অবশেষে ধ্বংস হলো সোভিয়েত মহাকাশযান কসমস
Published: 12th, May 2025 GMT
১৯৭২ সালের মার্চ মাসে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন শুক্র গ্রহের অনুসন্ধানে মহাকাশযান কসমস–৪৮২ পাঠিয়েছিল। শুক্র গ্রহ নিয়ে কাজ না করলেও এত দিন মহাকাশে অবস্থান করছিল যানটি। অবশেষে কসমসের মিশন শেষ হয়েছে। ৫০ বছর বয়সী ল্যান্ডার প্রোবটি ১০ মে শনিবার ভোরে পৃথিবীতে ফিরে আসে। ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তার পশ্চিমে ভারত মহাসাগরের ওপর দিয়ে রাত ২টা ২৪ মিনিটে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে ভারত মহাসাগরে আছড়ে পড়েছে মহাকাশযানটি। কসমসের পৃথিবীতে প্রবেশের তথ্য জানিয়েছে রাশিয়ান মহাকাশ সংস্থা রসকসমস।
ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার ভাষ্যে, কসমস–৪৮২ যানটির পৃথিবীতে আগমন ছিল অনিয়ন্ত্রিত। অনিয়ন্ত্রিত অবতরণের ওপর নজর রেখেছিল ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা। সংস্থাটি জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত পুনঃপ্রবেশের পরে দৃশ্যমান প্রভাব জানা যায়নি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মহাকাশ নজরদারি ও ট্র্যাকিং সংস্থা জানিয়েছে, অবজেক্ট কসমস-৪৮২ অবতরণের পরপরই ক্ষয় হয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। কসমস–৪৮২ পৃথিবীতে ফিরে আসার কারণ হলো, এটিতে বিপদের ঝুঁকি ছিল। আকারে ছোট প্রায় ৩ ফুট ব্যাস ও ওজন প্রায় ১ হাজার ১৯০ পাউন্ড বলে ঝুঁকি ছিল। ১৯৭২ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন কসমস-৪৮২ প্রেরণ করে। ত্রুটির কারণে শুক্র গ্রহে আর যেতে পারেনি যানটি। শুক্র গ্রহের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের জন্য নকশা করা এই ল্যান্ডার প্রায় ৪৯৫ কেজি ওজনের ছিল এবং এর কাঠামো টাইটানিয়ামের তৈরি। দীর্ঘ ৫৩ বছর পৃথিবীর কক্ষপথে ঘোরার পর ১০ মে আবার পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করল যানটি। শক্তিশালী নকশার কারণে কিছু অংশ অক্ষত অবস্থায় ভূপৃষ্ঠে পৌঁছানোর সম্ভাবনা ছিল।
অনিয়ন্ত্রিত এই মহাকাশযানের পৃথিবীতে ফিরে আসার ঝুঁকি ছিল অনেক। বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় সম্পূর্ণ পুড়ে না গেলে, এর ধ্বংসাবশেষ ভূপৃষ্ঠে পতিত হতে পারে। বড় আকারের যান হলে, এর ভারী অংশ অক্ষত থাকতে পারে এবং জনবসতিপূর্ণ এলাকায় পড়লে হতাহতের ঘটনা ঘটাতে পারে। অনেক সময় বিষাক্ত বা তেজস্ক্রিয় পদার্থ বহনকারী যান দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
সূত্র: স্পেস ডটকম
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রব শ র
এছাড়াও পড়ুন:
সাগরে এক ট্রলারে ৪০ লাখ টাকার ইলিশ
সাগরে এফবি সাফাওয়ান-৩ ট্রলারের জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ১৭০ মণ ইলিশ মাছ। দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের কুয়াকাটা থেকে ৬০ কিলোমিটার গভীর সমুদ্রে এই ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে বরগুনার পাথরঘাটা বিএফডিসি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সাইফ ফিশ আড়তে এই মাছ বিক্রির উদ্দেশ্যে ওঠানো হয়। মাছগুলো ডাকের মাধ্যমে বিক্রি হয় ৪০ লাখ টাকায়। ট্রলারটিতে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় তাদেরই আরেকটি ট্রলার সাইফ-২ এ আরো কয়েক মণ ইলিশ তুলে দেওয়া হয়।
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সূত্রে জানাগেছে, পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সাইফ কোম্পানির এফবি সাফওয়ান-৩ মাছ ধরার ট্রলার গত ২৯ অক্টোবর সকালে পাথরঘাটা থেকে ১৯ জন জেলে নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়।
ওই দিন বিকেলে কুয়াকাটা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে গভীর সমুদ্রে জাল ফেলার পরই রাতে মাছগুলো ধরা পড়ে। ট্রলারটিতে জায়গায় সংকুলান না হওয়ায় তাদেরই আরেকটি ট্রলার সাইফ-২ এ আরো কয়েক মণ তুলে দেওয়া হয়। জেলেরা বলছে, সব মিলিয়ে ১৭০ থেকে ১৭৫ মণ ইলিশ ধরা পড়েছে।
এফবি সাফাওয়ান-৩ ট্রলারের মাঝি রুবেল হোসেন বলেন, “আমরা ২৯ অক্টোবর সাগরে যাই। বিকেলে লম্বা জাল (ইলিশ জাল) ফেলার পর রাত আটটার দিকে জালের অবস্থা দেখে বুঝতে পারি প্রচুর মাছ ধরা পড়েছে। রাত আটটা থেকে জাল টানা শুরু করে পরদিন দুপুর দেড়টা পর্যন্ত জাল ট্রলারে উঠানো শেষ হয়।”
সাইফ ফিশিং কোম্পানির ব্যবস্থাপক মনিরুল হক মাসুম জানান, অনেক দিন ধরে সাগরে খুব কম মাছ ধরা পড়ছিল। ইলিশ মৌসুমে কাঙ্খিত মাছ ধরা না পড়ায় আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছিল। সাগরে অবৈধ ট্রলিং বোট বন্ধ করা হলে জেলেদের জালে প্রচুর মাছ ধরা পড়বে।
পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়তদার মোস্তফা আলম বলেন, “মাছগুলো আমার আড়তে বিক্রি হয়েছে। ইলিশের প্রকারভেদ ২৭ হাজার, ২২ হাজার, ১২ হাজার টাকায় মণ দরে সব মিলিয়ে ৩১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় এই মাছ বিক্রি হয়।”
বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, “২২ দিনের অবরোধ শেষে জেলেরা সাগরে গিয়েই মাছ পেয়েছে- এটা খুশির খবর। তবে দীর্ঘদিন ধরে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মেলেনি। হঠাৎ এক ট্রলারে ১৪০ মণ ইলিশ পাওয়ায় আমরাও খুশি।”
বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন রাইজিংবিডিকে বলেন, “মা ইলিশ সংরক্ষণের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে।”
তিনি বলেন, “জেলেরা সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধ মানলে এবং অবৈধ জাল বন্ধ তাদের জেলেদের সুদিন ফিরবে।”
ঢাকা/ইমরান/এস