কেউ যখন বলে, বড় হতে হলে বড় ডিগ্রি দরকার। তখন এআই আরিফের গল্পটি যেন বলে ওঠে, বড় হতে দরকার স্বপ্ন, সাহস আর স্কিল।

বলছিলাম কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এআই আরিফের কথা। তিনি দেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় অ্যাড-টেক স্টার্টআপ নন-একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী।

পড়াশোনার পাশাপাশি আরিফের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালে যাত্রা শুরু করে আজ ১৩ শতাধিক শিক্ষার্থীর স্কিল ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে পথ দেখিয়েছে, তৈরি করেছে চাকরির সুযোগ, উৎসাহ দিয়েছে উদ্যোক্তা হওয়ার।

আরো পড়ুন:

শিক্ষার্থীর বিকাশে শিক্ষকের বিকল্প নেই : উপদেষ্টা

কুয়েটের শিক্ষক লাঞ্ছনাকারী ৩৭ শিক্ষার্থীকে শোকজ 

তার অফিসে আছেন ১১ জন স্থায়ী কর্মী, রয়েছেন অনেক চুক্তিভিত্তিক সদস্যও। তার মাসিক আয় বাংলাদেশের একজন প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তার থেকেও কয়েকগুণ বেশি।

শুরুর গল্পটা একটু্ হতাশার হলেও ঘুরে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা যোগায় আরিফকে। করোনাকালে তার উদ্যোগ নেওয়া প্রথম স্টার্টআপটি বন্ধ হয়ে যায়। হতাশ না হয়ে ঘরে বসেই বিভিন্ন ধরনের কাজের চেষ্টা করতে থাকেন। এক সময় অ্যাড-টেক জগতে কাজ করার সুযোগ পান তিনি। কাজ করতে গিয়ে তিনি লক্ষ্য করলেন, দেশের শিক্ষা পদ্ধতিতে এখনো অনেক ঘাটতি ও শূন্যতা রয়েছে। সেখান থেকেই জন্ম নেয় নন-একাডেমির ভাবনা।

তার ভাষায়, “আমাদের দেশে ভালো কিছু করতে হলে আমরা ভাবি, বড় কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হবে। আমি চাই মানুষ বুঝুক, একাডেমির বাইরেও দক্ষতা দিয়ে সফল হওয়া যায়।”

২০২১ সালের ২১ নভেম্বর শুরু হয় নন-একাডেমির যাত্রা। ব্লকচেইন, ডেটা সায়েন্স, মেশিন লার্নিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট—এমন সব প্রযুক্তিবিষয়ক কোর্স চালু করে তার প্রতিষ্ঠান। কোর্সে অংশ নিতে চাইলে শুধু দুইটি শর্ত প্রয়োজন। তা হলো, প্রাথমিক কম্পিউটার জ্ঞান ও আগ্রহ। শিক্ষাগত যোগ্যতা এখানে কোনো বাধা নয়।

শুধু উদ্যোক্তা বললে আরিফকে কম বলা হয়। পরীক্ষার আগের দিনেও লাইভ ক্লাস নেওয়া, একাডেমিক চাপের মাঝেও কোর্স রেকর্ড করাসহ তিনি সবকিছু করেছেন নিজের হাতেই। পড়াশোনার পাশাপাশি স্টার্টআপ চালানোর এই সংগ্রামে তিনি পেয়েছেন দুই মানুষ থেকে গভীর অনুপ্রেরণা। তারা হলেন, স্টিভ জবস ও ইলন মাস্ক।

আরিফ বলেন, “আমি চাই এমন কিছু তৈরি করতে, যা মানুষের জীবনকে সহজ ও নিরাপদ করবে। আর তাদের জীবনে ভ্যালু যোগ করবে।”

মাত্র কয়েক বছরে নন-একাডেমির অনেক শিক্ষার্থী আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে চাকরি পেয়েছেন। আবার অনেকে নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলেছেন। এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে আরিফের অবিচল মনোযোগ, আত্মবিশ্বাস আর মানুষকে বদলে দেওয়ার ইচ্ছা।

শুধু অনলাইন নয়, ভবিষ্যতে অফলাইন কার্যক্রমও শুরু করতে চান আরিফ। তার লক্ষ্য, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় প্রযুক্তিনির্ভর, দক্ষতাভিত্তিক এক বিকল্প পথ তৈরি করা, যেখানে সবার জন্য থাকবে শেখার সমান সুযোগ।

আরিফের ভাষায়, “লক্ষ্য নির্ধারণ করুন, শেখা শুরু করুন, হাল ছাড়বেন না। নিজের স্কিল দিয়েই আপনি নিজের ভবিষ্যৎ বদলে দিতে পারেন।” 

এআই আরিফের গল্পটা শুধু একজন তরুণ উদ্যোক্তার গল্প নয়, এটি বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা, তরুণ সমাজ ও উদ্যোক্তা সংস্কৃতির সম্ভাবনার গল্প। যিনি প্রমাণ করে চলেছেন, সফলতা খুঁজে নিতে হয় নিজের ভিতরেই।

ঢাকা/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উদ য ক ত আর ফ র

এছাড়াও পড়ুন:

ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯

ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা বেড়ে ৬৯ জন হয়েছে। দেশটির দুর্যোগ-সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা আজ বুধবার এ খবর জানান। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা ও পানি-বিদ্যুতের সংযোগ আবার চালু করার চেষ্টা করছে ফিলিপাইন সরকার।

দেশটির সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা রাফি আলেজান্দ্রো সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার আগে সেবু প্রদেশের উত্তরে বোগো শহরের কাছে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়। স্থানীয় হাসপাতালগুলো আহত মানুষের ভিড়ে রীতিমতো উপচে পড়ছে।

আঞ্চলিক সিভিল ডিফেন্স দপ্তরের তথ্য কর্মকর্তা জেন আবাপো বলেন, সেবুর প্রাদেশিক দুর্যোগ দপ্তরের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৬৯ জন। অন্য একজন কর্মকর্তা জানান, আহত হয়েছেন ১৫০ জনের বেশি।

দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, মন্ত্রিপরিষদ সচিবেরা ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রিয়জন হারানো ব্যক্তিদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।

সেবু ফিলিপাইনের জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যগুলোর একটি। সেখানে প্রায় ৩৪ লাখ মানুষের বসবাস। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ম্যাকতান-সেবু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম চালু রয়েছে। এটা ফিলিপাইনের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর।

ভূমিকম্পে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সান রেমিগিও শহরটিও। উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য এ শহরে ‘দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা’ ঘোষণা করা হয়েছে। শহরের ভাইস মেয়র আলফি রেইনেস বলেন, উদ্ধারকর্মীদের জন্য খাবার ও পানি, সেই সঙ্গে ভারী সরঞ্জাম প্রয়োজন।

স্থানীয় ডিজেডএমএম রেডিওকে আলফি রেইনেস বলেন, ‘ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ নেই। আমাদের সত্যিই সহায়তা দরকার। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে পানির তীব্র সংকট রয়েছে। ভূমিকম্পে সেখানে সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

আরও পড়ুনফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত অন্তত ২৬, চলছে উদ্ধারকাজ৫ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪০ ঘণ্টা পর এক ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার, নিখোঁজ আরেকজন
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ৭ কেজি গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার 
  • গরুর গোবর কুড়ানো থেকে সাত তারকা হোটেলে, জয়দীপের গল্প জানেন কি
  • টর্চলাইট
  • স্বাস্থ্য খাতে আলাদা বেতনকাঠামো হোক
  • গাজীপুরে আট বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে একজন গ্রেপ্তার
  • খাগড়াছড়ির ঘটনায় জাতিসংঘকে যুক্ত করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি
  • ডাক্তারদের হাতের লেখা ঠিক করার নির্দেশ দিলো আদালত
  • ‘মোটা জেনারেলদের’ কড়া সমালোচনা করলেন মার্কিন প্রতিরক্ষা হেগসেথ
  • ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯