‘অপারেশন সিঁদুর’–এর কারণে ভারতে বন্ধ করে দেওয়া সব বিমানবন্দর আজ সোমবার থেকে আবার চালু হয়ে গেল। ৭ মে পাকিস্তানে ঝটিকা আক্রমণের পর উত্তর ও উত্তর–পশ্চিম ভারতের মোট ৩২টি বিমানবন্দর ১৫ মে পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আজ থেকে সেগুলো আবার চালু হয়ে যাচ্ছে। ভারতের এয়ারপোর্ট অথরিটি (এএআই) আজ এ কথা জানিয়েছে।
গত শনিবার বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাতে কাশ্মীর, পাঞ্জাব ও গুজরাটের কোনো কোনো লক্ষ্যবস্তুতে পাকিস্তান আঘাত হানে। ভারতীয় সেনারা তা প্রতিহত করে বলে জানান তাঁরা। গতকাল রোববার নতুন করে কোনো আক্রমণ না হওয়ায় আজ থেকে বন্ধ থাকা বিমানবন্দরগুলো চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর ফলে দিল্লি বিমানবন্দরের ওপর চাপ অনেকটাই কমে যাবে।
বন্ধ করে দেওয়া বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে ছিল কাশ্মীরের শ্রীনগর, জম্মু, অবন্তীপুর; পাঞ্জাবের অমৃতসর, চণ্ডীগড়, আধমপুর, আম্বালা, লুধিয়ানা, পাঠানকোট, পাটিয়ালা, হালওয়ারা, ভাটিন্ডা; হিমাচল প্রদেশের শিমলা, কুলু মানালি, কাংড়া; রাজস্থানের জয়সলমির, যোধপুর, বিকানির, উত্তরলাই, কিষেনগড়; লাদাখের লেহ, থোইসে; গুজরাটের ভূজ, কান্ডলা, মুন্দ্রা, রাজকোট, পোরবন্দর, নালিয়া, কেশড ও উত্তর প্রদেশের হিন্দন ও সারসোয়া।
গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে সন্ত্রাসবাদীদের হানায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ৩০ এপ্রিল ভারতীয় আকাশসীমা পাকিস্তানি বিমানের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পাকিস্তানও একই ব্যবস্থা নেয়। যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর ভারতের আকাশসীমা উন্মুক্ত করে দেওয়ার ঘোষণা এখনো আসেনি। যেমন সিন্ধু পানিচুক্তির বিষয়টিও এখনো স্থগিত রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া
রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর-সংলগ্ন মিরপুর সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
আজ সোমবার বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে এই চিত্র দেখা যায়। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
দুপুরের দিকে দুটি এক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙতে গিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। পরে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এরপর বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করে আসছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আছেন র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা। তাঁরা শক্ত অবস্থানে আছেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজ দুপুরের দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনের মিরপুর সড়কে দুটি এক্সকাভেটর দেখা যায়।
পরে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে এক্সকাভেটর ঢোকানোর চেষ্টা করেন। তাঁদের বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিপেটা করে।
কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় পুলিশের অন্তত এক সদস্য আহত হন।
আরও পড়ুনএক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ৪ ঘণ্টা আগেপরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড মেরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করে। এ সময় দফায় দফায় সাউন্ড গ্রেনেডের বিকট শব্দ শোনা যায়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
বেলা পৌনে ২টার দিকে দুই ভাগে ভাগ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আবার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তাঁদের আবার ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ।
বিক্ষোভকারীদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার জন্য দফায় দফায় চেষ্টা এবং তাঁদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। নিউমার্কেট থেকে মিরপুরমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুনরায়কে কেন্দ্র করে ঢাকায় নিরাপত্তা জোরদার, ১৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন৫ ঘণ্টা আগেবিক্ষোভকারীরা পুরোপুরি সরে না যাওয়ায়, বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে আসার চেষ্টা করায় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়। এখন এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার জিসানুল হক দুপুরে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘আমরা কোনোমতে কাউকে আইন হাতে তুলে নিতে দেব না।’
গত ফেব্রুয়ারিতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটির অর্ধেকের বেশি অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৩২ নম্বরের বাড়িটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুনআড়াই ঘণ্টা ধরে পড়া হলো রায়, এরপর এল মৃত্যুদণ্ডের আদেশ২ ঘণ্টা আগে