আমি মনে করি, আমার জায়গায় আমি এক নম্বর: বাপ্পারাজ
Published: 13th, March 2025 GMT
ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা বাপ্পারাজ। ক্যারিয়ারে অসংখ্য রোমান্টিক সিনেমা দর্শকদের উপহার দিয়েছেন তিনি। তবে দর্শকের কাছে অভিনেতা বাপ্পারাজ মানেই ব্যর্থ প্রেম বা ট্র্যাজেডির গল্প! অর্থাৎ ত্রিভুজ প্রেম বা স্যাক্রিফাইসের গল্প নির্ভর সিনেমাগুলোর কারণে আজও এই নায়ক বেশ জনপ্রিয়!
সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সমসাময়িক ব্যস্ততা ও ইন্ডাস্ট্রির নানান বিষয় নিয়ে কথা বলেন এ অভিনেতা। প্রায় সময়ই সামাজিক মাধ্যমে আলোচনায় উঠে আসা প্রসঙ্গেও নিজের মতামত জানান অভিনেতা। তার মতে, তিন নিজের জায়গায় সবসময় নাম্বার ওয়ান।
বাপ্পারাজকে নিয়ে প্রায়ই ট্রল হয়, অনেকে বলে ছ্যাঁকা খাওয়া নায়কের শুভেচ্ছাদূত তিনি। এটা নিয়ে কোনো দুঃখবোধ কাজ করে কিনা জানতে চাইলে বাপ্পারাজ বলেন, ‘একদমই না। আমি মনে করি, আমার জায়গায় আমি এক নম্বর। আমার অভিনীত চরিত্র সবার মনে জায়গা করেছে বলেই এমনটা হয়েছে, তাই এটাকে ইতিবাচকভাবে দেখি। নিঃসন্দেহে এটা আমার সফলতা। আমাকে যখনই পরিচালকরা গল্প শোনাতেন, চরিত্র নিয়ে কথা বলতেন, তখন আমি বেছেই নিতাম ছ্যাঁকা খাওয়া চরিত্র। আমি নিজেও বুঝতাম, ছ্যাঁকা খাওয়া চরিত্রটাই ক্লিক করবে।’
তিনি বলেন, ‘এখন তো আমার সেই সময় নাই, হিরোইনের পেছনে ছুটে ছুটে গান করব। সত্যি কথা বলতে আমাদের এখানে তো ওই রকম চিত্রনাট্যই হয় না। আমরা যারা, এই যেমন আমিন খান, নাঈম আমাদের মত যারা আছে তাদের নিয়ে গল্প ভাবা হয় না। যা-ও কেউ আমাদের কথা ভাবেন, চিত্রনাট্য করতে গেলে, বলবে, বাবার চরিত্র করো বা করেন। বাবার চরিত্র যে করব, আমাদের তো বাবার মতোও অবস্থা হয় নাই। আমাদের নিয়ে চরিত্র লেখা না হলে কীভাবে কী করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘মুম্বাইয়ের দিকে তাকালে দেখি, এই বয়সেও অমিতাভ বচ্চনসহ অন্যদের নিয়ে যেভাবে চরিত্র তৈরি হয়, তা সত্যিই অন্য রকম। বয়স্ক যারা, এখনো তাদের পর্দায় যেভাবে উপস্থাপন করে, তা ঠিকঠাকভাবেই করে। আমাদের এখানে গল্প এখনো একই প্যাটার্নের। হয়তো বাবার চরিত্র দরকার হলো, বলল, বাপ্পা ভাই করবেন? আমি বললাম, না, আমি করব না। এরপর দেখা গেল নাঈমের কাছ গেল, সেও করবেন না। এরপর আমিন খানের কাছে গেল, সেও করল না। এরপর এমন একজনকে নিল, যা হয়তো নিতে হবে বলেই নেওয়া। তাই বলব, আমাদের এখানে কাউকে ভেবে চরিত্র তৈরি হচ্ছে না।’
ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান বেহাল দশায় পরিচালক-প্রযোজকদের ভূমিকা ও মুল সমস্যা প্রসঙ্গে এ অভিনেতা বলেন, কিছুদিন আগে ছোট্ট একটা টিজারে দেখা গিয়েছিল বাপ্পারাজকে। অবশেষে অভিনয়ে ফিরছেন তিনি। নিজের আসন্ন এ কাজ প্রসঙ্গে বাপ্পারাজ বলেন, ‘ওটা একটি ওয়েব সিরিজ। মোস্তফা খান শিহান বানাবে। সিরিজের প্রতিটা চরিত্রের ওপর একটা করে টিজার বানিয়েছে। বানানোর পর চুপচাপ ছিল, ভাবছিল পরে প্রকাশ করবে। কিন্তু হেনা-বকুল নিয়ে এত মাতামাতি শুরু হলো, তার মধ্যেই এটি ছেড়ে দিয়েছে। সময় ও সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে। সিরিজটির নাম ‘রক্তঋণ’। কোনো চ্যানেলের সঙ্গে চূড়ান্ত হলে তবেই শূটিং শুরু হবে। এটি আমার অভিনীত প্রথম ওয়েব সিরিজ হতে যাচ্ছে। বিষয়বস্তুর কারণে সিরিজটিতে কাজ করতে রাজি হয়েছি। যেমন এটার মধ্যে হিরোইন নাই। নাচ-গান নাই। চরিত্রনির্ভর। চরিত্রে অভিনয়ের দুর্দান্ত সুযোগ আছে। ধুমধাম ব্যাপারও আছে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
শিশুদের হত্যার ভয় দেখিয়ে মিরসরাইয়ের দুই বাড়িতে ডাকাতি
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একই গ্রামের দুটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দল ওই দুই বাড়ির চার পরিবারের পরিবারের পুরুষ সদস্যদের বেঁধে শিশু ও নারীদের জিম্মি করে টাকা, স্বর্ণালংকার, কম্বল ও মুঠোফোন নিয়ে যায়। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে ভোর সাড়ে চারটা পর্যন্ত উপজেলার হিঙ্গলী ইউনিয়নের একটি গ্রামের পাশাপাশি দুই প্রবাসী বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, বুধবার রাত দেড়টার দিকে ডাকাত দল প্রথম হানা দেয় কুয়েত প্রবাসীর বাড়িতে। দ্বিতল পাকা বাড়ির মূল ঘর লাগোয়া রান্নাঘরের গ্রিল কেটে ডাকাত দল ঘরে ঢোকে। দলে সাত থেকে আটজন ছিল বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। এ সময় প্রবাসীর স্ত্রী ও সন্তান একা ছিলেন ঘরে। ডাকাত দল ওই বাড়িতে ঢুকে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ ও সন্তানকে হত্যার হুমকি দিয়ে ৫০ হাজার টাকা, দুই ভরি স্বর্ণালংকার ও একটি মুঠোফোন নিয়ে যায়।
ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলায় দুই ভাড়াটিয়ার বাড়িতেও ডাকাতেরা হানা দেয়। সেখান থেকে চার হাজার টাকা ও দুটি মুঠোফোন নিয়ে যায় তারা।
রাত চারটার দিকে প্রথম বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার পশ্চিমে আরেক প্রবাসীর বাড়িতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পড়ে ডাকাত দলের সদস্যরা। সেখানে একতলা নির্মাণাধীন বাড়ির মালিক সৌদি আরব প্রবাসীর শ্বশুর, তাঁর স্ত্রী ও ছোট দুই শিশুপুত্র ছিল। শাবল দিয়ে সদর দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পুরুষ সদস্যদের হাত পা বেঁধে ফেলে ডাকাতেরা। পরে দুই শিশুকে হত্যা ও বাড়ির নারীদের ধর্ষণের হুমকি দিয়ে নগদ ৫০ হাজার টাকা, সাতটি কম্বল ও একটি মুঠোফোন নিয়ে যায়। ২২ মিনিটের মধ্যে ডাকাতি শেষ করে নির্বিঘ্নে চলে যায় তারা।
ডাকাতির শিকার এক প্রবাসীর স্ত্রী প্রথম আলোকে বলেন, রাত দেড়টার দিকে রান্নাঘরের জানালা ভেঙে ডাকাত দলের সদস্যরা ঘরে ঢুকে পড়ে। তাদের পরনে হাফপ্যান্ট ও কালো রঙের মুখোশ ছিল। তাদের সবার হাতে দেশি ধারালো অস্ত্র ছিল। ডাকাতেরা তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। ধর্ষণের হমকি দেয়। তাঁর ছেলেকেও মারধর করে। এরপর তারা দ্বিতীয় তলায় তাঁর দুই ভাড়াটিয়ার ঘরেও হানা দেয়।
ডাকাতি হওয়া আরেক বাড়ির বাসিন্দা প্রবাসীর শ্বশুর প্রথম আলোকে বলেন, মেয়ের স্বামী প্রবাসে থাকায় একা বাড়িতে তিনি সবার দেখভাল করেন। বুধবার ভোর চারটার দিকে ঘরের দরজা ভেঙে সাত–আটজন ডাকাত ঢুকে দেশি অস্ত্রের মুখে তাঁকে বেঁধে ফেলে। এরপর মেয়েকে ধর্ষণ ও দুই নাতিকে হত্যার হুমকি দেয় তারা। এ সময় ঘরে থাকা ৫০ হাজার টাকা, ৭টি কম্বল ও একটি মুঠোফোন নিয়ে গেছে ডাকাতরা। ২২ মিনিট সময়ের মধ্যে ঘরের ভেতর তাণ্ডব চালিয়ে চলে যায় তারা।
দুই বাড়ির চারটি পরিবারে ডাকাতির ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম আবদুল হালিম প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার রাতে হিঙ্গুলী ইউনিয়নে এক বাড়িতে গ্রিল কেটে ও আরেক বাড়িতে দরজা ভেঙে চুরি বা ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। গ্রামটি ফেনী নদীর পাড়ে হওয়ায় নদীর উত্তর পাশের ছাগলনাইয়া উপজেলার সমিতির বাজার এলাকা থেকে শেষ রাতে ডাকাত দল এখানে এসে হানা দেয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।