লা রিভ
ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড লা রিভ সামারের প্রথম ক্যাপসুল– ফাল্গুন ও ভ্যালেন্টাইন কালেকশন ২০২৫ নিয়ে এসেছে। নতুন কালেকশনে নারীর জন্য টিউনিক, কামিজ, সালোয়ার-কামিজ, শাড়ি, টপস, শ্রাগ ও ম্যাচিং বটমস ডিজাইন করেছে লা রিভ। ক্যাজুয়াল-ওয়্যারের পাশাপাশি ফাল্গুন ও ভ্যালেন্টাইনের স্পেশাল ইভেন্টগুলোর জন্য থাকছে ইউনিক সব পার্টি-স্টাইল। কাফতান-কাট টিউনিক, ফ্লেয়ার্ড শ্রাগের মতো ইউনিক সব ডিজাইন যোগ হয়েছে এ কালেকশনে। পুরুষের জন্য থাকছে ট্রেন্ডি পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট, পোলো শার্ট, ফরমাল শার্ট ও বেস্ট-ফিট বটমসের সমাহার। টিনএজার, কিড বয় ও কিড গার্ল এবং নবজাতকের জন্যও নতুন ডিজাইন যোগ হয়েছে। টপস, শার্ট, সালোয়ার-কামিজ, ঘাগরা-চোলি, উভেন টপস ও বটমস, ফ্রক, টিউনিক, শার্ট, টি-শার্ট ও পোলো শার্ট এবং পাঞ্জাবির রঙিন সমাহার শিশুদের ফাল্গুন উৎসবের দিন সাজিয়ে তুলবে উৎসবের আমেজে।
সাতকাহন
ফাল্গুন মানেই প্রেম, ফাল্গুন মানেই রঙের উৎসব, ফাল্গুন মানেই নতুন করে জীবনকে ভালোবাসার গল্পে বাঁধা। এই ঋতুর আনন্দ আর রঙের ছোঁয়া ধরা দিয়েছে সাতকাহনের ফাল্গুন কালেকশন ২০২৫-এ, যেখানে রঙিন শাড়ির আঁচলে লেখা আছে বসন্তের কবিতা, নকশার রঙে মিশে আছে ভালোবাসার ভাষা। বাংলার ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মেলবন্ধনে তৈরি হয়েছে এমন সব পোশাক, যা বসন্তের রঙে রাঙাবে হৃদয়কেও। সাতকাহনের এবারের থিম ‘ফাগুনের রঙে ঐতিহ্যের ছোঁয়া’, যেখানে প্রকৃতির রঙিন ক্যানভাস ধরা দিয়েছে পোশাকের রঙে, নকশায়, কারুকাজে। এই বিশেষ সংগ্রহে থাকছে– হাতে করা ব্লক প্রিন্ট, স্ক্রিন প্রিন্ট, নকশিকাঁথার সূক্ষ্ম কাজ, কারচুপি, ডিজিটাল প্রিন্টের অসংখ্য নকশার শাড়ি। প্রতিটি শাড়ির আঁচল যেন বসন্তের রঙে রাঙা কবিতার পঙ্ক্তি।
হরীতকী
বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ‘হরীতকী’ হলুদ ও মাল্টিকালারের বিপুল সংগ্রহ এনেছে। এর মধ্যে রয়েছে– শার্ট, পাঞ্জাবি, কামিজ, স্কার্ট, গাউন, শাড়ি ইত্যাদি। হরীতকীর কো-ফাউন্ডার অনিক কুন্ডু বলেন, ‘আমরা থিম বেসিক কাজ করে থাকি। এবার আমরা শাহবাগের ফুলের দোকানের থিমে শাড়ি করেছি। শাড়িতে নীলের শেডগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে মাল্টিকালারে কাজ করা হয়েছে। নকশিকাঁথার থিমে প্যাচওয়ার্ড ডিজাইনে সাদা ও হলুদ রঙের দুটি শাড়ি করেছি মাল্টিকালার প্যাচওয়ার্ক ফর্মে প্রিন্টের মধ্যে। রিকশার মোটিফ, আদিবাসী থিমে, আদিবাসী নৃত্যকলা ইত্যাদি ডিজাইন ফুটিয়ে তুলেছি।’ ওয়ার্লি চিত্রকলা নিয়ে পাঞ্জাবি, হাতি থিমে শার্ট, আদিবাসী ও গ্রামীণ দৃশ্য নিয়ে শাড়ি ও শার্ট উভয়ই করেছে হরীতকী।
টুয়েলভ
‘স্প্রিং কালেকশন’ এবং ‘ভ্যালেন্টাইন কালেকশন’– এই দুটি প্রতিপাদ্যকে প্রাধান্য দিয়ে নানা আয়োজন সেজেছে দেশের অন্যতম পোশাক ব্র্যান্ড ‘টুয়েলভ’। তাদের পোশাক সম্ভারের মধ্যে রয়েছে মেয়েদের থ্রিপিস, কুর্তি, টপস, শার্ট। স্ক্রিন প্রিন্ট, ডিজিটাল প্রিন্ট, এমব্রয়ডারি ও কারচুপির বাহারি ডিজাইনে ভালোবাসা দিবসের নকশাও ফুটে উঠেছে। ছেলেদের পোশাকের সংগ্রহশালায় রয়েছে পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট। পাশাপাশি বাচ্চাদের পোশাক এবং কাপল পোশাকেও ফুটে উঠেছে বসন্তের রং। হলুদ, বাদামি, কমলা, সবুজ, লালের পাশাপাশি সাদা-কালো রংয়ের সাবলীল মিশ্রণে একটু আলাদাভাবে চোখে পড়ে টুয়েলভের এবারের ফ্যাশন কালেকশন। যেহেতু বসন্তে শীতের দাপট প্রকৃতিতে তেমন একটা থাকে না, তাই অস্বস্তি এড়াতে আরামদায়ক অনুভূতির কথা মাথায় রেখেই পোশাকের ডিজাইন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টুয়েলভের ডিজাইনাররা।
.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন ক ল কশন বসন ত র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
২০০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে ভোলার বৈষা দধি
ভোলার ভ্যাপসা গরম, দুপুর গড়াতে না গড়াতেই সদর রোডজুড়ে তীব্র যানজট নাগরিক জীবনকে ব্যস্ত করে ফেলে। গরমে হাঁসফাঁস করা মানুষ একটু স্বস্তি খোঁজে। আর সেই স্বস্তি এনে দিতে পারে ভোলার বিখ্যাত বৈষা দধি।
দুপুরের আগেই সব দোকানের হাঁড়ি ফাঁকা হয়ে যায়। মহিষের কাঁচা দুধে পাতানো এই দই ভোলার স্বাদ, ইতিহাস ও গর্বের এক অনন্য বহিঃপ্রকাশ।
ভোলার দোকানগুলোতে প্রতিদিন মণকে মণ বৈষা দধি তৈরি হয়। এই দইয়ের বিশেষত্ব হলো, মহিষের কাঁচা দুধ দিয়ে এটি পাতা হয়। বাজারে সচরাচর যে দই পাওয়া যায়, সেসব তৈরি হয় গরুর দুধ দিয়ে এবং দুধ জ্বালিয়ে গাঢ় করে। কিন্তু ভোলার বৈষা দধি হয় মহিষের কাঁচা দুধ দিয়ে।
জলবেষ্টিত দ্বীপ জেলা ভোলার এক অমূল্য সম্পদ মহিষ। পূর্বে মেঘনা, পশ্চিমে তেঁতুলিয়া, উত্তরে ইলিশা আর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর—এই চার নদী ও সমুদ্রবেষ্টিত চরাঞ্চলে ঘুরে বেড়ায় হাজার হাজার মহিষ। সরকারি হিসাবে এই সংখ্যা দেড় লাখের কাছাকাছি, তবে স্থানীয় লোকজনের মতে তা দুই লাখ ছাড়িয়েছে। এই মহিষের দুধই বৈষা দধির প্রাণ।
প্রায় দুই শতাব্দী ধরে এ অঞ্চলের মানুষের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় থাকে এই দই। এ ছাড়া অতিথি আপ্যায়নের অন্যতম প্রধান উপাদান এটি। উৎসব-পার্বণ, বিয়েশাদি কিংবা যেকোনো সামাজিক আয়োজনে বৈষা দধি ছাড়া যেন ভোলার কোনো উৎসব পরিপূর্ণতা পায় না।
মুহাম্মদ শওকাত হোসেনের ‘ভোলা জেলার ইতিহাস’ বই থেকে জানা যায়, দুই শ বছর আগে থেকে ভোলায় চর জাগতে শুরু করে। বসতি হয়, মহিষ পালন শুরু হয়। দুধ সংরক্ষণের উপায় ছিল না বলে স্থানীয় বাসিন্দারা দই বানাতেন। সেখান থেকেই বৈষা দধির যাত্রা শুরু, যা পরে ছড়িয়ে পড়ে পুরো অঞ্চলে।
ভোলার মানুষের খাদ্যসংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে এই দই। এটি ভাতের সঙ্গে খাওয়া হয়, চিড়া-মুড়ির সঙ্গে মিশিয়ে তৈরি হয় মুখরোচক খাবার, আবার গরমের দিনে দই, পানি ও চিনি মিশিয়ে তৈরি করা হয় ঘোল—যা শরীরকে শীতল রাখে। শীতকালে হাঁসের মাংসের সঙ্গে টক দই ও খেজুরের গুড়—ভোলার ভোজনরসিকদের কাছে এক অনন্য স্বাদ। পান্তাভাতের সঙ্গে দই ও খেজুরের গুড় এই অঞ্চলের জনপ্রিয় একটি খাবার।
বর্তমানে প্রতি কেজি বৈষা দই বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। তবে ঈদে দাম বেড়ে যায়। ঈদের আগেই বিক্রেতারা দুধ জমাতে শুরু করেন এবং এ সময়ে প্রতিদিন ৮০০–৯০০ কেজি পর্যন্ত দই বিক্রি হয়।
ভোলার দোকানগুলোতে প্রতিদিন মণকে মণ বৈষা দধি তৈরি হয়