স্ত্রীর পদোন্নতির বোর্ডের সভাপতি হলেন সহ-উপাচার্য স্বামী
Published: 14th, May 2025 GMT
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার পদোন্নতির বোর্ড ঘিরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, বোর্ডের সভাপতি সহ–উপাচার্য অধ্যাপক সাজেদুল করিমের স্ত্রী উপ-রেজিস্ট্রার সাবিহা ইয়াসমিন প্রার্থীদের মধ্যে অন্যতম। এ নিয়ে ‘স্বার্থের সংঘাতের’ অভিযোগ উঠেছে সহ-উপাচার্যের বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, আগামীকাল বৃহস্পতিবার পদোন্নতির এই বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আছে। ১৩ জন উপ-রেজিস্ট্রারের মধ্য থেকে নির্বাচিত হবেন অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার। ইতিমধ্যে সব প্রার্থীকে নিয়ম অনুযায়ী সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণের জন্য বার্তা পাঠানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সংবিধি-১৯৮৭-এর কর্মকর্তা নিয়োগের ধারা ২ (১) (ক)-তে বলা আছে, ‘উপাচার্য বোর্ডের চেয়ারম্যান হবেন; তবে শর্ত হলো, যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সহ–উপাচার্য থাকেন, তাহলে তিনিই এটির চেয়ারম্যান হবেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, স্ত্রীর বোর্ডে যদি সহ-উপাচার্য চেয়ারম্যান হিসেবে থাকেন, তাহলে এটি সরাসরি ‘স্বার্থের সংঘাত’। শুদ্ধাচারের নীতিতেও এমন পদক্ষেপ অগ্রহণযোগ্য। বোর্ডের স্বচ্ছতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। স্বজনপ্রীতি হতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহ-উপাচার্য মো.
বিষয়টি শিক্ষকদের কেউ কেউ সহজভাবে নিচ্ছেন না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সিন্ডিকেট সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিকটাত্মীয় কেউ থাকলে বোর্ডের না থাকার নিয়ম আছে। ছেলে, মেয়ে, স্ত্রী কেউ হলে থাকা যাবে না। এটাই সরকারি নিয়ম। নিয়মানুযায়ী এ পদোন্নতির বোর্ডের বাইরে থাকতে হবে সহ-উপাচার্যকে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আশরাফ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘নৈতিকভাবে এই বোর্ড সহ-উপাচার্য পরিচালনা করতে পারেন না। এখানে কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট হবে ও স্বজনপ্রীতি মুখ্য হয়ে দাঁড়াবে। বোর্ডটি অন্য কোনো সদস্যকে হস্তান্তর করতে পারেন। সহ-উপাচার্য বোর্ডের বাইরে থাকাই উত্তম।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা মহিবুল আহসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বোর্ডের প্রার্থী যদি বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক বা নিকটাত্মীয় থাকেন, তাহলে বোর্ডে থাকতে হয় না। স্ত্রীর পদোন্নতির বোর্ডে সহ-উপাচার্য থাকাটা নৈতিকভাবে ঠিক নয়, অফিশিয়ালিও ঠিক নয়। সহ-উপাচার্যের উচিত বোর্ড থেকে পদত্যাগ করা।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল ক
এছাড়াও পড়ুন:
আশুলিয়ায় পুড়িয়ে দেওয়া একজনের পরিচয় শনাক্ত, কবর থেকে তুলে পরিবারকে দেওয়ার নির্দেশ
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় আশুলিয়ায় যে ছয়জনকে পোড়ানো হয়েছিল, ডিএনএ পরীক্ষায় তাঁদের মধ্যে একজনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। কবর থেকে তাঁর মরদেহ তুলে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
ওই ব্যক্তির নাম আবুল হোসেন। আশুলিয়ার আমবাগান গোরস্তানে আবুল হোসেনের মরদেহ দাফন করা হয়েছিল। আবুল হোসেনের নাম জুলাই শহীদদের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির নির্দেশও দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
প্রসিকিউশনের (রাষ্ট্রপক্ষ) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ আজ রোববার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
শহীদ আবুল হোসেনের স্ত্রীর নাম লাকি আক্তার। কুমিল্লার মুরাদনগর থানার ফুলঘর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন আবুল হোসেন।
আরও পড়ুনভ্যানে লাশের স্তূপ করছে পুলিশ, ভাইরাল ভিডিও নিয়ে যা জানা গেল৩১ আগস্ট ২০২৪গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নির্বিচার গুলি চালালে বেশ কয়েকজন নিহত হন। আহত হন অনেকে। রাতে আশুলিয়া থানার অদূরে নবীনগর থেকে চন্দ্রাগামী মহাসড়কের এক পাশে ‘পুলিশ’ লেখা পিকআপের আগুনে ভস্মীভূত অন্তত দুটি মরদেহ দেখেন বলে জানান স্থানীয় লোকজন। এ ছাড়া থানার সামনে আগুনে পোড়া একটি মরদেহ ছিল। পদচারী-সেতুতে উল্টো করে ঝোলানো ছিল ক্ষতবিক্ষত দুই পুলিশ সদস্যের মরদেহ। তখন স্থানীয় লোকজন আগুনে ভস্মীভূত একাধিক মরদেহ পিকআপে থাকতে পারে বলে ধারণা করেছিলেন। ওই রাতে আশুলিয়া থানায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছিল। এ ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয় সে সময়।
আরও পড়ুনসজলকে ধরে রাখে রনি, পরে একটি গুলির শব্দ পাই০৫ নভেম্বর ২০২৫