১৯ মে ঢাকায় ‘চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪’
Published: 10th, May 2025 GMT
দেশের সুস্থ ধারার সংগীতচর্চায় উৎসাহ জোগাতে ২০০৪ সালে যাত্রা শুরু করেছিল ‘চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস’। সেই ধারাবাহিকতায় এবার আয়োজনের ১৯তম আসর বসছে ১৯ মে, রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে। এই সংগীত পুরস্কার অনুষ্ঠানে এবার দেওয়া হবে ১৮টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার। আজীবন সম্মাননায় সম্মানিত হবেন নজরুলসংগীত শিল্পী ফেরদৌস আরা।
শনিবার (১০ মে) দুপুরে চ্যানেল আই স্টুডিওতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এবারের আয়োজনের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ, ইমপ্রেস টেলিফিল্মের পরিচালক জহির উদ্দিন মাহমুদ, সংগীতশিল্পী ফেরদৌস আরা, দেশবন্ধু ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ ইদ্রিসুর রহমান এবং ঢাকা ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট রায়হান কাউসার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এবারের বিচারকমণ্ডলীর সদস্য সংগীতশিল্পী খুরশীদ আলম, ফুয়াদ নাসের বাবু ও মেহরীন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
চ্যানেল আইয়ের পরিচালক শাইখ সিরাজ বলেন, ‘দেশের সুস্থ সংগীতচর্চাকে এগিয়ে নিতে এই অ্যাওয়ার্ড আয়োজনের শুরু ২০০৪ সালে। প্রতিকূলতার মধ্যেও আমরা নিয়মিতভাবে এই উৎসব উদ্যাপন করে আসছি। সংস্কৃতি বিকাশে পৃষ্ঠপোষকদের ভূমিকার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’
ইমপ্রেস টেলিফিল্মের পরিচালক জহির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘সংগীত আমাদের জীবনের আনন্দ, বেদনা, প্রতিবাদ, প্রেম—সব অনুভূতির সঙ্গে মিশে আছে। চ্যানেল আই সেই অনুভবকে শ্রদ্ধা জানাতেই এই আয়োজন করে।’
সংগীতশিল্পী ফেরদৌস আরা আজীবন সম্মাননা প্রসঙ্গে বলেন, ‘স্বীকৃতি আনন্দের, অনুপ্রেরণার। চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস যে দীর্ঘদিন ধরে সংগীতের মানুষদের সম্মান জানিয়ে আসছে, তার অংশ হতে পেরে আমি গর্বিত। এই সম্মাননা আমার কাজের গতি বাড়াবে বলেই বিশ্বাস করি।’
এবারের আয়োজন নিয়ে অনুষ্ঠানের প্রকল্প পরিচালক রাজু আলীম জানান, ‘চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসকে আমরা সংগীতের মহোৎসব বলেই দেখি। এবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে ফ্যাশন শো। অনুষ্ঠানটিকে আরও বৈচিত্র্যপূর্ণ ও স্মরণীয় করে তুলতে বিভিন্ন দিক বিবেচনায় পরিকল্পনা করা হয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হোয়াইট হাউসে থাকাকালে কি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন বাইডেন
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঘোষণা তাঁর স্বাস্থ্য সম্পর্কে নানা প্রশ্নকে আবার আলোচনায় এনেছে। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স যেমন বলেছেন, বাইডেনের উচিত ছিল জনসাধারণের সঙ্গে আরও স্বচ্ছ হওয়া।
রোম সফর শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ভ্যান্স বলেন, মার্কিন জনগণ কেন তাঁর স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাননি?
‘তাঁর আসলে কী সমস্যা হয়েছিল, কেন সে সম্পর্কে জনগণ যথাযথ তথ্য পাননি? এটা তো একটা গুরুতর বিষয়।’ তিনি শুভকামনা জানান, যাতে বাইডেন ঠিকভাবে সেরে ওঠেন।
তার পর থেকে আলোচনা চলছিলই। রিপাবলিক পার্টির নেতা ভ্যান্সের মন্তব্যটি ৮২ বছর বয়সী সাবেক প্রেসিডেন্টের স্বাস্থ্য নিয়ে চলমান সেই বাহাসের সঙ্গে তাল মিলিয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বইয়ে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতির সময় বাইডেনের মানসিক স্থিরতা নিয়ে তাঁর সহকারীরা এবং দলের অনেক নেতাই উদ্বিগ্ন ছিলেন।
বইটির উদ্ধৃত অংশের জের ধরে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, বাইডেনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের ক্ষমতা সম্পর্কে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জনগণের কাছ থেকে লুকানো হয়েছিল কি? তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ সহকারীরা এসব আশঙ্কা নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, বাইডেন তখনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পুরোপুরি সক্ষম ছিলেন।
এ বিষয়ে রয়টার্স বাইডেনর একজন মুখপাত্রের কাছে এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চেয়েছিল, তাৎক্ষণিক কোনো সাড়া মেলেনি। তবে তিনি টেলিভিশনে এসে দাবি করেছেন, তাঁর মানসিক সক্ষমতা নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, তার কোনো ভিত্তি নেই। ৮ মে এবিসির ‘দ্য ভিউ’ অনুষ্ঠানে বাইডেন বলেন, ‘এই অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই।’
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট বাইডেন ২০২৪ সালের জুলাইয়ে পুনর্নির্বাচনের দৌড় থেকে সরে দাঁড়ান। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে বাইডেনের দুর্বল পারদর্শিতা ডেমোক্রেটিক পার্টি তাঁর সমর্থন কমিয়ে দেয়। এরপর ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস নিজে প্রার্থী হন, কিন্তু নভেম্বর ২০২৪ সালের নির্বাচনে তিনি ট্রাম্পের কাছে হেরে যান।
চিকিৎসকদের বিস্ময়বাইডেনের দপ্তর বলেছে, শুক্রবার তাঁর প্রস্টেট ক্যানসার শনাক্ত হয়েছে এবং সেটা হাড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। রয়টার্সকে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, সাধারণত এ ধরনের ক্যানসার এমন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছানোর আগেই শনাক্ত হয়।
নর্থওয়েস্টার্ন হেলথ নেটওয়ার্কের ক্যানসার কর্মসূচির পরিচালক ডা. ক্রিস জর্জ বলেছেন, ‘আমি ধারণা করি, সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রতিবছর খুব ভালো করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। এমনটা আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে, গত বছর তাঁর রক্তের পরীক্ষার ফল ভালো ছিল।’
এনওয়াইইউ ল্যাঙ্গন হেলথের ইউরোলজিস্ট ড. হার্বার্ট লেপোর বলেছেন, আজকের দিনে এত রকম পরীক্ষা–নিরীক্ষার সুযোগ আছে যে এমন দেরিতে ক্যানসার ধরা পড়াটা একটু অস্বাভাবিক।
সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের মতে, প্রায় ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে প্রোস্টেট ক্যানসার অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ার আগেই ধরা পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশিকাগুলো ৭০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের প্রতিবছর রক্ত পরীক্ষা করাতে বলে। এ ছাড়া প্রেসিডেন্টের বার্ষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় এই পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত ছিল কি না, তা স্পষ্ট নয়।
সাংবাদিক জেক ট্যাপার ও অ্যালেক্স থম্পসনের নতুন বই ‘অরিজিনাল সিন’ ক্ষমতায় থাকার শেষ মাসগুলোতে বাইডেনের মানসিক সচলতার বিষয়টি সামনে এনেছে।
২০২৮ সালের ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে পারেন কনেকটিকাট থেকে আসা মার্কিন সেনেটর ক্রিস মারফি। রোববার সংবাদমাধ্যম এনবিসিতে তিনি বলেন, ‘আরও আগে ভোটারদের কথা না শুনে ডেমোক্র্যাটরা ভুল করেছেন।’
২০২৪ সালের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের মধ্য থেকে মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে বাইডেনের কোনো বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন না। দলের শীর্ষ নেতারা বারবার জোর দিয়ে বলেছেন, তিনি দ্বিতীয়বার চার বছর মেয়াদে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম। অথচ রয়টার্স/ইপসোসের জরিপ অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ৭৪ শতাংশ মার্কিন নাগরিক মনে করতেন, এই পদটির জন্য তাঁর বয়স অনেক বেশি।
বাইডেনের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে তাঁর সমর্থক এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ প্রতিদ্বন্দ্বীরা একযোগে সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। সোমবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে বাইডেন তাঁর স্ত্রী জিল এবং নিজের পক্ষ থেকে সবাইকে তাঁদের ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ক্যানসার আমাদের সবার জীবন স্পর্শ করে। অনেকের মতো, জিল আর আমি শিখেছি যে আমরা নাজুক জায়গাগুলোতেই সবচেয়ে বেশি শক্তি সঞ্চার করতে পারি। আপনাদের ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ।’