চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাসুদ পারভেজকে মারধরের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির কনসালটেন্ট ডা. আহসান হাবিবের বিরুদ্ধে। শনিবার (৩ মে) সকালে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। পরে সেখানে উপস্থিত হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকালে হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগী দেখাসহ বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে আলোচনা করতে তত্ত্বাবধায়ক মাসুদ পারভেজের কক্ষে যান কনসালটেন্ট ডা.

আহসান হাবিব। কথাবলার মাঝেই তারা দুই জনই বাদানুবাদে জড়ান। এ সময় তত্ত্বাবধায়েকের টেবিলের ওপরে থাকা ল্যাপটপ ভাঙচুর করে ডা. মাসুদ পারভেজকে মারার উদ্দেশ্যে তেড়ে যান। এ সময় উপস্থিত কয়েকজন চিকিৎসক তাদের থামান।

অভিযোগের বিষয়ে কনসালটেন্ট ডা. আহসান হাবিব বলেন, ‘‘দুই বছর আগে আমার পদোন্নতি হয়েছে। আমার যতটুকু সম্মান প্রাপ্য, তা দেয়া হচ্ছিল না। এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে গেলে তত্ত্বাবধায়ক নেগেটিভলি উত্তর দেন। আজকেও কিছু অভিযোগ নিয়ে তত্ত্বাবধায়কের কাছে গিয়েছিলাম। তিনি কোনো সদুত্তর দেননি। আমি ধৈর্য্য হারিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনা ঘটিয়েছি।’’ 

আরো পড়ুন:

চিকিৎসাদলকে সংবর্ধনা

চরফ্যাশনে ১০ হাজার মানুষের চোখের চিকিৎসা

প্রাপ্য সম্মানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আমার নামে কোনো চেম্বার নেই। নেমপ্লেট নেই। আমার গেটে পর্যাপ্ত লোক নেই। অথচ আমার পাশের ঘরের এক চিকিৎসকের ঘরের সামনে ৪-৫ জন লোক আছে। আমার কোনো অভিযোগের সুরাহা হয় না। আমাকে অবহেলা করা হয়।’’ 

মারধরের চেষ্টার অভিযোগে তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘‘সকাল বেলা আহসান হাবিব আমার রুমে এসে অভিযোগ করেন তিনি না-কি রোগী পাচ্ছেন না। তার অভিযোগকে কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সুরাহার জন্য আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে বলেছি। তার কিছুক্ষণ পরে আমার কাছে এসে একই অভিযোগ করেন ডা. আহসান হাবিব। তখনো তাকে বিষয়গুলো ভালোভাবে বুঝিয়েছি। কথা বলার একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে আমার সঙ্গে তর্কাতর্কি করেন তিনি। আমার টেবিলের ওপরে থাকা ল্যাপটপ ভাঙচুর করেন। ভাঙা ল্যাপটপ দিয়ে আমাকে আঘাতের চেষ্টা করেন। উপস্থিত আরএমওসহ কয়েকজন চিকিৎসক তাকে থামিয়ে আলাদা ঘরে পাঠান।’’ এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মতিউর রহমান জানান, হাসপাতালের ঘটনা জানতে পেরে পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়েছিল। সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কিছু আইনি বিষয় আছে। এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্টদের অনুমতি সাপেক্ষে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ঢাকা/শিয়াম/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহস ন হ ব ব চ ক ৎসক

এছাড়াও পড়ুন:

ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু আলোচনা পুনরায় শুরু করার আহ্বান এরদোয়ানের

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গে বৈঠকে বলেছেন, তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনা পুনরায় শুরু করাই বর্তমান সংঘাত নিরসনের একমাত্র পথ।

আলজাজিরা লিখেছে, শনিবার (২১ জুন) ইস্তাম্বুলে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সম্মেলনের ফাঁকে এরদোয়ান এই বৈঠক করেন। তার দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, তুর্কি নেতা বলেছেন ইসরায়েলকে ‘অবিলম্বে থামাতে হবে’।

এরদোয়ান আরো বলেন, পারমাণবিক আলোচনা পুনরায় শুরু করতে তুরস্ক একটি মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রযুক্তিগত ও শীর্ষ পর্যায়ের আলোচনার মাধ্যমে কূটনৈতিক পথ খুলে দেওয়ার জন্য যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।”

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলে ডজন ডজন ড্রোন ছোড়া হয়েছে: ইরান

মাখোঁ-পেজেশকিয়ান ফোনালাপ, পারমাণবিক আলোচনায় জোর

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান বলেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার নেতৃত্বাধীন সরকারই আঞ্চলিক শান্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা। 

তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) কূটনীতিদের সম্মেলন চলছে, যেখানে শনিবার (২১ জুন) বক্তব্য দেন এরদোয়ান। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এই সম্মেলনে ওআইসি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

এই বৈঠকে আগে ওআইসির সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে এরদোয়ান বলেন, ইরানের ওপর ইসরায়েলের হামলার উদ্দেশ্য ছিল ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে চলমান পারমাণবিক আলোচনাকে ব্যাহত করা।

তিনি বলেন, “এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, নেতানিয়াহু ও তার সরকার কোনো সমস্যার কূটনৈতিক সমাধান চান না।”

এরদোয়ান আরো বলেন, “নেতানিয়াহুর জায়নবাদী বাসনা শুধু আমাদের অঞ্চলকেই নয়, বরং পুরো বিশ্বকে এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিতে চায়।”

তিনি মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের প্রস্তাবনার ভিত্তিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।

১৩ জুন ভোরে ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তারপর পাল্টা হামলায় নামে ইরান। উভয় দেশ হামলা ও পাল্টা হামলা চালিয়েছে। 

ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির খুব কাছে পৌঁছে গেছে বলে অভিযোগ তুলে দেশটিতে নজিরবিহীন হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল; যেখানে আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা বলছে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর কাছাকাছি পৌঁছানোর কোনো প্রমাণ তাদের কাছে নেই।

ইরাকে রাসায়নিক অস্ত্রভাণ্ডার আছে বলে অভিযোগে ২০০৩ সালে হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। যদিও তেমন কোনো অস্ত্রই ছিল না ইরাকে। এবার যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে ইসরায়েল ইরাক মডেলে ইরানে হামলা চালাচ্ছে, যার কোনো ভিত্তিই নেই।

ইরানি সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ লিখেছে, জায়নবাদী শাসন ১৩ জুন ইরানের বিরুদ্ধে একটি উস্কানিমূলক আগ্রাসী যুদ্ধ শুরু করে। তারা ইরানের পারমাণবিক, সামরিক ও আবাসিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়, যার ফলে অনেক শীর্ষ সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক নিহত হন।

ইরানি সামরিক বাহিনী তাত্ক্ষণিকভাবে পাল্টা হামলা শুরু করে। ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনীর মহাকাশ বিভাগ ২১ জুন পর্যন্ত ‘ট্রু প্রমিজ থ্রি’ (সত্য প্রতিশ্রুতি-৩) অভিযানের অংশ হিসেবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দফায় দফায় পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ