পবিত্র রমজান ও ঈদের পর দেশে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) আসা কমেছে। এরপরও সদ্য সমাপ্ত এপ্রিলে প্রবাসীরা ২৭৫ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার পাঠিয়েছেন, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৪ শতাংশ বেশি। গত বছরের এপ্রিলে আয় এসেছিল ২০৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে প্রবাসী আয়ের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে আয় এসেছে ২ হাজার ৪৫৩ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরে জুলাই-এপ্রিল সময়ে আয় এসেছিল ১ হাজার ৯১১ কোটি ডলার।

রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত মার্চ মাসে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। মার্চ মাসে প্রবাসীরা ৩২৯ কোটি ডলার পাঠান, যা একক মাস হিসেবে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। গত বছরের মার্চে এসেছিল ১৯৯ কোটি ডলার। আগের বছরের মার্চের তুলনায় এবার একই মাসে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয় ৬৪ শতাংশ। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৫২ কোটি ডলার।

ফলে মার্চ মাসে প্রবাসী আয়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়। ব্যাংকাররা বলছেন, মূলত অর্থ পাচার কমে আসায় প্রবাসীরা এখন তাঁদের আয় পাঠাতে বৈধ পথকেই বেছে নিচ্ছেন।

প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাংকগুলোয় ডলারের যে সংকট চলছিল, তা অনেকটা কেটে গেছে বলে জানান কর্মকর্তারা। তাঁরা বলেন, ডলারের দাম নিয়ে যে অস্থিরতা ছিল, তা-ও কিছুটা কমে এসেছে। ব্যাংকগুলো এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ ১২৩ টাকার মধ্যেই প্রবাসী আয় কিনছে। এদিকে খোলাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ১২৪ টাকা ৩০ পয়সার মধ্যে।

দেশে গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর টানা ৭ মাস ধরে প্রতি মাসে ২০০ কোটি ডলারের বেশি পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ফেব্রুয়ারিতে তাঁরা পাঠান ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি। এর আগে জানুয়ারিতে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবাসী আয় ৩ শতাংশ বেশি আসে।

প্রবাসী আয় হলো দেশে মার্কিন ডলার জোগানের একমাত্র দায়বিহীন উৎস। কারণ, এই আয়ের বিপরীতে কোনো বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয় না বা কোনো দায় পরিশোধ করার দরকার পড়ে না। অন্যদিকে রপ্তানি আয়ের বিপরীতে দেশে ডলার এলেও তার জন্য কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে আবার বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয়। আবার বিদেশি ঋণ পরিশোধেও ডলারের প্রয়োজন হয়। সার্বিকভাবে প্রবাসী আয় বাড়লে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ডলারের রিজার্ভ বা মজুত দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বছর র একই সময় র গত বছর র প রব স র এস ছ ল

এছাড়াও পড়ুন:

৪ ট্রিলিয়ন ডলারের ক্লাবে মাইক্রোসফট

প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পর প্রথমবারের মতো চার ট্রিলিয়ন (১ ট্রিলিয়ন = ১০০০ বিলিয়ন) ডলারের বাজারমূল্যে পৌঁছেছে মাইক্রোসফট। গতকাল শুক্রবার কোম্পানিটির শেয়ারের দরের ঊর্ধ্বগতিতে এই মাইলফলকে পৌঁছায় বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি। চলতি মাসের শুরুতে প্রথমবারের মতো চার ট্রিলিয়ন ডলার বাজারমূল্য স্পর্শ করে চিপ নির্মাতা এনভিডিয়া। মাইক্রোসফট এখন সেই ক্লাবের দ্বিতীয় সদস্য।

গত বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ২০২৫ অর্থবছরে আজুর থেকে আয় হয়েছে ৭ হাজার ৫০০ ডলারের বেশি। এই ঘোষণা আসার পরপরই মাইক্রোসফটের শেয়ারের দাম বাড়তে শুরু করে। গতকাল লেনদেনে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম প্রায় ৪ শতাংশ বেড়েছে। এর ফলে মাইক্রোসফট চার ট্রিলিয়ন ডলারের বাজারমূল্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

গত এক দশকে ক্লাউড কম্পিউটিং খাতে বিপুল বিনিয়োগ করেছে মাইক্রোসফট। এরই ফল আজুরের এই সাফল্য। রাজস্বের দিক দিয়ে আজুর এখন গুগল ক্লাউডকে ছাড়িয়ে গেছে। যদিও এখনো অ্যামাজনের ওয়েব সার্ভিসেসের (এডব্লিউএস) পরেই অবস্থান করছে। আজুর এখন মাইক্রোসফটের প্রায় সব খাতে কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। চ্যাটজিপিটিসহ বিভিন্ন এআই প্রকল্প, অফিস সফটওয়্যার, উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম, গেমিং প্ল্যাটফর্ম এক্সবক্সসহ নানা সেবার পেছনে রয়েছে এই ক্লাউড অবকাঠামো।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও ভবিষ্যতের কম্পিউটিং প্রযুক্তির প্রয়োজন মেটাতে যে সক্ষমতা গড়ে তোলা দরকার, তাতে নিজেদেরকে অনেকটাই প্রস্তুত করে ফেলেছে মাইক্রোসফট। চলতি বছরের শুরুতে ১০০ বিলিয়ন ডলারের ‘স্টারগেট প্রকল্প’ নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সত্য নাদেলা সে সময় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছিলেন, ‘আমি আমার ৮০ বিলিয়নের জন্য প্রস্তুত।’

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা অ্যামি হুড জানিয়েছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক অবকাঠামো নির্মাণে পরবর্তী প্রান্তিকেই আরও ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে মাইক্রোসফটের। এই গতিতে বিনিয়োগ চলতে থাকলে ২০২৬ অর্থবছরে কেবল ক্লাউড ও এআই খাতেই কোম্পানিটির ব্যয় ১২ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

সূত্র: দ্য ভার্জ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাইয়ে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ২৫%
  • জুলাই মাসে প্রবাসী আয় বেড়েছে ২৯%
  • জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছে ২৪৮ কোটি ডলার
  • ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের ক্লাবে মাইক্রোসফট