Samakal:
2025-12-10@21:37:30 GMT

কখন বুঝবেন আপনি প্রস্তুত ?

Published: 20th, April 2025 GMT

কখন বুঝবেন আপনি প্রস্তুত ?

সব ধরনের চাকরিতেই ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। যে কোনো নিয়োগের লিখিত অংশের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যে ভাইভা শুরু হয়ে যায়। ফলে ভালো প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয় না। এতে আত্মবিশ্বাস কম থাকে এবং জানা জিনিসও ভুল করে আসে। তাই চাকরির ভাইভা ভালো করতে হলে আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় পরীক্ষায় ভালো করার পরও ভাইভা দিতে গিয়ে আটকে যেতে হয়। ভাইভা ভালো না হওয়ার কারণে স্বপ্নের চাকরিটা হয়েও হয়ে ওঠে না। তবে ভাইভা দিতে যাওয়ার আগ থেকে কিছু প্রস্তুতির বিষয় থাকে। সেসব মেনে চললে ভাইভা অনেকটা সহজ ও সাবলীল মনে হয়। ভাইভার জন্য অবশ্যই ড্রেস কোড গুরুত্বপূর্ণ। এমন পোশাক নির্বাচন করুন, যা আপনাকে সুন্দর, মার্জিত ও পরিপাটি দেখতে সাহায্য করবে এবং আপনাকে আত্মসম্মানবোধ ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপন করবে।
চাকরির ভাইভায় যদি নিজেকে নিয়ে বলতে হয়, তাহলে পূর্বের অভিজ্ঞতা এ ক্ষেত্রে কাজে দেবে। এ প্রশ্নের জন্য আপনি কত দিন ধরে পড়েছেন অর্থাৎ শেষ অর্জিত ডিগ্রি পর্যন্ত নিয়ে বলাই ভালো। 
যে কাজ বা চাকরির জন্য ভাইভা দিতে যাচ্ছেন তার আগে ওই প্রতিষ্ঠান ও কাজ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। আর এখন তো সব প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার ওয়েবসাইট আছে, সেখান থেকেও বিস্তারিত জানা যেতে পারে। ওই ওয়েবসাইট থেকে প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কেও জেনে নেওয়া যেতে পারে।  প্রতিষ্ঠানের অর্জনের কথাও জেনে নিতে হবে ওয়েবসাইট থেকে। আর যদি ওয়েবসাইটে বিস্তারিত না পাওয়া যায়, তবে শেষ ভরসা গুগল আর কোনো ডকুমেন্ট।
কেন আপনাকে বেছে নেওয়া হবে
 যদি ভাইভা বোর্ডে আপনার কাছে জানতে চাওয়া হয়, কেন আমরা এ পদে আপনাকে বেছে নেব বা কেন আপনি এ পদের জন্য নিজেকে যোগ্য বলে মনে করেন।
এমন প্রশ্ন যে কোনো ভাইভার জন্য গুরুত্বপূর্ণ 
অংশ। এমন প্রশ্নের জবাবে প্রার্থীর উত্তর খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আপনি হয়তো এরই মধ্যে অনেক চাকরির জন্য ভাইভা দিয়েছেন। তারা মূলত আপনার কাছে জানতে চাইছেন কেন আপনি অন্যদের চেয়ে এ কাজের জন্য সেরা। আপনি কাজটি এবং প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কতটুকু জানেন, তাও আসলে জানতে চাওয়া হয় এমন প্রশ্নে।
মৌখিক পরীক্ষার নির্দিষ্ট কোনো সিলেবাস নেই। তাই এ পরীক্ষায় কী ধরনের প্রশ্ন করা হবে তা নির্দিষ্ট করে বলার সুযোগ নেই। দেশে ও দেশের বাইরের খোঁজখবর কতটুকু রাখেন বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া বিষয়গুলো অনেক ক্ষেত্রেই  যাচাই করা হয়ে থাকে। যে পদের জন্য আবেদন করেছেন, সে পদ-সংশ্লিষ্ট প্রশ্ন হতে পারে। 
অনার্সে যে বিষয় পড়েছেন সে বিষয়েও প্রশ্ন হতে পারে। বাংলাদেশের সংবিধান সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে। দখলে রাখতে হবে আন্তর্জাতিক বিষয়ও। নিজ জেলার আয়তন, জনসংখ্যা, শিক্ষার হার, কীসের জন্য বিখ্যাত, বিখ্যাত ব্যক্তি ইত্যাদি বিষয়ে ধারণা রাখতে হবে। পরীক্ষার জন্য যথাসম্ভব মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।  তাই ভালো করার জন্য ভালো প্রস্তুতি একান্ত প্রয়োজন। শুধু কোনো পরীক্ষার ভাইভার জন্য নয়, যে কোনো ক্ষেত্রে সফল হতে হলে কথা বলার সময় যে তিনটি বিষয়ের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিতে হবে তা হলো– স্বচ্ছতা, স্পষ্টতা এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। অন্যদিকে, ভাইভা দেওয়ার সময় তিনটি বিষয়ের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। তা হলো–
আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে। কোনোভাবেই নার্ভাস হওয়া যাবে না;
দৃষ্টিভঙ্গি বুদ্ধিবৃত্তিক এবং প্রাণবন্ত থাকতে হবে। চাকরির মৌখিক পরীক্ষায় ভালো করার জন্য কিছু বিষয়ে মনোযোগী থাকতে হয়। ভাইভা বোর্ডে কী করা যায়, আর কী করা যায় না– এ ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার। কারণ, বিসিএসের মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ চাকরির মৌখিক পরীক্ষায় অনেক নম্বর বরাদ্দ থাকে।
সুতরাং শুধু উত্তর জানলেই হয় না, উত্তর দেওয়ার এবং নিজেকে তুলে ধরার কৌশল জানতে হয়। ভাইভা বোর্ডে কীভাবে নিজেকে উপস্থাপন করবেন এবং কোন পরিস্থিতিতে কী করবেন, এখানে তা নিয়ে আলোচনা করা হলো। মুক্তিযুদ্ধ বিশেষ করে বাংলাদেশের ইতিহাস  (৪৭-৭১)। সাম্প্রতিক আলোচিত ঘটনা, দেশ ও বিদেশ, এমডিজি, এসডিজি এগুলোতে বাংলাদেশের অর্জন, নিজ জেলার নামকরণ, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ,  সরকারের বিভিন্ন নীতি, স্বাস্থ্য খাতে পলিসি, তথ্যপ্রযুক্তি ইত্যাদি বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়।
নিজ সম্পর্কে জানা
 নিজের নামের অর্থ, নামের সঙ্গে মিল আছে এমন বিখ্যাত ব্যক্তি এবং পরিবার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। আপনার পছন্দের কবি, সাহিত্যিক, সাহিত্য, গান, খেলাধুলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে পারে। এ ক্ষেত্রে আপনার পছন্দের বিষয়গুলো সম্পর্কে আগে থেকেই ভালোভাবে প্রস্তুতি নিলে ভালো করা সম্ভব। 
নিজ জেলা ও উপজেলা
আপনার নিজ জেলা ও উপজেলার বিখ্যাত ব্যক্তিদের সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। আপনার নিজ জেলায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস,  মুক্তিযুদ্ধের সময় আপনার জেলা কত নম্বর সেক্টরে ছিল ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে হবে। এ ছাড়া আপনার জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি সম্পর্কেও জেনে নিতে হবে। আপনার জেলা ও উপজেলার বিখ্যাত নদী, বন্দর, বিখ্যাত স্থান। আপনার জেলার যদি কোনো কবি ও সাহিত্যিক থাকেন, তাদের সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগ
আপনার বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগ সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত শিক্ষক এবং কী জন্য তা বিখ্যাত, এ সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় আপনার বিশ্ববিদ্যালয় ও হলের যদি কোনো অবদান থাকে, সে সম্পর্কেও ধারণা নিতে হবে। 
দেশ পরিচালনার দায়িত্ব যেহেতু আপনাকে দেওয়া হবে, সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পর্কে জানা আপনার জন্য একান্ত জরুরি। দেশের বাজেট, জিডিপি সম্পর্কে জানতে হবে।  এ ক্ষেত্রে আপনাকে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধি সম্পর্কেও বিস্তারিত জানতে হবে। অন্যদিকে, বর্তমান সরকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে কী কী অবদান রাখছে, 
সে সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে জানতে হবে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ক ষ ম খ ক পর ক ষ আপন র জ ল প রস ত ত পর ক ষ র পর ক ষ য় চ কর র র সময় আপন ক ন আপন এমন প

এছাড়াও পড়ুন:

মধ্যপ্রদেশে ইউরিয়া সারের তীব্র সংকট, হয়েছে লুট, দুজন কৃষকের মৃত্যু

ভারতের মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় সারের সংকট তীব্র হয়েছে। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েও প্রয়োজনীয় সার পাচ্ছেন না কৃষকেরা। এতে অসন্তোষ ছড়িয়েছে। বিক্ষোভ হয়েছে। এমনকি ইউরিয়া সারের ট্রাক লুটের মতো ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্যে বিতরণ কেন্দ্রে সারের জন্য সারিতে দাঁড়ানো আরেকজন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যটিতে গত দুই সপ্তাহের মধ্যে সার সংকট ঘিরে এটা দ্বিতীয় মৃত্যুর ঘটনা। 

গত সোমবার মধ্যপ্রদেশের টিকামগড় জেলার বাদোরাঘাট সার বিতরণ কেন্দ্রে সারিতে দাঁড়ানো অবস্থায় ৫২ বছর বয়সের যমুনা কুশওয়াহা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। কারি বাজরুয়া গ্রামের এ কৃষক দুই বস্তা ইউরিয়া সার পাওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে পরপর তিন দিন লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

স্বজনেরা জানান, ওইদিন যমুনা না খেয়েই সকালেবেলা গ্রাম থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরের সার বিতরণ কেন্দ্রে যান। সেখানে তিনি দীর্ঘ সময় ধরে সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। দুপুরের দিকে অসুস্থ হয়ে পড়ে যান। পরে দ্রুত জেলা হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। কর্মকর্তারা জানান, ময়নাতদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে, যমুনা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

বিতরণ কেন্দ্রে বাইরে অসুস্থ হয়ে পড়া কৃষখ যমুনাকে সরকারি গাড়িতে হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় তহশিলদার সত্যেন্দ্র গুর্জরই। স্থানীয় দেহাত থানা–পুলিশের স্টেশন হাউস অফিসার চন্দ্রজিৎ যাদব নিশ্চিত করেন, যমুনার মৃত্যু হৃদরোগে হয়েছে।

এর আগে গত ২৬ নভেম্বর রাজ্যের গুনা জেলার একটি সার বিতরণ কেন্দ্রের বাইরে পরপর দুই দিন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর মারা যান ৪৫ বছরের ভূরি বাঈ।

টিকামগড়ের সহকারী কৃষি পরিচালক (ডিডিএ) অশোক শর্মা জানান, ১৯ হাজার টন ইউরিয়া সার বিতরণ করা হয়েছে। আরও ২ হাজার ৮০০ টন ইউরিয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

তবে অশোক শর্মা দাবি করেন, টোকেনে থাকা সময় ধরেই সার বিতরণ করা হচ্ছে। বাদোরাঘাট সার বিতরণ কেন্দ্রের বাইরে কারও মারা যাওয়ার তথ্য তাঁর কাছে নেই।

যদিও কৃষকেরা ভিন্ন কথা বলছেন। তাঁদের অভিযোগ, টোকেন ন্যায্যভাবে দেওয়া হচ্ছে না। অনেক সময় কয়েক ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এরপরও অনেককেই সার না পেয়ে দিনশেষে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে।

মধ্যপ্রদেশের টিকামগড় এবং আশপাশের জেলাগুলোয় সার সংকট নিয়ে কৃষকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে গত সোমবার কয়েক শ কৃষক সেখানকার প্রধানতম একটি মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এর ফলে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট দেখা দেয়।

এ ছাড়া গত সপ্তাহে বিক্ষুব্ধ কৃষকেরা টিকামগড়ের জাতারা কৃষিপণ্য বাজারে সরাসরি বিতরণ ট্রাক থেকে ইউরিয়ার বস্তা লুট করেন। একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা জানান, গত বুধবারের ওই ঘটনায় প্রায় ৩০ থেকে ৪০টি সারের বস্তা লুট হয়েছে। পরিস্থিতি শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে এলেও, এ ঘটনায় জেলার সার সরবরাহের ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) স্থানীয় সাহারিয়া জাতিগোষ্ঠীর সদস্য ভূরি বাঈয়ের মৃত্যুর পর থেকে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। ভূরির মৃত্যুর কয়েকদিন পর গুনা আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া তাঁর পরিবারকে সমবেদনা জানাতে যান এবং স্থানীয় প্রশাসনকে তিরস্কার করেন।

ভারতে চলতি অর্থবছরে ইউরিয়া সারেরর ব্যবহার ৪ কোটি টনে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে। অতিরিক্ত বর্ষায় বাড়তি চাহিদা এবং গত এক দশক ধরে সর্বোচ্চ খুচরামূল্য প্রায় অপরিবর্তিত থাকার কারণে সারটির ব্যবহার ক্রমেই বেড়েছে। দেশের সবচেয়ে ব্যবহৃত সারটির বিক্রি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩ কোটি ৮৮ লাখ টনে পৌঁছে, সর্বকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড করেছে।

এই বছর ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে ভালো বৃষ্টি হয়েছে। জলাধারগুলো ও ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ফের পূর্ণ হওয়ায় কৃষকেরাও নতুন উদ্যমে চাষাবাদ শুরু করেছেন। মধ্যপ্রদেশ সরকার জানিয়েছে, এবারের রবি মৌসুমে (অক্টোবর–মে) জলাধারে পানি বেশি থাকার কারণে ইউরিয়া সারের চাহিদাও বাড়তির দিকে রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ