‘শ্রমিকদের জন্য শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে সরকার বদ্ধপরিকর’
Published: 5th, May 2025 GMT
শ্রমিকদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় সরকার অটল অবস্থানের কথা তুলে ধরে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, সব খাতের শ্রমিকদের জন্য শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে তার মন্ত্রণালয় বদ্ধপরিকর।
সোমবার (৫ মে) ঢাকায় বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ কনভেনশন সেন্টারে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা- আইএলও, বাংলাদেশ বিজনেস অ্যান্ড ডিজেবিলিটি নেটওয়ার্ক ও বহ্নিশিখা যৌথভাবে শ্রম দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে এই জাতীয় সংলাপ আয়োজন করে। এতে শ্রমবাজারে অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। কর্মস্থলে সহিষ্ণুতা ও পরিবর্তনের কণ্ঠস্বরকে স্বাগত জানানো হয়।
‘বিল্ডিং বেটার ফিউচার: সেলিব্রেটিং ভয়েসেস অব রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড চেঞ্জ ফর ওয়ার্কপ্লেস ইনক্লুশন’ শিরোনামে আলোচনা সভাটি হয়।
আরো পড়ুন:
সামাজিক-অর্থনেতিক ন্যায় প্রতিষ্ঠায় অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসংস্থান নীতিতে জোর
সিলেটে এয়ারপোর্ট সড়ক অবরোধ করে চা-শ্রমিকদের বিক্ষোভ
সেখানে উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “গত ৪০ বছর ধরে বাংলাদেশে শিল্পায়ন হলেও তৈরি পোশাক ছাড়া অন্য খাতের বিকাশ সীমিত। বড় নির্মাণ কোম্পানিগুলো যদি শ্রম আইন মেনে কেন্দ্রীয় তহবিলে লভ্যাংশ জমা না দেয়, তাহলে তারা সরকারি ক্রয় থেকে বাদ পড়বে।”
“এ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরীর সকল হোটেল, রেস্টুরেন্ট, শপিং মল ও সুপার শপকে শ্রম আইন ২০০৬-এর আওতায় বাধ্যতামূলকভাবে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনা হবে,” বলেন তিনি।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, “ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্লোবাল ইউনিয়নের সঙ্গে বৈঠকে কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামের মতো বাংলাদেশি পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে ব্র্যান্ড ও ক্রেতাদের প্রতি আহ্বান রাখা হয়েছে। শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা (ওএসএইচ) নিশ্চিত করে এবং অনানুষ্ঠানিক খাত ও কর্মক্ষেত্রে নারী শ্রমিকদের সুরক্ষার ব্যবস্থা রেখে শ্রম আইন সংশোধন করা হবে।
সভায় অংশ নেন সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, শ্রম সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, আইএলও কান্ট্রি ডিরেক্টর তুমো পুটিয়ানিন, বিবিডিএন ও বহ্নিশিখার পরিচালক এবং বিভিন্ন খাতের উদ্যোক্তারা।
সভার একাংশে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য শোনেন অতিথিরা।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নভেম্বর মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন: সাখাওয়াত
শিশু শ্রমের শাস্তি বাড়িয়ে আগামী নভেম্বর মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন।
বুধবার (১৮ জুন) বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশের পরিসংখ্যান কতটা বিশ্বাসযোগ্য আমি জানি না। তবে, বর্তমান সংজ্ঞা অনুযায়ী শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ৩৫ লাখ। ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে রয়েছে ১০ লাখ শিশু। এখান থেকে কীভাবে কমানো যায়, সেটা দেখছি। আর সংজ্ঞাটার কি হবে?”
আরো পড়ুন:
পুনরায় ভিসা কার্যক্রম চালু করায় অস্ট্রেলিয়াকে ধন্যবাদ জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনে কারো দ্বিমত নেই: উপদেষ্টা
তিনি বলেন, “অনেকে বাপের সঙ্গে মাছ ধরতে যায়। আবার সে স্কুলেও যায়। এগুলোর কি হবে? অনেক পরিবার কাজের জন্য শিশুকে পাঠায় ওস্তাদের সঙ্গে কাজ করার জন্য, পরে সে নিজেই মেকানিক হয়ে যায়। আমি অনুরোধ করব, জোর করে কাউকে পাঠাবেন না। বাচ্চারা স্কুল টাইম শেষ করে যদি ভলান্টিয়ারি কোনো কাজ করে সেটা হয়তো আমরা অন্যরকমভাবে দেখব। জোর করে কাউকে (শিশু) কাজে পাঠানো যাবে না, এটা দণ্ডনীয় অপরাধ।”
সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ১১তম সম্মেলনে যোগ দেওয়ার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, “শ্রমিকদের আইনগুলো শ্রমিকবান্ধব করার চেষ্টা করছি- সেখানে এটা শ্রমিক ও মালিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে আমরাও বলেছি। আমরা সবাই এক সুরে কথা বলেছি। এটা ছিল বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পাওনা।”
“আমি আইএলও ডিজিসহ অনেকে সঙ্গে কথা বলেছি। সবাই বাংলাদেশের এখন যে অগ্রগতি হচ্ছে এটা নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট। আমাদের যাওয়ার আগে এগুলো শেষ করতে হব”, যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আইএলও-তে এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপভুক্ত (এএসপিএজি) দেশগুলোর সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছে বলেও জানান সাখাওয়াত হোসেন।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে প্রতিবছর ১২ জুন বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস পালন করা হয়। এ বছর ১২ জুন সরকারি ছুটি থাকায় ১৯ জুন দিবসটি উদযাপন করা হবে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হলো- ‘স্বপ্নের ডানায় ভর করি, শিশু শ্রমের শৃঙ্খল ছিড়ি- এগিয়ে চলি দীপ্ত পায়ে, আশার আগুন বুকে জ্বালি’।
আইএলও শ্রম আইনের বিভিন্ন স্থানে সংশোধনের কথা বলেছিল- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “আলোচনা হয়নি, তবে তারা জানে আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। আমরা চেষ্টা করছি যাতে আগামী দুই-তিন মাস বা নভেম্বরের মধ্যেই শ্রম আইনের সংশোধনটা কমপ্লিট করতে পারি।”
তিনি বলেন, “শিশু শ্রমের বিষয়ে আমাদের আইনের যে বিধান আছে, এরই মধ্যে সেটার খসড়া করা হয়েছে। সেখানে জরিমানার পরিমাণ কয়েকগুণ বাড়ানো হচ্ছে।”
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মাসুদ