বন্দরে নিউ আইরিন নামীয় ভেরাইটিজ ষ্টোরে চুরির ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় দোকান মালিক তাওলাদ হোসেন বাদী হয়ে সোমবার (৫ মে) দুপুরে অজ্ঞাত নামা আসামী করে বন্দর থানায় এ মামলা দায়ের করেন তিনি। যার মামলা নং- ৫(৫)২৫।

এর আগে সোমবার (৫ মে) রাত ১টা হইতে সকাল ৮টা মধ্যে যে কোন সময়ে  বন্দর থানার চৌরাপাড়াস্থ লক্ষনখোলা এলাকায় উল্লেখিত দোকানে এ চুরি ঘটনাটি ঘটে।

ওই সময় অজ্ঞাত নামা চোরের দল ভিতরে প্রবেশ করে দোকানে থাকা বিভিন্ন দামি ব্যান্ডের পন্য ও সিগারেট যাহার আনুমানিক মূল্য ২ লাখ  টাকা ও দোকানের ক্যাশবাক্সে রক্ষিত নগদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং  মাটির ব্যাংক ভেঙ্গে নগদ অনুমানিক ১৫ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ৪ লাখ ৬৫ হাজার  টাকা মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়।

মামলার তথ্য সূত্রে জানা গেছে, বন্দর থানার চৌরাপাড়াস্থ লক্ষনখোলা এলাকার মৃত দাদম বেপারী ছেলে তাওলাদ মিয়া উল্লেখিত এলাকায় নিউ আইরিন ষ্টোর নামীয় একটি ভেরাইটিজ দোকান রয়েছে।  প্রতিদিনের ন্যায় সোমবার  (৫ মে) রাত ১টায় দোকানী তাওলাদ হোসেন দোকানে  তালা বন্ধ করে  বাসায় ঘুমাতে যায়।

পরবর্তীতে একই দিন সকাল ৮টায় দোকানী তাওলাদ হোসেন  দোকানে গিয়ে দেখতে পায় দোকানের টিনের চাল খোলা। তখন দোকানের তালা খুলে দোকানে প্রবেশ করে দেখতে পায় দোকানে থাকা বিভিন্ন দামি ব্যান্ডের পন্য, সিগারেট, ক্যাশবক্স থেকে নগদ টাকা এবং জমানো মাটির ব্যাংক ভেঙ্গে নগদ টাকাসহ সর্বমোট ৪,৬৫,০০০/- টাকা চুরি করে নিয়া যায় অজ্ঞাত চোরের দল।

দোকান মালিক তাওলাদ হোসেন আরো জানান, বন্দর থানার চৌরাপাড়া লক্ষনখোলা এলাকার তাইজুল ইসলামের ছেলে রাসু একই এলাকার মৃত আউয়াল মিস্ত্রি ছেলে আনু, মৃত আবুল মতিন মিয়ার ছেলে হাসান, আব্দুল খালেক মিয়ার ছেলে নূর ইসলাম ও একই এলাকার মৃত আলী আকবর মিয়ার ছেলে  আল আমিন  দীর্ঘ দিন ধরে আশেপাশের এলাকায় একাধিকবার  চুরি করে হাতেনাতে ধরা পরে।

আামার সন্দেহ তাহারা আমার দোকানে উক্ত চুরির ঘটনার সহিত জড়িত থাকতে পারে। এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা জানান, দোকানে চুরি ঘটনায় নূর ইসলাম ও আল আমিনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। চোরাইকৃত মালামাল উদ্ধারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যহত রয়েছে।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ এল ক র ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

রাজুতে ফাঁসির মঞ্চের প্রতিকৃতিটি ‘শেখ হাসিনার’, ‘জাগ্রত জুলাইয়ের’ ছয় দফা ঘোষণা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে ফাঁসির মঞ্চের প্রতিকৃতিটি ‘শেখ হাসিনার’ এবং কিছু গণমাধ্যম এ ঘটনাকে ‘নারীর প্রতি ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ’ হিসেবে ‘ভুলভাবে’ উপস্থাপন করে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে উল্লেখ করে সমাবেশ করেছে ‘জাগ্রত জুলাই’ নামের একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ প্রতিবাদ সমাবেশ  হয়।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে বিচারের দাবি জানায় সংগঠনটি। এর আগে ১ মে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার ফাঁসির মঞ্চের প্রতিকৃতি’ স্থাপনের বিষয়ে সংগঠনটি তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে। তারা বলেছে, এটি ছিল একটি সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ কর্মসূচি, যার মাধ্যমে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী অপরাধের বিচার দাবি করা হয়েছে।

তবে ৩ মে কিছু গণমাধ্যম এই প্রতিবাদ কর্মসূচিকে ‘নারীর প্রতি ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ’ হিসেবে প্রচার করলে সংগঠনটি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।

এ বিষয়ে সোমবার সমাবেশে ‘জাগ্রত জুলাই’–এর সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আশরাফ আল দীন বলেন, ‘এই প্রতিবাদ ছিল নিরপেক্ষ সাংস্কৃতিক ভাষ্য। একে বিকৃত করে নারীবিদ্বেষ হিসেবে উপস্থাপন করা সাংবাদিকতার নৈতিক অবক্ষয়ের পরিচায়ক।’

সংগঠনের সহসভাপতি কবি আবিদ আজম বলেন, ‘শহীদদের তালিকা নিরূপণ ও আহতদের চিকিৎসায় ব্যর্থ এই সরকার শেখ হাসিনার বিচারও নিশ্চিত করতে পারেনি। তাই আমরা প্রতীকী ফাঁসির কুশপুত্তলিকা রাজু ভাস্কর্যের নিচে ঝুলিয়েছিলাম। শেখ হাসিনা জাতিসংঘ ঘোষিত গণহত্যাকারী, পিশাচ ও ডাইনি— সেই বিবেচনায় প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়। কিন্তু একে নারীবিদ্বেষ বলে প্রচার করেছে ফ্যাসিস্ট বাহিনী ও এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন খবরের কাগজ।’

আবিদ আজম আরও বলেন, ‘জুলাইতে নারীদের ব্যবহার করে আমাদের আন্দোলনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা হয়েছে। আওয়ামীপন্থী আমলারা এখনো সচিবালয়ে সক্রিয় রয়েছে। আমরা সম্প্রতি আমাদের সদস্য হাসনাতের ওপর হামলার নিন্দা জানাই এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের বিচার দাবি করি। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যর্থতা নিয়েও প্রশ্ন তুলি।’

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ (বোরহান) বলেন, ‘জাগ্রত জুলাই কোনো রাজনৈতিক বা ধর্মীয় সংগঠন নয়। আমাদের ১ মের কর্মসূচি ছিল একনায়কতন্ত্রবিরোধী, হেফাজতের ৩ মের কর্মসূচির সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। কিছু গণমাধ্যম উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের কর্মসূচিকে বিকৃত করেছে।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাফেজ আকরাম হোসেন বলেন, ‘গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আমাদের জঙ্গি, নারীবিরোধী বলে প্রচার করা হয়েছিল। অথচ শেখ হাসিনার একমাত্র পরিচয় সে একজন খুনি। আজ নারী নেত্রীদের ছবি ছড়িয়ে দিয়ে আওয়ামী কর্মীরা নারীদের চরিত্র হননের চেষ্টা করছে।’

সভায় আরও বক্তব্য দেন কবি জুনমুরাইন, কবি রফিক লিটন, সহসাধারণ সম্পাদক হাসনাইন ইকবাল, নাট্যকার হুসনে মোবারক, কবি তাজ ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজ সাইফুল্লাহ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আল নাহিয়ান, কবি রহমান মাজিদ ও সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক কবি লোকমান হোসেন জীবন প্রমুখ।

সমাবেশে বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রচারের বিরুদ্ধে সংগঠনটি ছয় দফা দাবি ঘোষণা করে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচারকারী গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ; পিলখানা, শাপলা চত্বর ও জুলাই গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া শুরু; ‘জুলাই বিপ্লব’–এর ঘোষণাপত্র প্রকাশ ও বিপ্লবকালীন কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি প্রদান; আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ; ফ্যাসিবাদের সহযোগী গণমাধ্যমকে বিচারের আওতায় আনা এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসরদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা।

সংগঠনটি জানায়, তারা তাদের সাংস্কৃতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ