বিমান বাহিনী স্টেশন থেকে ‘সম্ভাব্য হামলার’ সতর্কতা পাওয়ার পর শুক্রবার সকালে ভারতের চণ্ডীগড়ে প্রায় এক ঘন্টা ধরে সাইরেন বাজানো হয়েছিল। চণ্ডীগড় প্রশাসন X-এ একটি পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছে

পোস্টটিতে বলা হয়েছে, “সবাইকে ঘরের ভেতরে অবস্থান এবং বারান্দা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”

পার্শ্ববর্তী পঞ্চকুলার জেলা প্রশাসনও সাইরেন বাজিয়ে মানুষকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

জম্মু ও কাশ্মীরের কিছু অংশে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা এবং পাঞ্জাবের পাঠানকোটে গোলাবর্ষণের পর গত সন্ধ্যায় চণ্ডীগড়ে একই রকম সাইরেন বাজানো হয়েছিল এবং ব্ল্যাকআউট জারি করা হয়েছিল।

চণ্ডীগড়ের ডেপুটি কমিশনার নিশান্ত কুমার যাদব গত রাতে গভীর রাতে জানিয়েছেন, জরুরি পরিস্থিতির কারণে’ চণ্ডীগড়ের সমস্ত বেসরকারি ও সরকারি স্কুল শুক্র ও শনিবার বন্ধ রাখা হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির দাবি, পাকিস্তান গত সন্ধ্যায় জম্মু ও কাশ্মীরের আরএস পুরা, আরনিয়া, সাম্বা এবং হীরানগরে কমপক্ষে আটটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। জম্মুর উপর দিয়েও ক্ষেপণাস্ত্র নিষ্ক্রিয় করা হয়েছিল। রাজস্থানের জয়সলমীর, পাঞ্জাবের অমৃতসর এবং হরিয়ানার পঞ্চকুলায়ও ব্ল্যাকআউট জারি করা হয়েছিল।

ভারতীয় সেনাবাহিনী শুক্রবার সকালে জানিয়েছে, ৮ মে ও ৯ মে মধ্যরাতে পশ্চিম সীমান্তে ড্রোন এবং অন্যান্য অস্ত্র ব্যবহার করে পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী ‘একাধিক আক্রমণ’ চালিয়েছে।

এক্স-এ এক পোস্টে সেনাবাহিনী বলেছে, “পাকিস্তানি সেনারা জম্মু ও কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর অসংখ্য যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন (সিএফভি) করেছে। ড্রোন হামলা কার্যকরভাবে প্রতিহত করা হয়েছে এবং সিএফভিদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হয়েছে।”

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের দাবি জামায়াতের

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের দাবি করে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, ‘আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বলেছি, স্থানীয় সরকার নির্বাচন যদি নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে হয়, তাহলে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে।’

আজ বুধবার দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ব্রিফিংয়ে জামায়াতের নেতা এ কথা বলেন।

সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সঙ্গে দেখা করতে আসে জামায়াতে ইসলামীর একটি প্রতিনিধিদল। তিন সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ও কর্মপরিষদ সদস্য জসিম উদ্দিন সরকার।

গতকাল মঙ্গলবার দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে পায় জামায়াতে ইসলামী। নির্বাচন কমিশন থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রতীক ও নিবন্ধন বুঝে নেওয়া এবং বেশ কিছু দাবি জানাতে আজ সিইসির সঙ্গে দেখা করতে আসেন দলটির প্রতিনিধিরা।

পরে হামিদুর রহমান বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে হলে দলীয় প্রার্থীদের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও মেয়র বানাতে দলীয় প্রভাব কাজে লাগানো হয়। জনমতের প্রতিফলন হয় না। যেটি আমরা অতীতেও দেখেছি। এ জন্য আমরা বারবার স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছি।’

জামায়াতের এই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার, অন্তর্বর্তী সরকার যেই ফরম্যাটেই হোক না কেন, নির্বাচনের আগে একটি সরকারের বিষয়ে ঐকমত্য কমিশন কাজ করছে। সব দল এই বিষয়ে একমত হয়েছে। এ জন্য আমরা বলেছি, সেই সরকারের অধীনে যদি স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়, তাহলে এটা অনেক বেশি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে। সেখানে জনগণের সঠিক প্রতিনিধিত্বটা আসবে।’

নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পাওয়ার বিষয়ে হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক বরাদ্দ করে গতকাল গেজেট প্রকাশ করেছে। এর মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে, তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার অন্যায়ভাবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করেছে। পরবর্তী সময়ে আমাদের প্রতীক দাঁড়িপাল্লাও কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। গেজেটের মাধ্যমে আমাদের সেই অধিকার ফিরে এসেছে। দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট দেওয়ার যে বাধা ছিল, তা উঠে গিয়েছে। আমরা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাচ্ছি।’

সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিষয়ে হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে (পিআর) নির্বাচন একটি সুন্দর পদ্ধতি বলে আমরা মনে করি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই পদ্ধতি আছে। ঐকমত্য কমিশনেও আমরা এই দাবি জানিয়েছি। আজ নির্বাচন কমিশনেও আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে দাবি উত্থাপন করেছি, যেন এটি বাংলাদেশে চালু করা হয়। আমরা ১ শতাংশ ভোটের ভিত্তিতে সংখ্যানুপাতিক হারে আসন বণ্টন করার জন্য বলেছি।’

হামিদুর রহমান আরও বলেন, ‘পিআর পদ্ধতি চালু হলে বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশন জাতির কাছে ইতিহাসের সেরা নির্বাচন উপহার দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে নির্বাচনে কালোটাকার দৌরাত্ম্য কমে আসবে। সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ হবে। এই পদ্ধতিতে দলীয় মনোনয়ন–বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ আছে।’

প্রবাসীদের ভোটাধিকারের বিষয়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘বাংলাদেশের ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ বিদেশে কর্মরত আছেন। কিন্তু তাঁরা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। এতে তাঁদের মনে দুঃখ–কষ্ট আছে। তার চেয়ে বড় কথা, তাঁরা সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারছেন না। এ জন্য আমরা কমিশনকে এ বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছি। পোস্টাল, অনলাইনসহ যেসব পদ্ধতি আছে, সেগুলো চালু করে প্রবাসীদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছি।’

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি, আমরা নির্বাচন কমিশন, সরকার—সবকিছু অবজার্ভ (পর্যবেক্ষণ) করছি। সুতরাং এই জায়গায় আস্থা–অনাস্থার বিষয়টি নিয়ে আমরা আবার মন্তব্য করছি না। কালোকে কালো, সাদাকে সাদা বলব। যদি ব্যত্যয় ঘটে, সে জায়গায় কথা বলতে হবে। আমরা আশাবাদী, তারা ভবিষ্যতে জনআস্থাকে সামনে রেখে এগিয়ে যাবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ