‘প্রমোশনের’ আনন্দে বাঁধনহারা উদ্যাপন, ২৫ জন হাসপাতালে, একজন জীবন-শঙ্কায়
Published: 12th, May 2025 GMT
কখনো কখনো আনন্দই যে বেদনার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে, তা এখন টের পাচ্ছেন হামবুর্গের সমর্থকেরা। জার্মানির এই ফুটবল ক্লাব গতকাল বুন্দেসলিগা ২ থেকে প্রমোশন পেয়ে বুন্দেসলিগায় উঠেছে।
৭ বছর পর জার্মানির শীর্ষ প্রতিযোগিতায় ওঠার আনন্দে দলটির সমর্থকেরা এতটাই উদ্বেলিত ছিলেন যে ম্যাচ শেষ হতে না হতেই সবাই হুড়মুড় করে মাঠে নেমে পড়েন। আর তাতেই ঘটেছে দুর্ঘটনা। একসঙ্গে অনেক মানুষের হইহুল্লোড়ে আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশত। হামবুর্গের স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ২৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।
জার্মানির শীর্ষ লিগে ৬ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়া হামবুর্গ ২০১৮ সালে প্রথমবার দ্বিতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা বুন্দেসলিগা ২–তে নেমে যায়। এরপর গত কয়েক বছর চেষ্টা করেও শীর্ষ লিগে ফিরতে পারেনি দলটি। সামনের মৌসুমে বুন্দেসলিগায় খেলতে গতকাল উল্মের বিপক্ষে জয় দরকার ছিল হামবুর্গের।
নিজেদের মাঠ ফক্সপার্কস্টেডিয়নের ম্যাচটিতে শুরুতে পিছিয়ে পড়লেও শেষ পর্যন্ত উল্মকে ৬–১ ব্যবধানে উড়িয়ে দেয় হামবুর্গ। রেফারি শেষ বাঁশি বাজতেই ৫৭ হাজার ধারণক্ষমতার গ্যালারি থেকে দর্শকেরা হুড়মুড় করে মাঠের ভেতরে ঢুকে যান। একসঙ্গে অনেক মানুষ মাঠে নেমে যাওয়ায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং এতে অনেকে আহত হন।
হামবুর্গ ফায়ার সার্ভিসের দেওয়া বিবৃতিতে ৪৪ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। এর মধ্যে একজন হাসপাতালে জীবনশঙ্কায় আছেন। এর বাইরে গুরুতর আহত ১৯ জনসহ ২৪ জনকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।
শেষ বাঁশির পর সবাই হুড়মুড় করে মাঠে ঢোকাতেই এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ঘটনাস্থলে একটি জরুরি সেবা বিভাগ চালু করেছে ফায়ার সার্ভিস। এ ছাড়া উদ্ধারসেবা বিভাগের সহায়তায় মোট ৬৫ জন জরুরি কর্মী সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনবার ইউরোপীয় শিরোপা জেতা হামবুর্গ এবারের বুন্দেসলিগা ২–তে ৩৩ ম্যাচে ৫৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে। লিগে এখনো এক ম্যাচ বাকি থাকলেও শীর্ষ দুইয়ে থাকা নিশ্চিত হওয়ায় বুন্দেসলিগার টিকিট পেয়ে গেছে দলটি। এর আগে গত ছয় বছর বুন্দেসলিগায় ওঠার খুব কাছাকাছি গিয়েও দলটি ব্যর্থ হয়েছিল। তিনবার হয়েছে চতুর্থ, তিনবার তৃতীয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ মব র গ
এছাড়াও পড়ুন:
‘আল্লাহু আকবার’ বলে হলের ছাদ থেকে লাফ দিলেন রাবি শিক্ষার্থী
‘আল্লাহু আকবার’ বলে হলের ছাদ থেকে লাফ দিয়েছেন সাদ আহমেদ নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাত ১১টা ২০ মিনিটে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের চার তলার উপর থেকে লাফ দেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
সাদ আহমেদের বাড়ি সিরাজগঞ্জ। ছাদ থেকে লাফ দেওয়ার আগে ফেসবুকে তিনি কয়েকটি পোস্ট করেন। সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ভালোবাসি লিসা'।
লিসাকে উদ্দেশ্য করে তিনি লেখেন, “লিসা তুমি জানতা তোমাকে আমি কত্তটা ভালোবাসি, তবুও কেন এমন করলে? সব জায়গায় সেইম ইফোর্ট সেইম ডায়ালগ কীভাবে পারো লিসা? মানুষ এতটা সাইকো কীভাবে হয়? তোমাকে তো বলেই ছিলাম, আমার সাথে চিট করলে কিন্তু আমার বন্ধু ফিরোজের মতো আমাকেও মরা ছাড়া উপায় থাকবে না। এত্ত করে বুঝাইলাম তাও বুঝলে না।”
আরেকটি পোস্টে তিনি লেখেন, “সরি আম্মু পারলে মাফ করে দিও। তুমি আমার আম্মু ছিলা, তুমি আমার আব্বু ছিলা। আর আমার বাপ একটা জানোয়ার।”
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “আমি মাত্রই ছাদে উঠেছিলাম, তিন তলায় ওঠার পরে একজন জোরে 'আল্লাহু আকবার' বলে এবং পরক্ষণেই হঠাৎ জোরে শব্দ শুনতে পাই। তারপর ওখান থেকে দৌঁড়ে এসে দেখি একজন মাটিতে পড়ে আছে। পরে অ্যাম্বুলেন্স এসে তাকে রামেকে নিয়ে যায়।
তার এক বন্ধু বলেন, সাদ খুব সহজ সরল। সে হাফেজ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। পারিবারিক কিছু সমস্যাও ছিলো। তবে এভাবে সে লাফ দেবে এটা ভাবতেই পারিনি।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, “আমি বাইরে ছিলাম। ঘটনাটি শোনার পর হলে গিয়ে শুনতে পেলাম তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সে ফার্স্ট ব্লকের চার তলা থেকে লাফ দিয়েছিল। সম্ভবত তার একটা পা ভেঙ্গে গেছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমরা ঘটনাটি শোনামাত্রই সেখানে অ্যাম্বুলেন্স পাঠাইছি। তাকে মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা বিস্তারিত কিছু জানতে পারিনি।”
ঢাকা/ফাহিম/ইভা