ঢাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের বিক্ষোভ, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা–উপাচার্য–প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি
Published: 14th, May 2025 GMT
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য নিহতের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর ও অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছেন সংগঠনটির নেতারা।
আজ বুধবার দুপুরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ছাত্রদল নেতারা এই দাবি জানান।
বিক্ষোভ-সমাবেশে ‘দফা এক দাবি এক, ভিসির পদত্যাগ’, ‘আমার ভাইয়ের লাশ পড়ে, প্রশাসন কী করে’, ‘নয় মাসে দুই খুন, ভিসি প্রক্টরের অনেক গুণ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন নেতা-কর্মীরা।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে জোহরের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের ভেতরে শাহরিয়ারের জানাজা হয়।
সমাবেশে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মাদকে সয়লাব ও মাদকসেবীদের অভয়ারণ্য পরিণত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকায় যেভাবে মাদকদের আড্ডা বজায় রয়েছে, তার বিরুদ্ধে প্রশাসনের সামান্যতম পদক্ষেপ তাঁরা লক্ষ্য করেননি।
রাকিবুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগের বিচার নিশ্চিত করতে এই প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের প্রধান দাবি ছিল, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা। কিন্তু তাঁরা মনে করছেন, এই প্রশাসনের দ্বারা হয়তোবা সে কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব না। এমনকি শাহরিয়ার হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো স্পষ্ট বিবৃতি বা বক্তব্য তাঁরা পাননি।
রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আমাদের ভাই সাম্যকে হারিয়েছি। কিন্তু আগামীতে এ ধরনের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থী যেন আক্রান্ত না হয়।’
রাকিবুল ইসলাম বলেন, পদত্যাগের যে দাবি ছাত্র সমাজের মাঝখান থেকে উঠেছে, আশা করছি তাঁরা পদত্যাগ করবেন। তাঁরা তাঁদের দাবির পক্ষে রাজপথে থাকবেন। ক্যাম্পাসে তাঁদের আন্দোলন চলমান থাকবে।
ছাত্রদলে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আপনারা দেখেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তোফাজ্জল নামের একজন মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন লোককে কীভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়েছে। আজকের এই সমাবেশ থেকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, গণ-অভুত্থান পরবর্তী সময়ে যে প্রশাসন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নিয়েছে, সেই প্রশাসন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।’
নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, তাঁরা সাম্যের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের ও বিচার দাবি করছেন। একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর যিনি নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, সে জন্য তাঁরা তাঁর পদত্যাগ দাবি করছেন। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কোনোভাবে এই ঘটনার দায় এড়িয়ে যেতে পারেন না। গণ-অভুত্থান পরবর্তী সময়ে দুইটি হত্যার ঘটনা প্রমাণ করে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই তাঁরা উপাচার্যেরও পদত্যাগ দাবি করছেন।
নাছির আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আইন-শৃঙ্খলার চরমভাবে অবনতি হচ্ছে। এর আগে বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের মেধাবী কর্মী পারভেজকে হত্যা করা হয়েছে। সুতরাং তাঁরা মনে করেন, এই অন্তর্বর্তী সরকারও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। সে জন্য তাঁরা অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টারও পদত্যাগ দাবি করছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, তাঁরা এখন পর্যন্ত সহিষ্ণু আচরণ করে যাচ্ছেন। আজকের এই সমাবেশ থেকে তিনি আবার উচ্চারণ করছেন, আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাঁরা যদি দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না দেখেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দিকেও আঙুল তুলবেন তাঁরা। তিনি উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেন।
এর আগে বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি চত্বর, মধুর ক্যানটিন, কলাভবন হয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার নিহত হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র পদত য গ দ ব র ক ব ল ইসল ম ছ ত রদল র উপ চ র য সরক র করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে গবেষণা পুরস্কার এবং লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডের আবেদন করুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ ‘রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার’ ও ‘রাজ্জাক শামসুন নাহার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ইন ফিজিক্স’ প্রদানের জন্য দেশের পদার্থবিজ্ঞানী ও গবেষকদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
কোন সালের জন্য পুরস্কার —ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে প্রতিষ্ঠিত ট্রাস্ট ফান্ড থেকে ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালের গবেষণা কাজের জন্য এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
পুরস্কার মল্যমান কত —১. পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে মৌলিক গবেষণার জন্য পুরস্কার পাওয়া গবেষককে রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার হিসেবে নগদ ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে।
২. পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে আজীবন অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে একজন বিজ্ঞানী বা গবেষককে নগদ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের রাজ্জাক শামসুন নাহার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
আবেদনের শেষ তারিখ —আগ্রহী প্রার্থীদের আগামী ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ সালের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) বরাবর আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।
আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে—আবেদনকারীদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তিন কপি আবেদনপত্র, তিন প্রস্থ জীবনবৃত্তান্ত, তিন প্রস্থ গবেষণাকর্ম এবং তিন কপি ছবি আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
দরকারি তথ্য—১. জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রকাশিত গবেষণাকর্ম পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে।
২. যৌথ গবেষণা কাজের ক্ষেত্রে গবেষণা পুরস্কারের অর্থ সমান হারে বণ্টন করা হবে। এ ক্ষেত্রে সহযোগী গবেষক বা গবেষকের অনুমতি নিয়ে আবেদন করতে হবে।
৩. আবেদনকারী যে বছরের জন্য আবেদন করবেন পাবলিকেশন ওই বছরের হতে হবে।
৪. একই পাবলিকেশন দিয়ে পরবর্তী বছরের জন্য আবেদন করা যাবে না।
৫. কোন কারণে একজন প্রার্থী পুরস্কারের জন্য আবেদন করলে প্রার্থিতার স্বল্পতা বিবেচনা করে তাঁর আবেদন বিবেচনা করা হবে।
৬. পরীক্ষক তাঁর গবেষণা কাজের পুরস্কারের জন্য সুপারিশ না করলে তাঁকে পুরস্কারের বিষয়ে বিবেচনা করা হবে না।
৭. পদার্থবিজ্ঞানে রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার একবার প্রাপ্ত গবেষকও পরবর্তী সময়ে আবেদন করতে পারবেন।
৮. নতুন গবেষককে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
৯. যদি মানসম্মত গবেষণা কাজ না পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে পূর্বের পুরস্কার পাওয়া গবেষকের নতুন গবেষণা কাজের পুরস্কারের জন্য পরীক্ষকের সুপারিশের ভিত্তিতে বিবেচনা করা হবে।
# আবেদন জমা দেওয়ার ঠিকানা: প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।