প্রবাসী স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে গালায় ফাঁস দিলেন স্ত্রী
Published: 15th, January 2025 GMT
ভোলার চরফ্যাসনে স্বামীর পরিবারের সদস্যদের মানসিক নির্যাতন সইতে না পেয়ে ওমান প্রবাসী স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে মোসাম্মদ মিতু বেগম (১৯) নামের এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন।
বুধবার সন্ধ্যার আগে শশীভূষণ থানার এওয়াজপুর ইউনিয়নের ওই গৃহবধূর বাবার বসত ঘরে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে শশীভূষণ থানা পুলিশ রাত ৮টায় চরফ্যাসন হাসপাতাল থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে করে থানায় নিয়ে যান। নিহত গৃহবধু মিতু ওই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মো.
গৃহবধূর মামী মুনিরা বেগম জানান, রসুলপুর ইউনিয়নের বাবুল বেপারীর ছেলে ওমান প্রবাসী বেল্লাল হোসেনের সাথে ৯ মাস আগে মিতুর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পরে জামাতা বেল্লাল প্রবাসে চলে যান। এরপর থেকে মিতু কালো বলে তার শ্বশুর বাবুল বেপারীর পরিবারের সদস্যরা নানা সময় তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করত। পুত্রবধূ কালো তাই তারা প্রায় সময় ২ লাখ টাকা যৌতুক ও সাংসারিক জিনিসপত্রের জন্য মিতুর সঙ্গে ঝগড়াবিবাদ করত। প্রায় সময় শ্বশুর ও শাশুড়ি ও ননদেরা মিতুকে মারধর করতো। স্বামীর পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনের শিকার হয়ে মঙ্গলবার বিকালে মিতু বাবার বাড়িতে চলে আসে। এসব বিষয় নিয়ে প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে তর্কবিতর্ক করে তিনি বসতঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেন।
গৃহবধূর ছোট বোন রিতু বেগম জানান, ঘটনার দিন বিকালে মা বাড়িতে ছিলেন না। অসুস্থ ফুফুকে দেখতে তাদের বাড়িতে যান। তিনি এবং বড় বোন মিতু একাই ঘরে ছিলেন। বিকালে বোন মিতু দুলাভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন। আমি ঘরে থাকায় তাদের ভিডিও কলে কথা বলতে অসুবিধা হওয়ায় বোন আমাকে পাশে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। তখন তিনি দুলাভাইয়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলছিলেন। অনেকক্ষণ পরে আমি ঘরে ফিরে বোনের কোন সাড়া-শব্দ না পেয়ে তার শোবার ঘরে যায়। এ সময় দেখি আড়ার সঙ্গে বোন মিতু ঝুলে আছে। কল চলা অবস্থায় পাশে পড়ে ছিল তার মোবাইল ফোন। আমার ডাক চিৎকারের প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে চরফ্যাসন হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে জানান।
মিতুর মৃত্যু খবর ছড়িয়ে পড়লে তার শ্বশুরসহ তার পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
শশীভুষণ থানার ওসি তারিক হাসান রাসেল জানান, হাসপাতাল থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। আগামীকাল সকালে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
২ কেজির ইলিশ বিক্রি হলো ৭ হাজার ৭০০ টাকায়
সারাদেশে ইলিশের দাম নিয়ে যখন হইচই তখন জেলেরা ভুগছেন ইলিশ সংকটে আর ক্রেতারা হতাশ দাম নিয়ে। এ অবস্থায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জামাল মাতুব্বর নামের এক জেলের জালে ধরা পড়লো ২ কেজির এক ইলিশ যা বিক্রি হলো ৭ হাজার ৭০০ টাকায়।
রোববার বিকেলে উপজেলার আশাখালী মাছ বাজারে ২ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশটিকে ৭ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করেন জেলে। মাছটি কেনেন বন্ধন ফিসের মালিক মো. জাহিদুল ইসলাম।
জেলে জামাল মাতুব্বর বলেন, গত কালকে সমুদ্রে মাছ ধরতে নেমে আজকে আবহাওয়া খারাপ হওয়া তীরে চলে এসেছি৷ ইলিশ মাছ কম তবে একটি ইলিশ আমি ৭ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করেছি। যে কারণে কম মাছ পেলেও খুব ভালো লাগছে। এর চেয়েও বড় ইলিশ সমুদ্রে পাওয়া যায় তবে এখন দাম অনেক হওয়ায় যা দাম এসেছে তাতে পুষিয়ে যায় আমাদের।
বন্ধন ফিসের মালিক মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, গত ১১ জুন ৬০ দিনের অবরোধ শেষ হওয়ার পর কয়েকবার আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় জেলেরা ঠিকমতো মাছ ধরতে পারছেন না। তবে আজকে জেলে জামাল একটি মাছ প্রায় ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। এটা তার জন্য অনেক আনন্দের। মাছটি আমি কিনে ঢাকায় পাঠিয়েছি।
উপজেলার বেশ কয়েকটি মাছের বাজারে কথা বলে জানা যায়, ইলিশ সংকট হওয়ায় তার দাম আকাশচুম্বী। আজকে এক কেজির উপরের ইলিশ প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে এক লাখ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ ৯৫ থেকে ৯৮ হাজার টাকায়, ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশ ৭০ হাজার থেকে ৮৫ হাজার টাকায়, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ ৬৫ থেকে ৬৮ হাজার টাকায়, ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রামের ইলিশ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ৬০ দিনের অবরোধ সঠিকভাবে পালন হওয়ায় সাগরে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়ায় জেলেরা ঠিকমত মাছ ধরতে ব্যর্থ হচ্ছেন। তবে আবহাওয়া ঠিক হলে মাছের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে আর দামও নাগালে চলে আসবে।