তজুমদ্দিনে নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ: গ্রেপ্তার হয়নি মূল আসামিরা
Published: 1st, July 2025 GMT
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে বেঁধে মারধর ও স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার ঝর্ণা বেগমকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে গ্রেপ্তার হয়নি মামলার হয়নি মূল আসামিরা। এদিকে মামলার আসামিদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে তজুমদ্দিন উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন। একই দাবিতে উপজেলার মোল্লা পুকুর এলাকায় মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার দুই নম্বর আসামি উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো.
গৃহবধূকে ধর্ষণ মামলার আসামিদের শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার বিকেলে তজুমদ্দিন বাজারে মানববন্ধন করে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন।
মানববন্ধনে তজুমদ্দিন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব ওমর আসাদ রিন্টু জানান, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানোনো হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে। এছাড়া এ মামলায় রাসেল নামে একজন আসামি রয়েছে। বিভিন্ন মাধ্যমে ওই রাসেলের পরিবর্তে ছাত্রদল নেতা রাসেলকে জড়িয়ে প্রচার-প্রচারণা করা হচ্ছে। এসব অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে আইন ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছে।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন- উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম মোস্তফা মিন্টু, যুগ্ম আহ্বায়ক মহিউদ্দিন জুলফিকার, জাহাঙ্গীর আলম।
একই সময়ে মোল্লা পুকুর এলাকায় স্থানীয়রা আরেকটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ওমর আসাদ রিন্টু জানান, আওয়ামী লীগের কিছু লোক অপপ্রচার করতে গেলে সামান্য উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তবে এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। থানা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে আদালতের পুলিশ পরিদর্শক শেখ মো. নাসির উদ্দিন জানান, গ্রেপ্তার ঝর্ণা বেগমকে মঙ্গলবার আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী নারীকে সোমবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। রাতেই তার মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়। মঙ্গলবার সকালে তিনি হাসপাতাল থেকে চলে যান।
মামলার বাদী ওই নারীর স্বামী জানান, তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক বিরোধ চলছে। এ নিয়ে কথা বলার জন্য শনিবার রাতে ফোন করে তাকে তজুমদ্দিন বাজার এলাকায় যেতে বলেন ওই নারী। সেখানে পৌঁছানোর পর শ্রমিক দলের নেতা ফরিদ উদ্দিন, তার সহযোগী আলাউদ্দিন, ছাত্রদল নেতা রাসেলসহ ৫ থেকে ৭ জন তাকে মারধর করে চার লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না পেয়ে তাকে রাতভর নির্যাতন করা হয়। খবর পেয়ে পরদিন রোববার বেলা ১১টায় ওই ব্যক্তির প্রথম স্ত্রী সেখানে গিয়ে আসামিদের ১০ হাজার টাকা দেন। কিন্তু এতে খুশি হননি ফরিদ ও তার লোকজন। ক্ষুব্ধ হয়ে স্বামী-স্ত্রী দু’জনকে নির্যাতন করতে থাকে তারা।
ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, দুপুর ১২টায় তার স্বামীকে জোরপূর্বক বাসার বাইরে নিয়ে যায় আসামিদের কয়েকজন। এ সময় ওই বাসার একটি কক্ষে ফরিদ ও আলাউদ্দিন মিলে তাকে ধর্ষণ করে। তখন ঘরের বাইরে পাহারায় ছিল মারধরের শিকার ব্যক্তির দ্বিতীয় স্ত্রী। ভুক্তভোগী নারী আসামিদের ‘ভাই’ ডেকেও রক্ষা পাননি। বিষয়টি কাউকে না জানানোর শর্তে বিকেলে মুক্তি পান স্বামী-স্ত্রী। বাড়ি ফিরে সন্ধ্যায় দুইবার আত্মহত্যার চেষ্টা চালান ওই নারী। তবে স্বজনদের কারণে তিনি তা করতে পারেননি। প্রতিবেশীদের সহায়তায় ওই রাতে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পরে তজুমদ্দিন থানা পুলিশ গিয়ে ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আস ম দ র ব এনপ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ভেরামারার পদ্মায় তীব্র ভাঙন, হুমকিতে বাঁধ
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের মুন্সিপাড়াসহ আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি। হুমকির মুখে পড়েছে বিভিন্ন স্থাপনা ও নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ। আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে নদীপাড়ের দশ হাজার মানুষের।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয়রা জানান, উজান থেকে নেমে আসা পানি, অতিবৃষ্টি আর প্রবল স্রোতের কারণে পদ্মায় ভাঙন শুরু হয়েছে। বিশেষ করে ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া, ১২ মাইল টিকটিকিপাড়া ও মসলেমপুরে ভাঙন সবচেয়ে বেশি।
এদিকে, ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে নদীর পাড়ে মানববন্ধনও করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। নতুন করে আর কোনো আশ্বাস নয়, দ্রুত ভাঙন রোধে স্থায়ীভাবে পদক্ষেপ নিতে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানিয়েছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা।
আরো পড়ুন:
কুড়িগ্রামে ভাসমান তেল ডিপো চালুর দাবিতে মানববন্ধন
মুরাদনগরে নারী ধর্ষণ: জবি ও কুবি শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ
ভুক্তভোগী রাকিব হোসেন বলেন, “গত এক সপ্তাহ হলো নদী ভাঙছে। কেউ আসছে না। জিও ব্যাগ ফেললে আমারা বেঁচে যেতাম। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আমাদের রাস্তায় রাত কাটাতে হবে।”
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুর রহমান বলেন, “তালবাড়ীয়া থেকে নয় কিলোমিটার ভাঙন স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে ১ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প চলমান রয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকা রক্ষায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এরই মধ্যে যোগাযোগ করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই ভাঙনরোধে কাজ শুরু করা হবে।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ