Samakal:
2025-05-01@05:39:57 GMT

গ্রন্থাগারজুড়ে পাঠকশূন্যতা

Published: 4th, February 2025 GMT

গ্রন্থাগারজুড়ে পাঠকশূন্যতা

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পাঠক সংকটে ভুগছে  গ্রন্থাগার। সরকারি পর্যায়ে দুটি গ্রন্থাগার গড়ে উঠলেও পাঠকের উপস্থিতি কম। একই কারণে বেশির ভাগ বেসরকারি গ্রন্থাগার বন্ধ হয়ে গেছে।
আজ ৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস। ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো দিবসটি উদযাপন করা হয়। জনগণের পাঠাভ্যাস সৃষ্টির লক্ষ্যে ও সরকারি-বেসরকারি গ্রন্থাগারগুলোর কার্যক্রম গতিশীল করতে দিবসটি উদযাপন করা হয়। একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে গ্রন্থাগারের বিকল্প নেই। 
বইয়ের প্রতি পাঠকের আগ্রহ বাড়াতে সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন এবং পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর বাড়িতে জেলা পরিষদের অর্থায়নে গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে গ্রন্থাগার থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে খুব কম দেখা যায়। বর্তমানে সোনারগাঁ গঙ্গাবাসী ও রামচন্দ্র পোদ্দার ইনস্টিটিউশন মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে একটি গ্রন্থাগার রয়েছে, তবে সেটিও প্রায় পাঠকশূন্য। তিনটি গ্রন্থাগারে ৩১ হাজারের বেশি বই, ম্যাগাজিন ও পত্রিকা থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে সেগুলো অবহেলায় পড়ে রয়েছে।
গ্রন্থাগারের সহকারী গ্রন্থাগারিকদের মতে, খুব কম পাঠকই বই পড়তে আসেন। অনেকে এলেও শুধু বই হাতে নিয়ে সেলফি তুলে চলে যান। পাঠকদের মধ্যে পড়ার অভ্যাস কমে গেছে। 
লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের গ্রন্থাগার
১৯৯১ সালে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে লোক ও কারুশিল্পের ওপর গবেষণার জন্য লাইব্রেরি ও ডকুমেন্টেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে প্রায় ১২ হাজার দেশি-বিদেশি লেখকের প্রবন্ধ, কবিতা, গবেষণা গ্রন্থ, ম্যাগাজিনসহ বিভিন্ন ধরনের বই রয়েছে। গবেষক ও দর্শনার্থীরা এখান থেকে গবেষণার জন্য তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারেন। এটি সব পাঠকের জন্য উন্মুক্ত।
জ্যোতি বসু মেমোরিয়াল গ্রন্থাগার
২০১০ সালে জ্যোতি বসুর মৃত্যুর পর তাঁর স্মৃতি ধরে রাখতে বারদী ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া গ্রামে ২০১১ সালের ৪ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের অর্থায়নে ১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি গ্রন্থাগার নির্মাণ করা হয়, যা ২০১৩ সালের ২৪ আগস্ট উদ্বোধন করা হয়। সেখানে প্রায় ২ হাজার ৬০০ দেশি-বিদেশি বই সংরক্ষিত রয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গ্রন্থাগার
সোনারগাঁয়ের শতবর্ষী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সোনারগাঁ গঙ্গাবাসী ও রামচন্দ্র পোদ্দার ইনস্টিটিউশন মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে একটি গ্রন্থাগার রয়েছে, যেখানে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার বই রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ কমতে থাকায় এই গ্রন্থাগারটিও কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের গ্রন্থাগারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ১২ হাজার দেশি-বিদেশি গল্প, উপন্যাস, ভ্রমণ কাহিনী ও গবেষণাধর্মী বই থাকলেও পাঠকশূন্যতা বিরাজ করছে। প্রতিদিন ১০-১৫ জন পাঠক বই পড়তে এলেও প্রায় ২০০ দর্শনার্থী প্রবেশ করেন, যাদের অধিকাংশই বই হাতে নিয়ে ছবি তুলে চলে যান।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে বিভিন্ন পাড়া, মহল্লা ও সংগঠনের উদ্যোগে গড়ে ওঠা গ্রন্থাগার। পাঠকের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হলে পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারের সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। 
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের লাইব্রেরিয়ান ও ক্যাটালগার (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) মো.

মনিরুজ্জামান বলেন, পাঠকশূন্যতায় রয়েছে গ্রন্থাগার। অধিকাংশ দর্শনার্থী বই হাতে নেন না। 
জ্যোতি বসু মেমোরিয়াল গ্রন্থাগারের সহকারী লাইব্রেরিয়ান মাজেদা বেগম জানান, মানুষের বইয়ের প্রতি আগ্রহ নেই। বেশির ভাগ সময় গ্রন্থাগার ফাঁকা থাকে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তাদের অলস সময় কাটাতে হয়। 
সোনারগাঁ গঙ্গাবাসী ও রামচন্দ্র পোদ্দার ইনস্টিটিউশন মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক মানিক চন্দ্র দাস বলেন, স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা পাঠক সংখ্যা কমার অন্যতম কারণ।
প্রতিষ্ঠানটির সহকারী লাইব্রেরিয়ান বিপ্লব চন্দ্র বর্মণ বলেন, শিক্ষার্থীদের বই পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর জন্য তালিকা করে বই বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। লাইব্রেরি রুমে বসে পড়ার আগ্রহ না থাকায় বিকল্প উপায় খোঁজা হচ্ছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ