দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে চান বাকৃবি শিক্ষার্থী আরিফ
Published: 13th, May 2025 GMT
কেউ যখন বলে, বড় হতে হলে বড় ডিগ্রি দরকার। তখন এআই আরিফের গল্পটি যেন বলে ওঠে, বড় হতে দরকার স্বপ্ন, সাহস আর স্কিল।
বলছিলাম কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এআই আরিফের কথা। তিনি দেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় অ্যাড-টেক স্টার্টআপ নন-একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী।
পড়াশোনার পাশাপাশি আরিফের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালে যাত্রা শুরু করে আজ ১৩ শতাধিক শিক্ষার্থীর স্কিল ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে পথ দেখিয়েছে, তৈরি করেছে চাকরির সুযোগ, উৎসাহ দিয়েছে উদ্যোক্তা হওয়ার।
আরো পড়ুন:
শিক্ষার্থীর বিকাশে শিক্ষকের বিকল্প নেই : উপদেষ্টা
কুয়েটের শিক্ষক লাঞ্ছনাকারী ৩৭ শিক্ষার্থীকে শোকজ
তার অফিসে আছেন ১১ জন স্থায়ী কর্মী, রয়েছেন অনেক চুক্তিভিত্তিক সদস্যও। তার মাসিক আয় বাংলাদেশের একজন প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তার থেকেও কয়েকগুণ বেশি।
শুরুর গল্পটা একটু্ হতাশার হলেও ঘুরে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা যোগায় আরিফকে। করোনাকালে তার উদ্যোগ নেওয়া প্রথম স্টার্টআপটি বন্ধ হয়ে যায়। হতাশ না হয়ে ঘরে বসেই বিভিন্ন ধরনের কাজের চেষ্টা করতে থাকেন। এক সময় অ্যাড-টেক জগতে কাজ করার সুযোগ পান তিনি। কাজ করতে গিয়ে তিনি লক্ষ্য করলেন, দেশের শিক্ষা পদ্ধতিতে এখনো অনেক ঘাটতি ও শূন্যতা রয়েছে। সেখান থেকেই জন্ম নেয় নন-একাডেমির ভাবনা।
তার ভাষায়, “আমাদের দেশে ভালো কিছু করতে হলে আমরা ভাবি, বড় কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হবে। আমি চাই মানুষ বুঝুক, একাডেমির বাইরেও দক্ষতা দিয়ে সফল হওয়া যায়।”
২০২১ সালের ২১ নভেম্বর শুরু হয় নন-একাডেমির যাত্রা। ব্লকচেইন, ডেটা সায়েন্স, মেশিন লার্নিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট—এমন সব প্রযুক্তিবিষয়ক কোর্স চালু করে তার প্রতিষ্ঠান। কোর্সে অংশ নিতে চাইলে শুধু দুইটি শর্ত প্রয়োজন। তা হলো, প্রাথমিক কম্পিউটার জ্ঞান ও আগ্রহ। শিক্ষাগত যোগ্যতা এখানে কোনো বাধা নয়।
শুধু উদ্যোক্তা বললে আরিফকে কম বলা হয়। পরীক্ষার আগের দিনেও লাইভ ক্লাস নেওয়া, একাডেমিক চাপের মাঝেও কোর্স রেকর্ড করাসহ তিনি সবকিছু করেছেন নিজের হাতেই। পড়াশোনার পাশাপাশি স্টার্টআপ চালানোর এই সংগ্রামে তিনি পেয়েছেন দুই মানুষ থেকে গভীর অনুপ্রেরণা। তারা হলেন, স্টিভ জবস ও ইলন মাস্ক।
আরিফ বলেন, “আমি চাই এমন কিছু তৈরি করতে, যা মানুষের জীবনকে সহজ ও নিরাপদ করবে। আর তাদের জীবনে ভ্যালু যোগ করবে।”
মাত্র কয়েক বছরে নন-একাডেমির অনেক শিক্ষার্থী আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে চাকরি পেয়েছেন। আবার অনেকে নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলেছেন। এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে আরিফের অবিচল মনোযোগ, আত্মবিশ্বাস আর মানুষকে বদলে দেওয়ার ইচ্ছা।
শুধু অনলাইন নয়, ভবিষ্যতে অফলাইন কার্যক্রমও শুরু করতে চান আরিফ। তার লক্ষ্য, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় প্রযুক্তিনির্ভর, দক্ষতাভিত্তিক এক বিকল্প পথ তৈরি করা, যেখানে সবার জন্য থাকবে শেখার সমান সুযোগ।
আরিফের ভাষায়, “লক্ষ্য নির্ধারণ করুন, শেখা শুরু করুন, হাল ছাড়বেন না। নিজের স্কিল দিয়েই আপনি নিজের ভবিষ্যৎ বদলে দিতে পারেন।”
এআই আরিফের গল্পটা শুধু একজন তরুণ উদ্যোক্তার গল্প নয়, এটি বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা, তরুণ সমাজ ও উদ্যোক্তা সংস্কৃতির সম্ভাবনার গল্প। যিনি প্রমাণ করে চলেছেন, সফলতা খুঁজে নিতে হয় নিজের ভিতরেই।
ঢাকা/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উদ য ক ত আর ফ র
এছাড়াও পড়ুন:
অসুস্থ বাবাকে হাসপাতালে নিচ্ছিলেন দুই মেয়ে, পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল একজনের
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় অসুস্থ বাবাকে ডাক্তার দেখাতে হাসপাতালে নেওয়ার পথে ট্রাক ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন এক নারী। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন তাঁর বাবা ও বড় বোন। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মধুখালী উপজেলার বোয়ালিয়া এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত নারীর নাম শুকলা বিশ্বাস (৩২)। তিনি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার চাকদা লাঙ্গলবাদ গ্রামের মনোহর বিশ্বাসের ছোট মেয়ে। দুর্ঘটনায় আহত মনোহর বিশ্বাস (৮৫) ও তাঁর মেয়ে পারুল বিশ্বাসকে (৪৫) মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, মনোহর বিশ্বাস অসুস্থ হওয়ায় আজ সকালে তাঁকে মাগুরার শ্রীপুরের বাড়ি থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক দেখাতে আনছিলেন তাঁর দুই মেয়ে পারুল ও শুকলা। তাঁরা মাইক্রোবাসে ছিলেন। ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া এলাকায় পৌঁছালে মাগুরাগামী একটি ট্রাকের সঙ্গে মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে শুকলা বিশ্বাস ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
মধুখালী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা রাশেদুল আলম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ হাইওয়ে থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা কবির সরদার বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় একজন ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছেন। দুজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, মাইক্রোবাসটি বাঁ পাশ দিয়ে না গিয়ে ডান পাশের লেন দিয়ে যাওয়ার কারণে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।