কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরে বসবাসকারী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাসিক খাবারের বরাদ্দ (রেশন) কমানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। আগামী ১ এপ্রিল থেকে কক্সবাজার উখিয়া ও টেকনাফের আশ্রয়শিবিরে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাথাপিছু মাসিক খাদ্যসহায়তা ১২ মার্কিন ডলার এবং নোয়াখালীর ভাসানচর আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গাদের জন্য ১৩ ডলার করে বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ডব্লিউএফপির এক চিঠিতে এ সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্তের কথা জানায়। এর আগে খাদ্যসহায়তা সাড়ে ১২ ডলার থেকে ছয় ডলারে কমিয়ে আনার ঘোষণায় রোহিঙ্গাদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসায় আশ্রয়শিবিরে স্বস্তি ফিরেছে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) ও অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ডব্লিউএফপির চিঠি পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ডব্লিউএফপি বৃহস্পতিবার তাঁকে চিঠি দিয়ে সহায়তা কমানো সিদ্ধান্ত বদলের কথা জানিয়েছেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১ এপ্রিল থেকে কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক ১২ ডলার (আগে ছিল সাড়ে ১২ ডলার) এবং ভাসানচরে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জন্য ১৩ ডলার (আগে ছিল ১৫ ডলার) বরাদ্দ দেওয়া হবে। আগামী আগস্ট মাস পর্যন্ত একই ধরনের সহায়তা প্রদান করা হবে। এ সিদ্ধান্তের ফলে রোহিঙ্গারা দুশ্চিন্তামুক্ত হলেন। এই সহায়তা রোহিঙ্গাদের খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টিমান ধরে রাখতে অবদান রাখবে।

আরও পড়ুনতহবিল না পেলে রোহিঙ্গাদের রেশন অর্ধেকের বেশি কমাতে হবে: ডব্লিউএফপি০৭ মার্চ ২০২৫

বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৩ লাখের বেশি। এর মধ্যে ভাসানচরের আশ্রয়শিবিরে স্থানান্তর করা হয় ৬০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা। ১৩ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে ৮ লাখ এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরের কয়েক মাসে। গত আট বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে এসে কক্সবাজারে বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছে আরও ৬০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা। রাখাইন রাজ্যের ৮০ শতাংশ এলাকা (২৭০ কিলোমিটার) দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) দখলে রয়েছে।

রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির সভাপতি মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, ৫ মার্চ ডব্লিউএফপি তহবিল–সংকটের কথা উল্লেখ করে নতুন তহবিল না পাওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের মাসিক রেশন জনপ্রতি সাড়ে ১২ ডলার থেকে কমিয়ে ৬ ডলারে নামিয়ে আনার কথা জানিয়েছিল। তখন রোহিঙ্গাদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছিল। কারণ, সাড়ে ১২ ডলারের ওই খাদ্যসহায়তায় একজন রোহিঙ্গার এক মাস দূরের কথা, ১৫ দিন চলত না। তখন রোহিঙ্গা তরুণ–যুবকেরা মাদক চোরাচালানসহ সন্ত্রাসে জড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। এখন আগে সিদ্ধান্ত বদল অপরিবর্তিত রাখায় রোহিঙ্গারা খুশি এবং অনেকটা দুশ্চিন্তামুক্ত।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বর দ দ

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে আবারও ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে গত কয়েক ঘণ্টায় আবারও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। এসব হামলায় ১০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান থেকে নতুন করে আরও এক দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। হাইফা, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ একাধিক শহরে বিস্ফোরণ ও বিকট শব্দ শোনা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, সারা দেশে ১০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। কিছু এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের কাজ চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ