কুমিল্লাবাসীর মতামতকে বিবেচনায় নিন
Published: 11th, May 2025 GMT
নগর ব্যবস্থাপনায় নাগরিক অংশগ্রহণ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি একটি আধুনিক শহরের মৌলিক ভিত্তি। কিন্তু কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত সেই ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সিটি করপোরেশন ২৩টি নাগরিক সেবা ও সনদের মধ্যে ১৯টির ফি হঠাৎ করে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু নাগরিক সেবা ও সনদের ফি বাড়ানোর আগে নগরবাসীর কাছ থেকে কোনো মতামত গ্রহণ করা হয়নি, হয়নি কোনো গণশুনানিও। এ নিয়ে নগরবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ১৯টি সেবার মধ্যে ১৬টি সেবার ফি এক ধাপে ৫ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে—২০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০০ টাকা। কিছু সেবার ক্ষেত্রে ফি দ্বিগুণ হয়ে ২০০ টাকায় পৌঁছেছে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, এমন অনেক সেবার ফি বাড়ানো হয়েছে, যেগুলো দরিদ্র ও প্রান্তিক নাগরিকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন বেকারত্ব সনদ, ভূমিহীন প্রত্যয়ন, মাসিক আয় সনদ, চারিত্রিক সনদ ইত্যাদি। বেকারত্ব সনদের ফি ৫ গুণ বাড়িয়ে ১০০ টাকা করায় বেকার তরুণদের মধ্যে ক্ষোভ আরও বেশি। একজন তরুণের ভাষ্য, ‘বেকারত্ব প্রমাণ করতে যদি ১০০ টাকা লাগে, তাহলে আগে তো আয় করতে হবে!’ আরও হতাশাজনক হলো, আগে যেসব অনলাইন আবেদন একেবারেই বিনা মূল্যে করা যেত, এখন সেগুলোর জন্যও ৫০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ফলে নাগরিকেরা ডিজিটাল সেবা ব্যবহারে নিরুৎসাহিত হবেন।
সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো.
নাগরিক সেবার ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়িত হয়েছে এমন এক সময়ে, যখন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন কার্যত অভিভাবকহীন। নেই কোনো মেয়র, নেই কোনো নির্বাচিত পরিষদ। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, জনগণের প্রতিনিধি ছাড়া কীভাবে একটি প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ জনগণের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলা এমন একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারে? নগরবাসী বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে তো নেনইনি; বরং গণশুনানি বা নগরবাসীর মতামত গ্রহণ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
কয়েক বছর আগে কোনো ধরনের মতামত ছাড়া মানুষের বাসাবাড়ির কর ৮ থেকে ১০ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। পরে নগরবাসী আপিল করলে সেটি কিছুটা কমিয়ে আনা হয়। গণশুনানি বা জনগণের মতামত না নিয়ে এমন সিদ্ধান্ত আবারও গ্রহণ করা হলো। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই, নাগরিক মতামত ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ফি নির্ধারণের প্রক্রিয়াটি পুনর্বিবেচনা করুন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ১০০ ট ক র মত মত নগরব স গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগ নিষিদ্ধ হবে কি না ঠিক করবে জনগণ: মঈন খান
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে কি না– তা জনগণ ঠিক করবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান। শুক্রবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কার্টার সেন্টারের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে জাতীয় নাগরিক পার্টির দাবির বিষয়ে মঈন খান বলেন, এটা নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যেসব রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কথা বলছে, তারা তাদের বক্তব্য বলেছে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক তো বিএনপি নয়– এটি জনগণের সিদ্ধান্তের বিষয়। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কারা নির্বাচন করবে, কারা করবে না। এটাই আমাদের (বিএনপি) বক্তব্য।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কি আসলেই নির্বাচন করতে চায়, তারা কি আসলেই গণতন্ত্র চায়? সেটা তো আওয়ামী লীগকে বলতে হবে। গণঅভ্যুত্থানের পর ৯ মাস চলে গেছে। অথচ এখন পর্যন্ত দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর ধরে এ দেশের মানুষের ওপরে জুলুম, লুটপাট ছাড়াও ফ্যাসিস্ট কায়দায় এ দেশকে তছনছ করার ঘটনায় তারা ভুল স্বীকার করেনি, তারা ক্ষমা চায়নি বাংলাদেশের মানুষের কাছে। তাই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নটি আসলে আমাদের জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন নেই। এর উত্তর বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ জানে।
বৈঠকে ড. আব্দুল মঈন খান ছাড়াও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার ছিলেন। কার্টার সেন্টারের ডেমোক্রেসি প্রোগ্রামের সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর জোনাথন স্টোনস্ট্রিট ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।