রূপগঞ্জে খোলা জায়গায় চেয়ারম্যান সালাউদ্দিনের কয়লার স্তুূপ, হুমকির মুখে পরিবেশ
Published: 4th, February 2025 GMT
রূপগঞ্জে শিমুলিয়া ঘাটে শীতলক্ষ্যা নদীর পারে কাঞ্চন সেতুর পাশেই খোলা জায়গায় হাজার হাজার টন কয়লা স্তুুপ করে ব্যবসা করছে চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন। এতে এখানকার পরিবেশের মারাত্মক অবনতি হয়েছে। যেকোনো সময় কয়লার স্তূপে আগুন লাগলে এখানে ভয়াবহ ক্ষতির শংকা রয়েছে।
এরপাশেই রয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল প্রকল্প ও শিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়। রাজউক একাধিকবার ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার নোটিশ দিলেও লাভ হয়নি। বর্তমানে ব্যবসা আরও সম্প্রসারিত হয়েছে।
অপরদিকে কয়লার ধুলার কারণে বিদ্যালয়ের ৮০০ থেক ৯০০ জন শিক্ষার্থী নিয়মিত আশা যাওয়া করতে পারে না। ধুলায় শিক্ষার্থীরা মাঝে মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
এরই মধ্যে কয়লার স্তূপের আশ পাশ এলাকায় শত শত গাছ কয়লার তেজষ্ক্রিয়তায় মরে গেছে। অন্যদিকে কয়লার ধূলি-কণা ও কার্বণের কারণে এলাকার পরিবেশের মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।
কয়লার ধূলি-কণা বাতাসে মিশে পরিবেশকে করে তুলেছে দূষণীয়। সেই ধূলি-কণা মানুষের নিঃশ্বাসের সঙ্গে ভেতরে ঢুকে শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত করছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে এখানকার লোকজন এক সময় ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন বলে আশঙ্কা চিকিৎসকের।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, এই কয়লার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের হামলাকারী হত্যা মামলার আসামি রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী সাবেক মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীরের বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তি আওয়ামীলীগ নেতা সালাউদ্দিন।
সালাউদ্দিন চেয়ারম্যান তার শ্যালক সহযোগী রুবেলকে দিয়ে দুবাইতে বসে এই অবৈধ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ। আর তাদের ভয়ে স্থানীয় লোকজন নিরুপায়। অবৈধভাবে শিমুলিয়া ঘাটে কয়লার ব্যবসা করে পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে তারা।
মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, রূপগঞ্জ ইউনিয়নের শিমুলিয়া ঘাটে শীতলক্ষ্যা নদীপারের রাজউক জায়গা অবৈধভাবে দখল করা হয়েছে। সেখানে স্তূপ করে কয়েকটি সারিতে কয়লা রাখা হয়েছে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় কালো পাহাড়। চারদিকে কয়লার ধুলা উড়ছিল।
এতে করে রাস্তাঘাট দিয়ে মানুষ ও শিমুলিয়া হাই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
কয়লার স্তূপের প্রায় ২০০গজ দূরে তৈরি জেটিতেও রাখা কয়লা-পাথর। জেটির কাছে বড় বড় কার্গো ভেড়ানো। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়লা নামানো হচ্ছে। আর শ্রমিক জেটি থেকে কয়লা নামানোর কাজে ব্যস্ত। সেখানেও কয়লার ধুলা উড়ছে। জেটির কাছেই শিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের দূর্বাঘাস কালো হয়ে আছে। আর বাতাসে ভ্যাপসা গন্ধ।
শিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.
স্থানীয় লোকজন বলছেঁন, এখন তো শীতের সময়ের জন্য তার জন্য অনেক কিছু আপনারা দেখেন না। জুলাই আগস্ট মাসে আসলে দেখবেন প্রখর রোদে মাঝেমধ্যে কয়লার স্তূপে আগুন ধরে যায়। এসময় এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। আমাদের এলাকার পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো। তবে খোঁজ-খবর নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ক র পর ব শ র ব যবস র পগঞ জ এল ক র
এছাড়াও পড়ুন:
২০০ বছরের পুরোনো সেই দানব ফিরল পর্দায়, কেমন হলো ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’
তাঁর সিনেমায় দানব থাকে, তবে গিয়ের্মো দেল তোরোর দর্শকমাত্রই জানেন এই দানব হয় অন্য রকম। এই দানব শুধু ভয় দেখায় না, বরং অনেক বেশি মানবিক। ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’ দেল তোরোর স্বপ্নের প্রকল্প; বহু বছর ধরে মেরি শেলির উপন্যাসকে পর্দায় নিয়ে আসতে চান তিনি। দুই শ বছরের বেশি সময় আগে লেখা উপন্যাসটি থেকে দুনিয়ার নানা প্রান্তে এন্তার সিনেমা-সিরিজ, কমিকস হয়েছে; তবু দেল তোরো নিজের ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’ বানাতে মরিয়া ছিলেন। ‘আমি স্বপ্ন দেখি সর্বকালের সেরা “ফ্রাঙ্কেনস্টাইন” বানাতে পারি, কিন্তু তৈরি করলেই তা শেষ হয়ে যায়। সেটা ভালো হোক বা না হোক; আর স্বপ্ন দেখার সুযোগ নেই। এটাই নির্মাতার ট্র্যাজেডি,’ বহু বছর আগে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন তিনি। সেই স্বপ্ন অবশেষে বাস্তব হলো, গত ৭ নভেম্বর নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে গথিক হরর সিনেমার এই ওস্তাদ নির্মাতার ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’।
একনজরেসিনেমা: ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’
ধরন: গথিক সায়েন্স-ফিকশন
পরিচালনা: গিয়ের্মো দেল তোরো
অভিনয়: অস্কার আইজ্যাক, জ্যাকব এলর্ডি, মিয়া গথ, ফেলিক্স কামারার ও ক্রিস্টফ ভালৎজ
স্ট্রিমিং: নেটফ্লিক্স
রানটাইম: ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট
সিনেমাটি তিনটি অংশে বিভক্ত—শুরুর বয়ান, ভিক্টরের গল্প আর মনস্টারের গল্প। একুশ শতকের এই সিনেমা দু শ বছর আগে লেখা মূল গল্পের কাছাকাছি থেকেও নতুনত্ব তৈরি করেছে। মেসি শেলির উপন্যাস ১৮১৮ সালে প্রকাশিত হয়েছিল, সিনেমার সময়কাল ১৮৫৭; লেখকের মৃত্যুর কিছু বছর পর। ভিক্টোরিয়ান যুগে গল্পকে স্থান দেওয়ায় তা বর্তমান দর্শকের কাছে পরিচিত প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে।
সিনেমার শুরু হয় আর্কটিক অঞ্চলে, যেখানে স্রষ্টা ও সৃষ্টি একে অপরের শিকার হয়ে চলেছেন। কিন্তু দেল তোরো সেটা যেভাবে দেখিয়েছেন তা কেবল চমকপ্রদ আর ভয়ানকই নয় বরং হৃদয়বিদারক। দেল তোরো মনস্টারকে একধরনের অতিপ্রাকৃত রূপ দিয়েছেন। একটু পরে মনস্টার নিজেই যখন তাঁর জীবনের গল্প বলা শুরু করে; সিনেমা নতুন রূপ পায়।
‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’–এর দৃশ্য। নেটফ্লিক্স