রূপগঞ্জে শিমুলিয়া ঘাটে শীতলক্ষ্যা নদীর পারে কাঞ্চন সেতুর পাশেই খোলা জায়গায় হাজার হাজার টন কয়লা স্তুুপ করে ব্যবসা করছে চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন। এতে এখানকার পরিবেশের মারাত্মক অবনতি হয়েছে। যেকোনো সময় কয়লার স্তূপে আগুন লাগলে এখানে ভয়াবহ ক্ষতির শংকা রয়েছে। 
এরপাশেই রয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল প্রকল্প ও শিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়। রাজউক একাধিকবার ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার নোটিশ দিলেও লাভ হয়নি। বর্তমানে ব্যবসা আরও সম্প্রসারিত হয়েছে। 

অপরদিকে কয়লার ধুলার কারণে বিদ্যালয়ের ৮০০ থেক ৯০০ জন শিক্ষার্থী নিয়মিত আশা যাওয়া করতে পারে না। ধুলায় শিক্ষার্থীরা মাঝে মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

এরই মধ্যে কয়লার স্তূপের আশ পাশ এলাকায় শত শত গাছ কয়লার তেজষ্ক্রিয়তায় মরে গেছে।  অন্যদিকে কয়লার ধূলি-কণা ও কার্বণের কারণে এলাকার পরিবেশের মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।

কয়লার ধূলি-কণা বাতাসে মিশে পরিবেশকে করে তুলেছে দূষণীয়। সেই ধূলি-কণা মানুষের নিঃশ্বাসের সঙ্গে ভেতরে ঢুকে শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত করছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে এখানকার লোকজন এক সময় ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন বলে আশঙ্কা চিকিৎসকের।

স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, এই কয়লার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের হামলাকারী হত্যা মামলার আসামি রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী সাবেক মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীরের বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তি আওয়ামীলীগ নেতা সালাউদ্দিন। 

সালাউদ্দিন চেয়ারম্যান তার শ্যালক সহযোগী রুবেলকে দিয়ে দুবাইতে বসে এই অবৈধ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ। আর তাদের ভয়ে স্থানীয় লোকজন নিরুপায়। অবৈধভাবে শিমুলিয়া ঘাটে কয়লার ব্যবসা করে পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে তারা।  

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, রূপগঞ্জ ইউনিয়নের শিমুলিয়া ঘাটে শীতলক্ষ্যা নদীপারের রাজউক জায়গা অবৈধভাবে দখল করা হয়েছে। সেখানে স্তূপ করে কয়েকটি সারিতে কয়লা রাখা হয়েছে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় কালো পাহাড়। চারদিকে কয়লার ধুলা উড়ছিল।

এতে করে রাস্তাঘাট দিয়ে মানুষ ও শিমুলিয়া হাই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। 

কয়লার স্তূপের প্রায় ২০০গজ দূরে তৈরি জেটিতেও রাখা কয়লা-পাথর। জেটির কাছে বড় বড় কার্গো ভেড়ানো। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়লা নামানো হচ্ছে। আর শ্রমিক জেটি থেকে কয়লা নামানোর কাজে ব্যস্ত। সেখানেও কয়লার ধুলা উড়ছে। জেটির কাছেই শিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের দূর্বাঘাস কালো হয়ে আছে। আর বাতাসে ভ্যাপসা গন্ধ। 

শিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.

মোতাহার সরকার বলেন, ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার খুবই ক্ষতি হচ্ছে। কয়লা ব্যবসায়ীদের অনেক বোঝানোর পরও তাঁরা কোনো কথা শোনেননি। শুধু বিদ্যালয় নয়, কয়লা ও পাথরের ব্যবসার কারণে চারদিকের পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। এ ছাড়া এলাকার জনতা উচ্চবিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীরা দূষণে ভোগান্তি শিকার হচ্ছে। 

স্থানীয় লোকজন বলছেঁন, এখন তো শীতের সময়ের জন্য তার জন্য অনেক কিছু আপনারা দেখেন না। জুলাই আগস্ট মাসে আসলে দেখবেন প্রখর রোদে মাঝেমধ্যে কয়লার স্তূপে আগুন ধরে যায়। এসময় এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। আমাদের এলাকার পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো। তবে খোঁজ-খবর নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ক র পর ব শ র ব যবস র পগঞ জ এল ক র

এছাড়াও পড়ুন:

অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন, ২৭ শিক্ষার্থী পেলেন বিশেষ অ্যাওয়ার্ড

অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন গত শনিবার ঢাকার বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ।

সমাবর্তন বক্তা হিসেবে ছিলেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহসানুল হক মিলন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। এ ছাড়া বক্তব্য দেন অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান এম শামসুল আলম লিটন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. জাহাঙ্গীর আলম। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অভিভাবক, শিক্ষাবিদ, লেখক, সাংবাদিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন ও শুভকামনা জানিয়ে অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ বলেন, ‘তোমরাই নতুন বাংলাদেশের কারিগর। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হলো জ্ঞান ও উদ্ভাবনকে সমৃদ্ধ করা। আমাদের এ প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে।’

আ ন ম এহসানুল হক মিলন সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে বলেন, ‘কয়েক বছরের মেধা ও পরিশ্রমের বিনিময়ে আপনারা গ্র্যাজুয়েট সম্মান অর্জন করেছেন। এটা শেষ নয় বরং শুরু। আপনারা আজ থেকে এমন এক বিশ্বে পা রাখছেন, যা আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি এবং দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। আপনাদের সাফল্য নির্ভর করছে আপনাদের অব্যাহত প্রচেষ্টা, পরিশ্রম, সহনশীল আর পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর সক্ষমতার ওপর।’

অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘একাদশ শতকের মহান বাঙালি পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্করের নাম-যশ ও কর্মের যথাযথ প্রতিফল ঘটিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় ভবিষ্যতের সমৃদ্ধ বাংলাদেশের উপযোগী নাগরিক গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি। এ জন্য শিক্ষার্থীদের একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম কারিকুলামের ওপর জোর দিতে হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান শামসুল আলম লিটন গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘দেশে ৪০ লাখ উচ্চশিক্ষিত বেকার থাকার বাস্তবতা আমরা অস্বীকার করতে পারি না। তাই অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয় গুণগত ও যুগোপযোগী শিক্ষার পাশাপাশি বিশেষ দক্ষতা অর্জনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। ইতিমধ্যে স্কিলস ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (এসডিআই) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাস্তব যোগ্যতা, ডিজিটাল দক্ষতা ও ভোকেশনাল অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার, তারুণ্যে বিনিয়োগ। আমরা বলি, তরুণদের শিক্ষায় বিনিয়োগ তাঁদের নিজেদের এবং দেশের সমৃদ্ধির মূল নিয়ামক।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতির পক্ষে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে ইউজিসির চেয়ারম্যান এস এম এ ফায়েজ গ্র্যাজুয়েট ও মাস্টার্স ডিগ্রি প্রদান ছাড়াও ২৭ জন শিক্ষার্থীকে বিশেষ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন। এর মধ্যে ৬ জন চ্যান্সেলরস অ্যাওয়ার্ড, ৫ জন বিওটি চেয়ারম্যানস অ্যাওয়ার্ড এবং ১৬ জন শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয় ভাইস চ্যান্সেলরস অ্যাওয়ার্ড। এবারের সমাবর্তনে মোট ২ হাজার ৩২৬ জন শিক্ষার্থীকে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠান শেষ হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিশেষ লেজার শোর মাধ্যমে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ