পুলিশ সদস্যের রাম দায়ের কোপ ঠেকাতে বাঁ হাত বাড়িয়েছিলেন এক কৃষক। এতে তাঁর হাত কবজি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে মাটিতে পড়ে থাকা তাঁর হাত একটি ব্যাগে ভরে থানায় হাজির হন তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের তাতীসুতা গ্রামে বন বিভাগের এক খণ্ড জমির দখল নিয়ে সংঘর্ষের সময় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী কৃষক তাতীসুতা গ্রামের মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে হজরত আলী। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য একই গ্রামের রাম দুলাল বিশ্বাসের ছেলে অমৃত বিশ্বাস। তিনি পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানায় কর্মরত।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, ওই গ্রামের রাম দুলাল বিশ্বাসের ছেলে অমৃত বিশ্বাস পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানায় কর্মরত। বন বিভাগের জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হলে থানা থেকে বাড়িতে চলে আসেন অমৃত। পরে ষাটোর্ধ্ব কৃষক হজরত আলী ও তাঁর লোকজনের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে উভয় পক্ষের আরও কয়েকজন আহত হন।

তাতীসুতা গ্রামের বাসিন্দারা জানান, পুলিশের চাকরির দাপট দেখিয়ে অমৃতের পরিবার হজরত আলীর পরিবারের ওপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে আসছে। অফিস ফাঁকি দিয়ে অমৃত তাঁর বাড়িতে এসে মারামারিতে জড়ান বলে অভিযোগ করেন তারা।

জানা যায়, বন বিভাগের এই জমি নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে অনেক দিন ধরেই বিরোধ চলছিল। রাম দুলাল বিশ্বাসদের দাবি এই জমি তাদের। হজরত আলীদের দখলে থাকা জমিটি নিয়ে আদালতে মামলাও চলছে।

হজরত আলীর স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, তাদের বসতবাড়ির পাশে বন বিভাগের জমিতে থাকা গাছের চারা কেটে জমি জবরদখল করতে চেষ্টা করেন দুলালের ছেলে অমৃত। এ সময় তাদের বাধা দিলে রাম দা দিয়ে তাঁর স্বামীর বাঁ হাতের কবজি কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন অমৃত। মাটিতে পড়ে থাকা হাত ব্যাগে ভরে তারা থানায় হাজির হন।

শ্রীপুর সদর বিটের বিট কর্মকর্তা আলাল খান বলেন, জমিটি বন বিভাগের। কয়েকবার তারা গাছ লাগিয়েও সুবিধা করতে পারেননি। দুই পরিবারই জমিটি জবরদখল করে যার যার নিয়ন্ত্রণে নিতে মরিয়া। এ ঘটনায় বন বিভাগ মামলা করেছে দখলদারদের বিরুদ্ধে। মামলা চলমান।

অভিযুক্ত অমৃত বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে খুদে বার্তা দিলেও সাড়া মেলেনি।

অমৃতের ভাই প্রফুল্ল বিশ্বাস জানান, সংঘর্ষের এক পর্যায়ে তাদের ফাঁসানোর জন্য প্রতিপক্ষ নিজেরাই হজরত আলীর হাত বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। হজরত আলীরদের হামলায় অমৃতসহ তাদের পরিবারের অনেকে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

নাগরপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, সরকারি একটি কাজে কনস্টেবল অমৃতকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল। কাজ শেষে তাঁর থানায় ফিরে আসার কথা। কিন্তু তিনি বাড়িতে গেছেন। এটা অফিস ফাঁকি দেওয়া।

শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শামীম আকতার বলেন, কবজি থেকে হাত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় হজরত আলী থানায় আসেন। পরে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ দেয়নি। তবে নিরপত্তার প্রয়োজনে অমৃতের ভাই প্রফুল্লকে থানায় আনা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বন ব ভ গ র পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

হজরত আলী (রা.)-এর ১০টি কালজয়ী উক্তি

ইসলামের চতুর্থ খলিফা হজরত আলী ইবনে আবি তালিব (রা.)-এর খুতবা, পত্র ও উপদেশের একটি বিখ্যাত সংকলন হলো নাহজুল বালাগা বা বাগ্মিতার পথ। এটি একাদশ শতাব্দীতে সাইয়্যেদ শরিফ এটি সংকলন করেন।

গ্রন্থটিতে ২৪১টি খুতবা, ৭৯টি পত্র এবং ৪৮৯টি উপদেশ রয়েছে। গ্রন্থটির সংকলক শিয়া মতাদর্শী বলে পরিচিত হলেও শিয়া-সুন্নি উভয় ধারার আলেমরা এই গ্রন্থের সত্যতা স্বীকার করেন, যদিও কয়েকটি বর্ণনা সূত্র নিয়ে মতভেদ রয়েছে।

নাহজুল বালাগা ইসলামি সাহিত্যের একটি অমূল্য সম্পদ এবং আলী (রা.)-এর জীবনাদর্শ ও শিক্ষার অন্যতম উৎস হিসেবে বিবেচিত। সেখান থেকে তার ১০টি কালজয়ী উক্তি তুলে ধরা হলো।

গ্রন্থটিতে ২৪১টি খুতবা, ৭৯টি পত্র এবং ৪৮৯টি উপদেশ রয়েছে। গ্রন্থটির সংকলক শিয়া মতাদর্শী বলে পরিচিত হলেও শিয়া-সুন্নি উভয় ধারার আলেমরা এই গ্রন্থের সত্যতা স্বীকার করেন।হজরত আলী (রা.)-এর কালজয়ী উক্তি

১. জ্ঞানের মূল্য: ‘জ্ঞানই তোমার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ; এটি কখনো হ্রাস পায় না বরং বিতরণের মাধ্যমে বৃদ্ধি পায়।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ১৯৫)

২. দুনিয়ার সত্যতা: ‘দুনিয়া একটি ক্ষণস্থায়ী ছায়া। এর পেছনে ছুটো না। যা চিরস্থায়ী, তার জন্য প্রস্তুত হও।’ (নাহজুল বালাগা, খুতবা ১০৩)

৩. নীরবতার শক্তি: ‘নীরবতা তোমাকে সম্মান দেয়, আর অপ্রয়োজনীয় কথা তোমার মর্যাদা কেড়ে নেয়।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ২২৪)

৪. ন্যায়বিচারের গুরুত্ব: ‘ন্যায়বিচার একটি সমাজের প্রাণশক্তি; এটি ছাড়া সমাজ ধ্বংসের মুখে পড়ে।’ (নাহজুল বালাগা, পত্র ৫৩)

আরও পড়ুনইমান নষ্ট হয়ে যাওয়ার কয়েকটি কারণ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫এমন সঙ্গী বেছে নাও যে তোমাকে ভালো পথে নিয়ে যায় এবং তোমার ভুল সংশোধন করে।হজর আলী (রা.), নাহজুল বালাগা, উপদেশ ১৬০

৫. অহংকারের ধ্বংস: ‘অহংকার মানুষের হৃদয়কে অন্ধ করে এবং তাকে পতনের দিকে নিয়ে যায়।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ৮৬)

৬. সত্যের পথ: ‘সত্য বলো, এমনকি যদি তা তোমার বিরুদ্ধে যায়। সত্যই তোমার মুক্তির পথ।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ১৪৬)

৭. সঙ্গী নির্বাচন: ‘এমন সঙ্গী বেছে নাও যে তোমাকে ভালো পথে নিয়ে যায় এবং তোমার ভুল সংশোধন করে।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ১৬০)

৮. ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ: ‘ক্রোধ তোমার শত্রু। যে এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, সে নিজেকে জয় করতে পারে।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ১৫৩)

৯. দানের ফজিলত: ‘দান করো, কারণ এটি তোমার সম্পদ কমায় না, বরং তোমার মর্যাদা বাড়ায়।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ২৩৬)

১০. আল্লাহর ওপর ভরসা: ‘আল্লাহর ওপর নির্ভর করো, তিনি তোমার সব সমস্যার  সমাধানকারী। যে তাঁর ওপর ভরসা করে, সে কখনো হতাশ হয় না।’ (নাহজুল বালাগা, খুতবা ১১৪)

 সূত্র: দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন ডটকম

আরও পড়ুননামাজ: দাসের মহিমা০৪ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লক্ষ্মীপুরে বাবাকে হত্যার অভিযোগে ছেলে গ্রেপ্তার
  • ধর্ম অবমাননার অভিযোগে সাময়িক বহিষ্কার জাবি শিক্ষার্থী
  • লক্ষ্মীপুরে বাবাকে কুপিয়ে হত্যার মামলায় ছেলে গ্রেপ্তার
  • মহানবী (সা.)–কে কটূক্তির অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার
  • হজরত আলী (রা.)-এর ১০টি কালজয়ী উক্তি