বেতন ভাতার দাবিতে সিলেট এয়ারপোর্ট সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন চা শ্রমিকরা। রবিবার (৪ মে) দুপুর ১টার দিকে তারা সড়ক অবরোধ করেন। বিকেল ৩টায় প্রশাসনের আশ্বাসে সড়ক থেকে সরে যান শ্রমিকরা। 

চা শ্রমিকদের ভাষ্য, গত ২০ সপ্তাহ ধরে তারা বেতন পাচ্ছেন না। এ কারণে কয়েকটি বাগানের কয়েক হাজার শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বাধ্য হয়েই তাদের আন্দোলনে নামতে হয়েছে।  

সিলেটের বুরজান চা-কোম্পানির অধীন তিনটি চা বাগান বুরজান, ছড়াগাঙ, কালাগুল ও বুরজান কারখানার শ্রমিকদের ২০ সপ্তাহের বেতন বকেয়া রয়েছে। এসব কারখানার শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে যোগ দেন।  এসময় তাদের হাতে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল। এসব প্ল্যাকার্ডে ‘বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে হবে’, ‘বকেয়া বোনাস পরিশোধ করতে হবে’ লেখা স্লোগান ছিল।

আরো পড়ুন:

গোপালগঞ্জে ভবন থেকে পড়ে রাজমিস্ত্রির মৃত্যু

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি: নিহতদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বালন

আজ দুপুর থেকে শুরু হওয়া অবরোধের ফলে বিমানবন্দর সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন।

চা শ্রমিক নেতা অজিত রায় বলেন, “প্রায় ২০ সপ্তাহ ধরে আমাদের বেতন বন্ধ, রেশন বন্ধ। আমাদের একটাই কথা, আমাদের সমস্যা সমাধান করতে হবে। অন্যথায় আমরা রাস্তা ছাড়ব না। আপনারা আমাদেরকে রাস্তায় নামিয়েছেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে জানিয়ে আসছি আমাদের সমস্যাগুলো। কারো কোনো পদক্ষেপ নেই।” 

তিনি আরো বলেন, “বকেয়া পরিশোধের আশ্বাস লিখিতভাবে না দিলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”

ঘটনাস্থলে এসে সিলেট সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোশনূর রুবাইয়্যাৎ বলেন, “আমরা আপনাদের সমস্যা সমাধানে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বকেয়া বেতনসহ যা দাবি আছে, আপনাদের যে সমস্যাগুলো আছে তা যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে দূর হয় তার জন্য আমরা কাজ করছি।”  

লিখিত আকারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিঠি দাবির বিষয়ে ইউএনও বলেন, “আপনারা অনেকদিন ধৈর্য ধারণ করেছেন। আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী আজকেই আমরা লিখিতভাবে জানাব যে কবে আমরা এ সমস্যা সমাধান করতে পারব।”

এদিকে, লিখিত প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর চা শ্রমিকদের পাঁচ প্রতিনিধি উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ে যান। এসময় বাকি শ্রমিকরা দুপুর ৩টার দিকে সড়কের অবরোধ প্রত্যাহার করে পার্শ্ববর্তী মালনীছড়া চা বাগানে গিয়ে অবস্থান নেন।

ইউএনও খোশনূর রুবাইয়্যাৎ বলেন, “আমরা দ্রত সময়ে চা শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানের লিখিত আশ্বাস দিয়েছি। পরে চা শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেন।”

ঢাকা/নূর/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবর ধ দ র সমস য আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

হাতীবান্ধা উপজেলা জামায়াতের আমিরকে ইউএনওর শোকজ, দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ও হাতীবান্ধা মডেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাছেন আলীর বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তাঁকে বৃহস্পতিবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন হাতীবান্ধার ইউএনও শামীম মিঞা।

এদিকে হাছেন আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার বিষয়টি জানাজানির পরপরই গত বৃহস্পতিবার রাতে হাছেন আলীকে উপজেলা জামায়াতের আমিরের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে দলটি।

কলেজ সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১৩ মে হাছেন আলী হাতীবান্ধা মডেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান। পরে তিনি কয়েকজনের নিয়োগ দেখিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে ১৩টি ফাইল পাঠিয়ে সেগুলোর অনুমোদন করিয়ে আনেন। এসব ফাইলে কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হাতীবান্ধার ইউএনওর স্বাক্ষর স্ক্যান করে ব্যবহার করা হয়।

এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার হাছেন আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠান হাতীবান্ধার ইউএনও। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাঁকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

হাতীবান্ধার ইউএনও শামীম মিঞা সাংবাদিকদের বলেন, তিনি স্বাক্ষর করেননি। তাঁর স্বাক্ষর স্ক্যান করে কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। সে কারণেই এটাকে জাল বলাই যায়। তিনি বলেন, কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাছেন আলীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে দলীয় সূত্র জানায়, হাছেন আলীকে কারণ দর্শনোর নোটিশ দেওয়ার পরপরই হাতীবান্ধা উপজেলা জামায়াতের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে জরুরি বৈঠক হয়। বৈঠকে তাঁকে উপজেলা জামায়াতের আমিরের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি রফিকুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত আমিরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

লালমনিরহাট জেলা জামায়াতের আমির আবু তাহের উপজেলা জামায়াতের আমির হাছেন আলীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কী কারণে তাঁকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিয়মিত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সদর উপজেলার নতুন ইউএনও তাছলিমা শিরিন, পদোন্নতি পেলেন সাদিক
  • হাতীবান্ধা উপজেলা জামায়াতের আমিরকে ইউএনওর শোকজ, দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি
  • ইউএনওর স্বাক্ষর জাল করে শিক্ষক নিয়োগের চেষ্টা, জামায়াতের পদ থেকে অব্যাহতি