পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের (বিসিপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মাসিক বেতন ও ভাতা প্রায় ১৫ লাখ টাকা। যদিও সরকারি ও যৌথ উদ্যোগে নির্মিত অন্যান্য বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা কেউ মাসে ৫ লাখ টাকার বেশি পান না।
শুধু ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদ নয়, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি পদের কর্মকর্তারা এমন উচ্চ হারে বেতন-ভাতার সুবিধা নিচ্ছেন। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির একেকজন পরিচালক একেকটি বোর্ড সভায় অংশ নিতে ভাতা নিয়েছেন ৫০০ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬০ হাজার টাকা (ডলারপ্রতি ১২০ টাকা ধরে)।
সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য নির্ধারিত একটি বেতনকাঠামো রয়েছে। যৌথ উদ্যোগে নির্মিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতেও সেই কাঠামো অনুসরণ করা হয়। ২০১৬ সালে যখন পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা হয়, তখন সেখানেও একই কাঠামো অনুসরণ করে বেতন ঠিক করা হয়। অবশ্য ২০১৯ সালে এক বোর্ড সভায় শীর্ষ পর্যায়ের পদগুলোয় বেতন অনেকটা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এটি কার্যকর হয় ২০২০ সালে।
ওই সময় ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মূল বেতন (বেসিক) ১ লাখ ৭৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৭ লাখ টাকা। সঙ্গে বাড়িভাড়াসহ বিভিন্ন ভাতা যোগ করে মোট বেতন দাঁড়ায় ১৫ লাখ টাকা। বেতনকাঠামোর দ্বিতীয় ধাপের (গ্রেড) কর্মকর্তাদের মূল বেতন ১ লাখ ৪৯ হাজার থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ভাতাসহ দাঁড়ায় প্রায় ৯ লাখ টাকা।
যদিও মধ্যম পর্যায়ে বেতন বাড়ানো হয় সামান্য হারে। নিম্নপর্যায়ে বেতন মোটেও বাড়েনি।
যদিও সরকারি ও যৌথ উদ্যোগে নির্মিত অন্যান্য বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা কেউ মাসে ৫ লাখ টাকার বেশি পান না।পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র বলছে, এভাবে বেতন-ভাতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে মূল ব্যক্তি ছিলেন বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম। তিনি নিজে যেমন সুবিধা নিয়েছেন, তেমনি নিজের ঘনিষ্ঠদের অতিরিক্ত সুবিধা দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে প্রশ্রয় দিয়েছেন তৎকালীন বিদ্যুৎসচিব আহমদ কায়কাউস, যিনি পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বোর্ড চেয়ারম্যান ছিলেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আহমদ কায়কাউস দেশে না বিদেশে অবস্থান করছেন, তা অস্পষ্ট। ফলে তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
অন্তর্বর্তী সরকার গত মার্চে খোরশেদুল আলমকে সরিয়ে দেয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আন্তর্জাতিক কোম্পানি হিসেবে গড়ে তোলা হয় বিসিপিসিএল। তাই বেতনকাঠামোও ওইভাবে নির্ধারণ করা হয়। অভিজ্ঞতা বিবেচনায় শীর্ষ পদে বেতন বেশি রাখা হয়। তিনি বলেন, বেতন, ভাতা, বোর্ডের বৈঠকসহ সব বিষয়েই সিদ্ধান্ত হয়েছে বোর্ড সভায়। এতে কোনো অনিয়ম হয়নি।
অবশ্য পায়রার কর্মকর্তারাই প্রশ্ন তুলছেন যে শুধু শীর্ষ পদগুলোয় উচ্চ হারে বেতন দিলেই কি কোম্পানি আন্তর্জাতিক মানের হয়।
পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বেতনকাঠামো বলছে, ২০১৯ সালে প্রথম দুই গ্রেডে অস্বাভাবিক বেতন বৃদ্ধি হলেও তৃতীয় থেকে অষ্টম গ্রেড পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে সর্বোচ্চ ২ থেকে ১২ হাজার ২০০ টাকা। গ্রেড যত কম, বেতন বেড়েছে তত কম হারে। আর ৯ম থেকে ১৮তম গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন মোটেও বাড়েনি।
এমনকি নর্থওয়েস্ট থেকে অবসরে যাওয়ার পরও প্রায় আড়াই বছর তিনি বিসিপিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিগত সরকারের আস্থাভাজন ছিলেন তিনি।সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য পায়রা কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। অবশ্য এটির বিদ্যুতের দাম পড়ছে ইউনিটপ্রতি ১২ টাকার আশপাশে। মানুষ সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ পায়নি। কিন্তু কর্মকর্তারা ঠিকই উচ্চ বেতন সুবিধা নিচ্ছেন।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ ও চীনের দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির সমান অংশীদারত্বে গঠিত বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল)। এ প্রতিষ্ঠানের ৫০ শতাংশ করে মালিকানায় আছে দেশের নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড ও চীনের চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন (সিএমসি)।
পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সঙ্গে যুক্ত একাধিক সূত্র বলছে, ২০০৮ সালের ২৪ নভেম্বর নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ পান এ এম খোরশেদুল আলম। তিন দফায় মেয়াদ বৃদ্ধি করে তিনি ২০২৩ সালের ৬ মে পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। একই সঙ্গে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন খোরশেদ। এমনকি নর্থওয়েস্ট থেকে অবসরে যাওয়ার পরও প্রায় আড়াই বছর তিনি বিসিপিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিগত সরকারের আস্থাভাজন ছিলেন তিনি।
কর্মকর্তাদের মধ্যে যাঁরা অন্য কোম্পানির পাশাপাশি পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন, তাঁরা পান মূল বেতনের অর্ধেক। বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক একই রকম সুবিধা পাচ্ছেন।অভিযোগ আছে, চীনের কোম্পানিকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে তাদেরও প্রতিনিধি হয়ে ওঠেন খোরশেদ। নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা নেতৃত্বের প্রশংসা করে গত অক্টোবরে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টাকে চিঠিও দিয়েছিল চীনের কোম্পানি সিএমসি।
বেতনকাঠামোর দ্বিতীয় ধাপের কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি), প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও), প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা (সিএইচআরও), প্রধান কারিগরি কর্মকর্তা (সিটিও) ও প্ল্যান্ট ম্যানেজার। এর মধ্যে তিনটি পদে কখনো কোনো নিয়োগ হয়নি। শুরু থেকেই সিএফও হিসেবে আছেন মো.
এদিকে চীনের কোম্পানি সিএমসির একজন কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে আপাতত পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে আছেন। গত ১০ মার্চ বিসিপিসিএলের বোর্ডের এক আদেশে বলা হয়, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সিএমসি মনোনীত পরিচালক ওয়াং জিং। তাঁর অবর্তমানে একই পদে দায়িত্ব পালন করবেন সিএমসির ভাইস প্রেসিডেন্ট চি ইয়ু। এর পর থেকে মূলত চি ইয়ু দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তবে তিনিও অধিকাংশ সময় চীনে থাকেন বলে কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে।
কর্মকর্তাদের মধ্যে যাঁরা অন্য কোম্পানির পাশাপাশি পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন, তাঁরা পান মূল বেতনের অর্ধেক। বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক একই রকম সুবিধা পাচ্ছেন।
এমনকি বাগেরহাটের রামপালে নির্মিত ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রেও ওই একই বেতনকাঠামো অনুসরণ করে বলে জানা গেছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মিত হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে।অন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রে বেতন কতজানা গেছে, সরকারি ও যৌথ উদ্যোগে কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র হয়েছে। চীন ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত আরেক বিদ্যুৎ কোম্পানি আরপিসিএল-নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার লিমিটেড (আরএনপিএল)। তারা পটুয়াখালীতে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করেছে।
আরপিসিএল ও আরএনপিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সেলিম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি সব বিদ্যুৎ কোম্পানির মতো আরপিসিএল ও আরপিএনএলে একই বেতনকাঠামো বহাল আছে।
এমনকি বাগেরহাটের রামপালে নির্মিত ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রেও ওই একই বেতনকাঠামো অনুসরণ করে বলে জানা গেছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মিত হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে। পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের অংশীদার সরকারি কোম্পানি নর্থওয়েস্টের বেতনও অন্য সবার মতো।
ভাতা কমানো হয়েছেবিসিপিসিএলের চেয়ারম্যান হিসেবে বৈঠকে অংশ নিয়ে উচ্চহারে ভাতাসুবিধা নিয়েছেন আহমেদ কায়কাউসও। ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর তাঁকে বিদ্যুৎসচিব থেকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব করা হয়। তারপরও তিনি বিসিপিসিএল ছাড়েননি।
বিসিপিসিএল সূত্র জানিয়েছে, অনলাইনে বৈঠক করলেও বোর্ড সদস্যদের একেকজনকে ৬০ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হতো। মাসে গড়ে সভা হতো দুটি করে। আবার সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে বোর্ডসভা আয়োজন করা হতো কোম্পানির খরচে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে খরচ কমানোর উদ্যোগ নেয় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। এর অংশ হিসেবে ভাতা কমিয়ে দেওয়া হয়। গত ২০ জানুয়ারি বিদ্যুৎ বিভাগের এক চিঠিতে বলা হয়, পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে বোর্ড পরিচালকেরা সম্মানী ভাতা হিসেবে কর কাটার পর সর্বোচ্চ ১২ হাজার টাকা পাবেন। আর যৌথ নিবন্ধিত কোম্পানির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০০ মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রা নির্ধারণ করার জন্য সব কোম্পানিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
‘বৈষম্যমূলক’পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। এর ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি। আর দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদন শুরু করে একই বছরের ২৬ আগস্ট। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালুর পর এখন পর্যন্ত কেন্দ্রভাড়া বা ক্যাপাসিটি চার্জ নিয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকার বেশি।
ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, দেশের বিদ্যুৎসেবার মান তো আন্তর্জাতিক মানের নয়, তাহলে বেতন কেন সেই পর্যায়ের হবে। সব কেন্দ্রের বেতনকাঠামো সমান হতে হবে। আর বৈষম্যমূলক বেতন-ভাতার নামে যেসব সুবিধা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো অবিলম্বে আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত দ র ম ব স প স এল র ই ব তনক ঠ ম এল র ব পর য য় প রথম একই ব স এমস সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের রেললাইন অবরোধ
স্নাতক কৃষিবিদদের পেশাগত বৈষম্য ও অধিকার হরণের অভিযোগ তুলে ছয় দফা বাস্তবায়নের দাবিতে রেললাইনে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা। কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল জব্বার মোড়–সংলগ্ন রেললাইনে অবস্থান নেন তাঁরা। পরে বেলা একটার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
এ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আজ সকাল ১০টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত কৃষি অনুষদের সব বর্ষের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেন।
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবিগুলো হলো কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই), বিএডিসি ও অন্যান্য গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের দশম গ্রেডের (উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা/উপসহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা/সমমান) পদগুলো শুধু স্নাতক ডিগ্রিধারী কৃষিবিদদের জন্য উন্মুক্ত করা; ডিএই ও অন্যান্য কৃষিসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে নবম গ্রেডসহ অন্যান্য গ্রেডে নিয়মিত পদোন্নতি ও পদ বৃদ্ধির নিশ্চয়তা; নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়ে কোটাব্যবস্থায় বিএডিসিতে নবম গ্রেডে পদোন্নতির সুযোগ বাতিল; দশম গ্রেডের পদগুলোকে গেজেটের আওতার বাইরে রেখে স্বতন্ত্র পদসোপান কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত করা; কৃষি ডিপ্লোমাধারীদের জন্য নতুন কোনো বিশেষায়িত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন না করে তাঁদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীনেই সীমাবদ্ধ রাখা এবং শুধু স্নাতক ডিগ্রিধারী কৃষিবিদদের ‘কৃষিবিদ’ উপাধি ব্যবহারের বৈধতা দেওয়া।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষে কৃষিগুচ্ছ পরীক্ষায় একটি সিটের জন্য ২৪ পরীক্ষার্থী প্রতিযোগিতা করেছেন। যেখানে এত মেধার পরীক্ষা দিতে হয়, সেখানে ডিপ্লোমাধারীদের শখের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামা শোভনীয় নয়।
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ডিপ্লোমাধারীরা দাবি করছেন, দশম গ্রেডে তাঁদের জন্য পদ সংরক্ষিত রাখা হোক। পদ সংরক্ষিত রাখা মানেই কোটা। অথচ আমরা কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি, রক্ত দিয়েছি। এখন আর কোনো বৈষম্য মেনে নেওয়া হবে না।’
আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানান, কৃষিবিদেরা দেশের মানুষের খাদ্যের জোগান নিশ্চিত করছেন। তাঁদের যৌক্তিক দাবি দ্রুত না মানলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। প্রয়োজনে ‘সারা বাংলা কৃষিবিদ ব্লকেড’ পালিত হবে।