সমুদ্রের তলদেশে থাকা রঙিন প্রবালপ্রাচীর পৃথিবীর সবচেয়ে জীববৈচিত্র্যপূর্ণ বাস্তুসংস্থান হিসেবে পরিচিত। পানির নিচে থাকা এসব রঙিন ও জটিল কাঠামো মহাসাগরের প্রাণের আধার হিসেবেও আলোচিত। অসাধারণ সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত এসব প্রবালপ্রাচীর পৃথিবী থেকে পুরোপুরি অদৃশ্য বা ধ্বংস হয়ে গেলে আমাদের গ্রহের সামগ্রিক পরিবেশ বদলে যাবে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, প্রবালপ্রাচীরগুলো সাধারণভাবে সমুদ্রের রেইনফরেস্ট হিসেবে কাজ করে। এসব প্রাচীরে প্রায় ২৫ শতাংশ সামুদ্রিক প্রজাতির আবাস। বিভিন্ন প্রাণীর প্রজননক্ষেত্র ও খাদ্যের উৎস এসব প্রাচীর। প্রবালপ্রাচীর ধ্বংস হয়ে গেলে অগণিত প্রজাতি তাদের আশ্রয় হারাবে। তখন ব্যাপক হারে জীববৈচিত্র্য হ্রাস পাবে। ছোট মাছ থেকে শুরু করে বড় শিকারি মাছ, শামুক, ঝিনুক, কাঁকড়ার আচরণ বদলে যাবে। হারিয়ে যাবে অনেক প্রজাতি। বিভিন্ন ধরনের অমেরুদণ্ডী প্রাণী—প্রত্যেকেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রবালপ্রাচীরের ওপর নির্ভরশীল। প্রবালের অনুপস্থিতি খাদ্যশৃঙ্খলে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থান ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হবে।

আরও পড়ুনপ্রবালপ্রাচীর রক্ষায় অভিনব উদ্যোগ  ২১ মার্চ ২০২৪

বিভিন্ন প্রবালপ্রাচীর উপকূলীয় সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রাচীর ঢেউয়ের শক্তি শোষণ করে ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রভাব কমিয়ে উপকূলীয় অঞ্চলকে ক্ষয় থেকে রক্ষা করে। প্রবালপ্রাচীর হারিয়ে গেলে উপকূলীয় জনপদ ও অবকাঠামো সরাসরি ঢেউয়ের আঘাতের মুখে পড়বে। বিভিন্ন দ্বীপরাষ্ট্র ও নিচু উপকূলীয় দেশ বিশেষভাবে ঝুঁকিতে পড়বে।

আরও পড়ুনরং হারাচ্ছে রঙিন প্রবালপ্রাচীর২৯ নভেম্বর ২০২৩

সমুদ্রের প্রবালপ্রাচীর মৎস্যশিল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কোরিয়া বা অস্ট্রেলিয়ার মতো বিভিন্ন দেশের সমুদ্র অর্থনীতিতে প্রবালপ্রাচীরের ভূমিকা রয়েছে। এ ছাড়া বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ তাঁদের জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রবালপ্রাচীরে থাকা বিভিন্ন মাছের ওপর নির্ভরশীল। প্রবালপ্রাচীর ধ্বংস হলে এসব মৎস্যভান্ডার পুরোপুরি ভেঙে পড়বে। খাদ্যনিরাপত্তা ও অর্থনীতির ওপর চরম আঘাত দেখা যাবে। সাধারণভাবে প্রবালপ্রাচীর কার্বন চক্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রবাল ক্যালসিয়াম কার্বনেট দিয়ে তৈরি। সমুদ্র থেকে কার্বন ডাই–অক্সাইড শোষণ করে তৈরি হয় এসব প্রাচীর। প্রবালপ্রাচীর ধ্বংস হলে কার্বন ডাই–অক্সাইড শোষণের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে। তখন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবও আরও বাড়বে। সমুদ্রের লবণাক্ততা বৃদ্ধি করবে, যা অন্যান্য সামুদ্রিক জীবের জন্যও হুমকি তৈরি করবে।

সূত্র: হাউ স্টাফ ওয়ার্কস

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপক ল য এসব প র প রব ল ক র বন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে শিক্ষকের বাড়িতে চুরি, ১২ দিনেও উদ্ধার হয়নি লুন্ঠিত মালামাল

বন্দরের সর্বত্রই চুরির ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে আশংকাজনকহারে। এক শ্রেণীর পেশাদার চোর দীর্ঘ দিন ধরে সংঘবদ্ধভাবে পাড়া-মহল্লায় ঘুরে ঘুরে এসব চুরির ঘটনা ঘটিয়ে আসছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগসূত্রে জানা যায়।

অতি সম্প্রতি (২৭ অক্টোবর) বন্দরের বাবুপাড়া গৌপীনাথ বন্দর সংলগ্ন ৫তলার বাড়ির নিচতলার ভাড়াটিয়া ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ বিএম ইউনিয়ন স্কুল এন্ড কলেজের স্কুল শাখার সহকারি প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন মিয়ার ঘরের তালা ভেঙ্গে অজ্ঞাতনামা চোরেরা ঘরের আলমিরাতে রক্ষিত নগদ ১লাখ ১০ হাজার টাকা ও ১০ লক্ষাধিক মূল্যেও ৪ভরি ওজনের স্বর্ণের অলংকার নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় শিক্ষক আলাউদ্দিন বন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও অদ্যাবধি লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার কিংবা চোরের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে শিক্ষক আলাউদ্দিন জানান,বিষয়টি নিয়ে ওসি সাহেবের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং তাকে কিছু ভিডিও ফুটেজ ও ছবি দেয়া হয়েছে তিনি কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এর কয়েক বছর আগেও একই এলাকার ডাঃ বিমল চন্দ্র ঘোষের ঘর থেকে একই কায়দায় ৬ভরি স্বর্ণের অলংকার ও মূল্যবান মালামাল নিয়ে যায় অজ্ঞাত চোরেরা। সে সময় পুলিশের গফিলতির কারণে ওই ঘটনার কোন অগ্রগতি হয়নি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ