ছাত্রদল বাংলা ‘সিনেমার শাবানা’ নয়: ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি
Published: 21st, April 2025 GMT
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলামকে (পারভেজ) হত্যার প্রতিবাদ এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আজ সোমবার দুপুরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এই মানববন্ধন হয়।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী নেতা-কর্মীরা কালো ব্যানার ও কালো ব্যাজ ধারণ করে শোক প্রকাশ করেন। এ সময় তাঁদের হাতে ‘গুম–হত্যা আর খুন, মানি না মানব না’, ‘যে হাতে বই ছিল তা আজ রক্তে রাঙা, সংস্কারের নামে চলছে খুন আর দাঙ্গা’, ‘কাটতে হবে দোসর লেজ, আমরা আছি পারভেজ’সহ নানা স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি সামাজিক প্ল্যাটফর্ম। যেখানে আমরা সমন্বয়ের চেষ্টা করেছি। কিন্তু কারা এ ব্যানারকে কলুষিত করতে চায়? আজ থেকে আপনাদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলবে না, আপনাদের ছাত্র আন্দোলন বৈষম্যমুখী হয়ে পড়েছে।’
ছাত্রদল বাংলা সিনেমার শাবানা নয় উল্লেখ করে সংগঠনটির এই নেতা বলেন, ‘আড়াই ঘণ্টা একটা চলচ্চিত্রে শাবানা খুব কষ্ট-দুঃখ করে। তবে যখন তার ভালো সময় আসে, তখন তিনি ক্ষমা করে দেন। আমাদের সামনের সারির নেতৃত্ব যদি আহত বা নিহত হয়, আমরা শাবানার মতো ক্ষমা করতে পারব না। আমাদেরও রক্ত গরম হয়, আমাদেরও শরীর গরম হয়।’
শিক্ষার্থীরা একটি ট্রমার (মানসিক আঘাত) মধ্যে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের দেয়াল থেকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। আমরা চুপ করে ছিলাম। আমরা মনে করেছি, শিক্ষার্থীরা যেহেতু একটি ট্রমার মধ্যে আছে, আমরা যদি প্রতিক্রিয়া দেখাই, তাহলে ভুল–বোঝাবুঝি হবে। কিন্তু এখন আনাচকানাচে নামে-বেনামে মঞ্চ তৈরি হয়েছে।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন। ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীর নামে ‘মবোক্রেসি’ (বিশৃঙ্খল জনতার সংঘবদ্ধ কাজ) চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীর নামে মবোক্রেসি চালু করেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের গণতন্ত্রকে কুক্ষিগত করতে চাইছে। ৫ আগস্টের পর ছাত্রদলের রক্তে ক্যাম্পাস রঞ্জিত হয়েছে। বাংলাদেশের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আর কেউ যদি ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায়, তাদের হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, ছাত্রদল কোনো গুপ্ত সংগঠন নয়।’
সাধারণ শিক্ষার্থীদের পরিচয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধীর ব্যানারে ছাত্রলীগের পুনর্বাসন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন নাহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধীর ব্যানারে আর কোনো ছাত্রলীগকে পুনর্বাসন করা হলে আমরা আপনাদের বিরুদ্ধে কঠোর হব।’
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মাসুম বিল্লাহ, সহসভাপতি আনিসুর রহমান খন্দকার, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন শাওন প্রমুখ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
জাহিদুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল এবং সদস্যসচিব শামসুল আরেফিনের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিক্ষোভ মিছিলটি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ থেকে শুরু হয়ে শহীদ মিনারের সামনে দিয়ে বিজ্ঞান অনুষদ চত্বর ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে বের হয়ে বাহাদুর শাহ পার্ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে এসে সমবেত হয়। বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘তুমি কে, আমি কে, পারভেজ পারভেজ’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম মামুন বলেন, ‘আমরা দ্রুত পারভেজ হত্যার বিচারের দাবি জানাচ্ছি এবং যারা হত্যাকারী, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। ভবিষ্যতে যাতে এ রকম হত্যাকাণ্ড আর না ঘটে, সে জন্য কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।'
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম হত্যার বিচার দাবিতে আজ সোমবার দুপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র ল ইসল ম র স মন
এছাড়াও পড়ুন:
রূপগঞ্জে আন্ডারপাস নির্মাণের দাবিতে বিক্ষোভ মানববন্ধন
রূপগঞ্জে মহাসড়কে আন্ডারপাস নির্মাণের দাবিতে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন।
একই দাবিতে উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে দেবগ্রাম-ভুলতা-মদনপুর সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক ও ঢাকাস্থ সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাসির মিয়া বলেন, দেবগ্রাম-ভুলতা-মদনপুর সড়ক নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। সড়কটি দুই লেন থেকে উন্নীত করে ৬ লেন করা হচ্ছে। ব্যস্ততম এ সড়ক নির্মাণ করা হলে গোলাকান্দাইল-বালিয়াপাড়া সড়কটি বন্ধ হয়ে যাবে।
তাছাড়া এ সড়ক পথে দৈনিক শত শত ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করে থাকে। বাইপাস সড়কের উভয়পাশে বসবাসরত কয়েক হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন দেবগ্রাম-ভুলতা-মদনপুর সড়ক পারাপার হয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে।
গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে রূপগঞ্জের গোলাকান্দাইল ভুমি অফিস সংলগ্ন স্থানে একটি আন্ডারপাস নির্মাণ খুবই জরুরি। তিনি আরো বলেন, চলতি বছর ২৪ এপ্রিল তেজগাঁও সড়ক ভবনের প্রকল্প পরিচালক এবং ২০২৪ সালে ৬ মার্চ সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
তারপরও কোনো গুরুত্ব না দেয়ায় সোমবার এলাকার কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী আন্ডারপাস নির্মাণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
ঢাকা বাইপাস সড়কের উভয়পাশে একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪টি কিন্ডারগার্টেন, ৩টি মাদ্রাসা ও এতিমখানা, হাজার বছরের গোলাকান্দাইল হাট-বাজার, ৬টি মসজিদ রয়েছে।
এ সড়ক পারাপার হতে গিয়ে যানবাহনের নিচে চাপা পড়ে গত ৪ বছরে ৩জন নিহত হয়েছেন। এ জনদুর্ভোগ নিরসনে একটি আন্ডারপাস নির্মাণ খুবই জরুরি বলে এলাকাবাসী দাবি করেন।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন- গোলাকান্দাইল মজিবর রহমান ভুঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রীনা আক্তার, সাপ্তাহিক আমাদের রূপগঞ্জ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মো. হানিফ মোল্লা, গোলাকান্দাইল ইউপি সদস্য তপন ঘোষ, জামাল হোসেন, নুরজাহান বেগম, গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি রজব আলী ফকির, শাহিন মিয়া, রমজান মিয়া, গোলাকান্দাইল উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাক মোল্লা, সমাজকর্মী জামান মিয়া সহ আরো অনেকে। পরে বিক্ষোভকারীরা ঢাকা বাইপাস সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে গোলচত্বর গিয়ে শেষ করেন।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, এলাকাবাসীর দাবি যৌত্তিক। ঢাকা বাইপাস সড়কের গোলাকান্দাইল এলাকায় একটি আন্ডারপাস নির্মাণের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগে লিখিত আকারে দাবি জানানো হবে।