বাজারে ইরি ও বোরো ধানের নতুন চাল আসায় দীর্ঘ দিন পর নিম্নমুখী হয়েছে চালের দাম। গত দুই সপ্তাহে খুচরা পর্যায়ে প্রায় সব জাতের চালের দাম কমেছে। এর মধ্যে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১২ টাকা পর্যন্ত কমেছে বলে দাবি করছেন বিক্রেতারা। তবে, সবজি ও মুরগিসহ অন্যান্য পণ্যের দাম আগের মতো উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল আছে।
শুক্রবার (৯ মে) রাজধানীর নিউ মার্কেট ও কারওয়ান বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বাজারে সব ধরনের চালের সরবরাহ ভালো থাকায় দাম কিছুটা নিম্নমুখী। এখন বাজারে ডায়মন্ড ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮৮ থেকে ৯০ টাকা। রশিদ ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৭৮ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়। নাজিরশাইল চাল ৮০ থেকে ৯০ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, স্বর্ণা চাল ৫৫ টাকা এবং চিনিগুঁড়া পোলাও চাল মানভেদে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দাম প্রায় অপরিবর্তিত আছে। এখন বাজারে বেগুন মানভেদে প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, দেশি শশা ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কাকরোল ৭০ টাকা ও সজনে ডাটা ১১০ টাকা, প্রতি পিস লাউ ৫০ টাকা, জালি কুমড়া ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০ টাকায়। প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, দেশি রসুন ১০০ থেকে ১১০ টাকা ও দেশি আদা ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ সপ্তাহে মাছের দাম অপরিবর্তিত আছে। এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। প্রতি কেজি চাষের পাঙাস ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, কৈ ২২০ টাকা, শিং ৬০০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। সোনালি জাতের মুরগি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাদা লেয়ার ২৮০ টাকা এবং লাল লেয়ার ৩৩০ টাকা দাম। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর রায়েরবাজারে কেনাকাটা করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী শাহাদাত হোসেন রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেছেন, বাজারে চালের দাম কিছুটা কমেছে, এটা স্বস্তির খবর। কিন্তু, অন্যান্য পণ্যের দাম আগের মতো। চাইলেও চাহিদামতো মাছ, মাংস, ডিম কিনতে পারি না। সরকারের উচিত, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।
কারওয়ানবাজারে মুদি ব্যবসায়ী মানজির আহমেদ রাইজিংবিডিকে বলেছেন, দীর্ঘদিন পর চালের দাম কমতে শুরু করছে। কারণ, এখন ধান তোলার মৌসুম। তেলসহ অন্যান্য পণ্য আগের দামে আটকে আছে।
ঢাকা/রায়হান/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৮০ থ ক ৬০ ট ক ৮০ ট ক ৫০ ট ক
এছাড়াও পড়ুন:
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে
প্রযুক্তির উৎকর্ষের মধ্যেও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা বিভিন্নভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে প্রায়ই বিকৃতভাবে বা ভুলভাবে উপস্থাপন করছে। গুগলে ‘ইনডিজেনাস পিপল’ লিখে খোঁজা হলে মাঝেমধ্যে এমন ছবি দেখানো হয়, যা তাদের ‘আদিম’, ‘বন্য’, ‘বর্বর’, ‘জংলি’ ও ‘হিংস্র’ আকারে উপস্থাপন করে।
সোমবার রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এমন অভিযোগ করেন। ‘আদিবাসী নারীর অধিকার রক্ষা ও ভবিষ্যৎ গড়ার লড়াইয়ে আধুনিক প্রযুক্তির ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক।
আলোচনা সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক ফাল্গুনী ত্রিপুরা। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের ঘিরে এমন উপস্থাপনের প্রভাব নারীদের ওপরও পড়বে।
মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির বলেন, দেশে জাতিসংঘের অনেকগুলো দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হলেও আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালন করা হয় না। তিনি বলেন, বুঝুক আর না বুঝুক বাংলাদেশ জাতিসংঘের বিভিন্ন কনভেনশনকে তড়িঘড়ি করে সমর্থন করে। কিন্তু এই কনভেনশনকে সমর্থন করেনি। সরকার বুঝেশুনেই সমর্থন করেনি। আগের সরকার বলেছে, বাংলাদেশে আদিবাসী নেই, এই সরকারও আদিবাসীদের স্বীকৃতি দিচ্ছে না।
একটাই ধর্ম ও জাতিসত্তা থাকবে, এমন মনোভাব কাম্য নয় উল্লেখ করে এই মানবাধিকারকর্মী বলেন, ‘কিসের ভয়ে আমরা দেশে ভিন্ন ধর্ম, চিন্তা ও জাতিসত্তার মানুষকে থাকতে দেব না? কে অধিকার দিয়েছে যে একটি মাত্র মতবাদ, চিন্তা, ভাষা জাতি ও ধর্ম থাকবে? রাষ্ট্রের জন্য এটা কাম্য হতে পারে না।’
চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে সমতল ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারীদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখ করে খুশী কবির বলেন, অভ্যুত্থানের পরে আর নারীদের কোনো অংশগ্রহণ নেই। নারী কমিশন গঠন করা হয়। কিন্তু কমিশনের কোনো কিছু গ্রহণ করা হয়নি। এর অর্থ সরকার নারীদের ভয় পায়। এই অবস্থা টিকে থাকার জন্য অভ্যুত্থান হয়নি। তাই অধিকার আদায়ে নারীদের শক্ত ভূমিকা রাখতে হবে। এখনই উত্তম সময়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির ছবি: প্রথম আলো হেডিং: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে