে, মেঘের ওপর দিয়ে উড়োজাহাজে করে যাচ্ছি, এটা অসাধারণ অনুভূতি! আমরা বিচে খেলেছি, কক্সবাজারের খুব সুন্দর রেলস্টেশন দেখেছি। এ ভ্রমণ ছিল একেবারে স্বপ্নের মতো।
নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, শিশুরাই আমাদের জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের স্বপ্নপূরণ এবং প্রেরণা দেওয়ার জন্যই আমাদের এই উদ্যোগ। আমরা বিশ্বাস করি, সামাজিক দায়বদ্ধতা হিসেবে এমন উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, আমাদের গর্ব কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে ‘বিচ ক্লিনিং’ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
নভোএয়ার প্রতিদিন ঢাকা থেকে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সৈয়দপুর, যশোর, সিলেট ও রাজশাহী ফ্লাইট পরিচালনা করছে। আন্তর্জাতিক রুট কলকাতায় ফ্লাইট পরিচালনা সাময়িক বন্ধ রয়েছে, শিগগির পুনরায় শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে নভোএয়ার।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইন্টারনেটের গতিতে নতুন রেকর্ড গড়ল জাপান
ইন্টারনেটের গতি নিয়ে নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছে জাপান। দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজি (এনআইসিটি) দাবি করেছে, তারা পরীক্ষামূলকভাবে প্রতি সেকেন্ডে ১ দশমিক শূন্য ২ পেটাবিট গতিতে তথ্য স্থানান্তর করতে সক্ষম হয়েছে, যা এ পর্যন্ত বিশ্বে সর্বোচ্চ।
এই গতির অর্থ হলো, এক সেকেন্ডেই পুরো নেটফ্লিক্স লাইব্রেরি কিংবা হাজার হাজার বার ইংরেজি উইকিপিডিয়ার বিশাল তথ্যভান্ডার ডাউনলোড করে নেওয়া যাবে। গবেষণা দলের ভাষ্য অনুযায়ী, পরীক্ষাটি পরিচালিত হয়েছে এনআইসিটির ফটোনিক নেটওয়ার্ক ল্যাবরেটরির উদ্যোগে। এতে অংশ নেয় জাপানের প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান সুমিতোমো ইলেকট্রিক ও ইউরোপের কয়েকটি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান। পরীক্ষায় ব্যবহার করা হয় ১৯ কোরবিশিষ্ট একটি বিশেষ অপটিক্যাল ফাইবার কেব্ল, যার ব্যাস মাত্র শূন্য দশমিক ১২৫ মিলিমিটার। প্রচলিত ইন্টারনেট কেব্লের মতোই। ডেটা পাঠানোর জন্য গবেষকেরা ব্যবহার করেন ৮৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ ফাইবার লুপ, যা ১৯টি পৃথক কোরে ২১ বার পুনরাবৃত্তি করে মোট ১ হাজার ৮০৮ কিলোমিটার দূরত্বে ১৮০টি স্বতন্ত্র তথ্যপ্রবাহ একযোগে পাঠানো হয়। এতে প্রতি কিলোমিটারে প্রতি সেকেন্ডে ১ দশমিক ৮৬ এক্সাবিট তথ্য স্থানান্তরের হার রেকর্ড হয়, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
গবেষণায় ব্যবহৃত কেব্লটি তৈরি করেছে সুমিতোমো ইলেকট্রিক এবং এনআইসিটি নির্মাণ করেছে তথ্য প্রেরণের পূর্ণাঙ্গ প্রেরণব্যবস্থা। এতে ব্যবহৃত হয়েছে উন্নত মানের ট্রান্সমিটার, রিসিভার ও অন্যান্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন উপকরণ। এনআইসিটির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা প্রমাণ করতে চেয়েছি, বর্তমান অবকাঠামো ব্যবহার করেই দীর্ঘ দূরত্বে আলট্রা–হাই স্পিড ইন্টারনেটের সংযোগ সম্ভব।’
তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট গ্যাজেট–এর হিসাব অনুযায়ী, এই গতিতে ইংরেজি উইকিপিডিয়ার প্রায় ১০০ গিগাবাইট তথ্য মাত্র এক সেকেন্ডে ১০ হাজার বার ডাউনলোড করা সম্ভব। একই সময়ে নামিয়ে ফেলা যাবে উচ্চ রেজল্যুশনের ৮কে ভিডিও ফাইলও। এই গবেষণার তাৎপর্য প্রসঙ্গে প্রযুক্তিবিদেরা বলছেন, কেবল অবকাঠামো বদলানো ছাড়াই ইন্টারনেটের গতি বিপুলভাবে বাড়ানো যে সম্ভব, তা আবারও প্রমাণ করল জাপান। বিশ্বজুড়ে ভিডিও স্ট্রিমিং, ক্লাউড কম্পিউটিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রযুক্তির প্রসারে ডেটা ব্যবহারের পরিমাণ দ্রুত বাড়ছে। এমন বাস্তবতায় উচ্চগতির নির্ভরযোগ্য সংযোগ নিশ্চিত করতে ফাইবার অবকাঠামোর সক্ষমতা বাড়ানোর এই প্রচেষ্টা গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে এই প্রযুক্তি সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য কবে নাগাদ উন্মুক্ত হবে, তা এখনো নিশ্চিত করেনি এনআইসিটি।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস