Samakal:
2025-05-01@14:08:34 GMT

আমরা আগে পারিনি, এবার পারব?

Published: 4th, February 2025 GMT

আমরা আগে পারিনি, এবার পারব?

কোনো ব্যক্তি, ঘটনা কিংবা বিষয়বস্তুকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে হলে স্থান-পাত্রের বাইরে ওই সময় সম্পর্কেও সম্যক ধারণা থাকা চাই। তা না হলে এমন মূল্যায়ন সঠিক না হয়ে একপেশে ও পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে উঠতে পারে। বিগত দেড় দশক আমাদের দেশে অন্য সব ক্ষেত্র তো বটেই, বিশেষ করে শিক্ষাক্ষেত্রটি খুবই স্মরণযোগ্য। টানা সরকার বা দেশ শাসনের ধারাবাহিকতা বলতে আমরা যা বুঝি, তা ছিল ওই সময়ে। আওয়ামী লীগপ্রধান শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতাসীন; টানা প্রায় ১৬ বছর। নুরুল ইসলাম নাহিদ টানা দুই মেয়াদের শিক্ষামন্ত্রী; অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী পুরো মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান। তাঁর মেয়াদ শেষে দ্বিতীয়বার তাঁকে মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে রাখা গেলে কিংবা তিনি থাকতে পারলে সেটাও হতো আরেক ইতিহাস। ধারাবাহিক তিন-চার মেয়াদের সরকার, দুই মেয়াদের শিক্ষামন্ত্রী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরপর দুই মেয়াদের উপাচার্য– ব্যতিক্রম কেবল মঞ্জুরি কমিশন। বিগত ৩৫ বছরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদ পদাসীন থাকার কোনো দৃষ্টান্ত নেই।

বিগত ৫৩ বছরের মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী বা শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ৩৬ জনের মধ্যে মাত্র চারজন রয়েছেন, যারা পুরো মেয়াদ পদে সমাসীন ছিলেন। এই চারজনের মধ্যে তিনজন আওয়ামী লীগ আর একজন বিএনপি সরকারের মন্ত্রী। এমন ধারাবাহিকতায় নুরুল ইসলাম নাহিদের পর ডা.

দীপু মনি এবং দীপু মনির পর সর্বশেষ শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। মহিবুল হাসান চৌধুরীর শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার আগে একই মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী (২০১৮-২৩) হিসেবে পাঁচ বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা হয়।

সাত কলেজ ইস্যুটি অবশ্যই নতুন নয়, বরং বেশ পুরোনো। ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ডিগ্রি স্তরে পাঠদানকারী সারাদেশের সরকারি-বেসরকারি আনুমানিক ২৩শ কলেজ থেকে ঢাকার মাত্র সাতটি সরকারি কলেজকে ছাড়িয়ে এনে নতুন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিপ্রায় বা নির্দেশে কাজটি করা হয়েছে। আসলে বিষয়টি ঠিক এমন নয়। সেশনজট নিরসন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী দেশের সব ক’টি সরকারি কলেজকে অঞ্চলভিত্তিক তিনটি ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়) অধীনে আনা যায় কিনা, ভেবে দেখতে বলেছিলেন (১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগপর্যন্ত ডিগ্রি কলেজগুলো যে অবস্থায় ছিল)। তখন থেকেই এ নিয়ে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শুরু হয় টানাপোড়েন। এভাবে বেশ সময় অতিবাহিত হয়। উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ-বিপক্ষ অবস্থান, পাল্টাপাল্টি বক্তব্য এবং দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন-কর্মসূচিসহ অনেক কিছুর পর শেষ পর্যন্ত সাত কলেজের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনতা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে; চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও শিক্ষার্থী ও দায়দায়িত্ব ‘আদান’ ও ‘প্রদান’ নিয়ে সংঘটিত নানা নাটকীয় ঘটনার কথা দুই উপাচার্যেরই ভালো মনে থাকার কথা; সচেতন মহলের তো অবশ্যই সবকিছু জানা। এমন পরিস্থিতিতে একটি সময় ভুক্তভোগী সাত কলেজের আনুমানিক দুই লাখ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক বেশ ত্যক্ত-বিরক্ত এবং অনেকটা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়েও ভয়াবহ সেশনজট এবং অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে শিক্ষার্থীরা। অনন্যোপায় হয়ে বিভিন্ন ইস্যুতে চালিয়ে যেতে থাকে আন্দোলন। 

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এমনিতেই বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে। এরই মধ্যে সামনে চলে আসে সাত কলেজ ইস্যু। এ নিয়ে প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী আবারও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে। সেই সঙ্গে অভিভাবকরাও। দুর্ভোগ-ভোগান্তি আর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা যেন মানুষের পিছু ছাড়ছে না। কিন্তু আর কতকাল? সবার স্বার্থে সুন্দর সমাধান কাম্য। ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাত কলেজ বেরিয়ে গেছে। এখন এ নিয়ে কমিটি কাজ করছে। আমরা আগে পারিনি, এবার পারব– এ প্রত্যাশা সবার।           

বিমল সরকার: অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ত কল জ শ ক ষ মন ত র স ত কল জ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লায় প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

ফতুল্লার লামাপাড়ায় মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, কোর্স সমাপনী সনদ প্রদান, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থতার বর্ষপূর্তি ও খেলাধূলার আয়োজন করা হয়।

বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়।

মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলায় মাদকাসক্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে প্রয়াস বিগত ২২ বছর যাবত নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেবা করে যাচ্ছে।

সব ধরনের আইন ও বিধি-বিধান মেনে সেবার মানোন্নয়ন প্রয়াসের বর্তমান লক্ষ্য। শুধু চিকিৎসা সেবা প্রদান নয়, বরং মানসম্পন্ন টেকসই সেবা নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসা পরবর্তী বিভিন্ন কার্যক্রম কেন্দ্রটি পরিচালনা করে থাকে।

জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রয়াসে চিকিৎসা কোর্স সম্পন্নকারীদের সার্টিফিকেট প্রদান, প্রাক্তন সদস্যদের মনিটরিং, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থ থাকার স্বীকৃতি ও জনসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারনায় অংশগ্রহণ প্রয়াসের টেকসই চিকিৎসা পরিকল্পনার অংশ।

তিনি আরো বলেন, আমরাই প্রথম নারায়ণগঞ্জে ৪০ বেডে লাইসেন্স প্রাপ্ত মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্র। প্রয়াসের প্রতিষ্ঠা ২০০৩ সালে হলেও আমরা লাইসেন্স পেয়েছি ২০০৬ সালে। গত ২০২১ সাল থেকে আমরা প্রতিবছর সরকারি অনুদানের জন্য নির্বাচিত হয়ে আসছি।

এসময় তিনি অভিভাবক প্রতিনিধি ও প্রাক্তন সদস্যদের প্রয়াসের সামগ্রিক কার্যক্রমে সংযুক্ত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের কাউন্সিলর মোঃ সাইফুল ইসলাম, অফিসার এডমিন সাজ্জাদ হোসেন, প্রোগ্রাম অফিসার শেখ ফরিদ উদ্দিন ও মেডিকেল অফিসার ডা. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, শওকত হোসেন, লিটন, আমজাদ, বাবুসহ  রিকোভারীবৃন্দ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ