কোনো কমিশনের প্রস্তাব বাতিল করার বিপক্ষে বাসদ (মার্ক্সবাদী)
Published: 3rd, May 2025 GMT
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিলের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রকে সংবিধানের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করার যুক্তি অস্পষ্ট এবং বিভ্রান্তিকর বলে মনে করছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী)। পাশাপাশি কোনো কমিশনের প্রস্তাব বাতিল করার বিপক্ষে দলটি।
দলটির প্রধান সমন্বয়ক মাসুদ রানা বলেন, সংবিধানের মূলনীতি হিসেবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্রকে যুক্ত করার প্রস্তাব দিলেও জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্রকে বাদ দেওয়ার পেছনে পরিষ্কার যুক্তি নেই।
আজ শনিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে দলটির প্রধান সমন্বয়ক মাসুদ রানা এ কথাগুলো বলেন।
সংবিধান ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার নিয়ে লিখিত মতামত দেওয়ার কথা জানিয়ে মাসুদ রানা বলেন, ‘এখানে অনেক বিষয় আমাদের কাছে যথার্থ মনে হয়নি, আরও ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতে হবে। মতপার্থক্য যে জায়গাগুলোতে আছে, আমরা যদি ধৈর্যসহকারে আলাপ-আলোচনা করতে পারি, সেই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে হয়তো আমরা একমত হতে পারব। গণ-অভ্যুত্থানের মূল যে আকাঙ্ক্ষা, একটা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ, একটা বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, আমরা তা করতে চাই।’
কমিশনের প্রতিবেদনে পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক শোষণের প্রসঙ্গ এবং ১৯৭২ সালের সংবিধানে ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাপের ভূমিকা উপেক্ষিত বলে তিনি অভিযোগ করেন।
কোনো কমিশনের প্রস্তাব বাতিল করার বিপক্ষে জানিয়ে মাসুদ রানা বলেন, ‘আমরা দেখছি বাতিল করার একটা প্রবণতা আছে। নারী সংস্কার কমিশন সেটা বাতিল করে দাও। আমরা মনে করি, এটা অভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থী। আমরা ঠিক-বেঠিক নিয়ে আলোচনা করব।’ বাংলাদেশে বহুদিন পরে একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ আনতে আমাদের কণ্ঠস্বর আরও জোরালো করা দরকার। আমরা কোনো কিছুকে বাতিল করে দেব না, মত-দ্বিমত সেগুলো রাখব, যেকোনো কমিশনের ক্ষেত্রেই।’
মাসুদ রানা বলেন, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা আধুনিক সংবিধানের অপরিহার্য উপাদান। একই সঙ্গে তিনি বিচারব্যবস্থার কার্যকারিতা, প্রশাসন, আইনসভা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ওপর জোর দেন।
দলটি সংসদের মেয়াদ চার বছর করার পক্ষে। পাশাপাশি দলটি একজন ব্যক্তি টানা দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান হতে না পারার প্রস্তাব দিয়েছে এবং সংবিধান সংশোধনে গণভোটের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেছে।
১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মাসুদ রানার নেতৃত্বে সংলাপে অংশ নেয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র প রস ত ব ব ত ল কর র
এছাড়াও পড়ুন:
ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ ঠেকাতে অবশ্য সচেতন থাকতে হবে
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “এই বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ ও চরমপন্থার উত্থান কিংবা পুনর্বাসন ঠেকাতে শিক্ষার্থীদেরকে অবশ্য সচেতন থাকতে হবে এবং সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে।”
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রবিবার (৩ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে ছাত্রদল আয়োজিত এক সমাবেশে ভার্চুয়ালি বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, “মনে রাখবে, যদি তোমরা আগামী দিন সাহস ও সততার সঙ্গে এগিয়ে যাও, তাহলে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ তোমাদের সঙ্গে আছে, ইনশাল্লাহ তোমাদের সঙ্গে ভবিষ্যতেও তারা থাকবে। মনে রাখবে, বাংলাদেশের জনগণই বিএনপি, তথা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তির সব রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস।”
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশে বিভক্তি সৃষ্টি করার অনেক চেষ্টা হচ্ছে: ফখরুল
কোনোদিনই শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ দেব না: ফখরুল
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “এই মুহূর্তে আমার সামনে উপস্থিত ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় লাখো লাখো মুখ, তোমরাই আগামী দিনের বাংলাদেশ।ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে তোমরাই প্রতিষ্ঠিত করবে নিজেদের অধিকার। আজকে প্রবীণ যারা, তাদের অভিজ্ঞতা, পরামর্শ আর তোমাদের বিচক্ষণ ও বুদ্ধিদীপ্ত ভূমিকায় নির্মিত হবে ইনশাল্লাহ আগামী দিনের বাংলাদেশ, লাখো শহীদের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ।”
তারেক রহমান বলেন, “দেড় দশকের ফ্যাসবাদবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদলের হাজার হাজার নেতাকর্মী হতাহত হয়েছে।মামলা, হামলা, জেল-জুলুম, নির্যাতন, খুন, গুম, অপহরণের শিকার হয়েছে ছাত্রদলের হাজার হাজার নেতাকর্মী। শুধু এই জুলাই গণঅভ্যুত্থানেই চট্টগ্রামের ছাত্রদলনেতা ওয়াসিমসহ শতাধিক নেতাকর্মী শহীদ হয়েছে আমাদের, আহত হয়েছে হাজার হাজার। গণঅভ্যুত্থানের সময় শুধু ছাত্রদলেরই দুই হাজারের বেশি নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে।”
তারেক রহমান আরো বলেন, “পলাতক পরাজিত স্বৈরাচার নিষ্ঠুর নির্মমতা চালিয়েও ছাত্রদলের অগ্রযাত্রা দমিয়ে রাখতে পারে নাই। আজকের এই লাখো ছাত্র-ছাত্রী, জনতার সমাবেশ আজকে আবারও সেটি প্রমাণ করে দিয়েছে। একটি কথা তোমরা সবাই মনে রাখবে, যদি তোমরা আগামী দিন সয়াহস ও সততার সঙ্গে এগিয়ে যাও, তাহলে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ তোমাদের সঙ্গে আছে, ইনশাল্লাহ তোমাদের সঙ্গে ভবিষ্যতেও তারা থাকবে। মনে রাখবে, বাংলাদেশের জনগণই বিএনপির তথা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তির সব রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সঞ্চালনা করছেন সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাসির।
ঢাকা/রায়হান/সাইফ