ভোলায় ক্ষোভ উপেক্ষা করে এলপিজি সিলিন্ডার বিতরণকাজের উদ্বোধন
Published: 14th, May 2025 GMT
ভোলায় বাসাবাড়িতে গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার দাবি উপেক্ষা করে সরকারি মূল্যে এলপিজি সিলিন্ডার বিতরণকাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভোলার ৫৬৮ জন গ্রাহকের মধ্যে সিলিন্ডার বিতরণের মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু করে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড।
আজ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে সিলিন্ডার বিতরণকাজের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান মো.
সিলিন্ডার বিতরণকাজের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বিপিসির চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান। তিনি বলেন, আবেদনের ভিত্তিতে ৫৬৮ জন গ্রাহকের মধ্যে এলপিজি সিলিন্ডার বিতরণ করা হবে। যাঁরা আবেদন করবেন, তাঁরাই এ সিলিন্ডার সংগ্রহ করতে পারবেন। এ জন্য লাইসেন্সের মাধ্যমে ভোলায় ছয়জন পরিবেশক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রথমে আবেদনের সঙ্গে এসব গ্রাহককে ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ হাজার ৪৩০ টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধন কার্ড নিতে হবে। ওই কার্ড দেখিয়ে ৮২৫ টাকা জমা দিলে পরিবেশক সিলিন্ডার দেবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে আমিন উল আহসান বলেন, যে ২ হাজার ১০০ গ্রাহক আবাসিক খাতে গ্যাসের সংযোগ নেওয়ার জন্য সরকারি ফান্ডে টাকা জমা দিয়েছেন, কিন্তু গ্যাসের সংযোগ পাননি, তাঁদের ব্যাপারে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। এটা শুধু সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির নয়, সব কোম্পানির আবাসিক খাতের গ্রাহকদের গ্যাসের সংযোগ দেওয়া বন্ধ আছে।
বিপিসির চেয়ারম্যান যখন সিলিন্ডার বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করছিলেন, তখন কয়েক শ গ্রাহক ও ঠিকাদার বিচ্ছিন্নভাবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ করছিলেন। কয়েক বছর আগে তাঁরা বাসাবাড়িতে গ্যাসের সংযোগ নিতে ঠিকাদার নিয়োগ করে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানিকে ডিমান্ড নোট, পৌরসভাকে সড়ক কর্তন ফিসহ একেকজন দেড় লাখ থেকে দুই লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন বলে জানান। অনেকের বাসার সামনে রাইজার বসেছে, পাইপলাইনও টানা হয়েছে। কিন্তু সংযোগ না দিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে এলপিজি সিলিন্ডার গ্যাস বিতরণের উদ্বোধনে তাঁরা ক্ষুব্ধ।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিপিসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আবাসিক খাতে গ্রাহক টাকা জমা দিয়েছেন; কিন্তু তাঁদের গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার সুযোগ হয়নি। তাঁদের টাকা ফেরত নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এখন গ্রাহকদের যে অভিযোগ, তাঁরা দ্রুত গ্যাসের সংযোগ নেওয়ার জন্য সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির লোকজন, ঠিকাদার ও সড়ক কাটার জন্য নির্ধারিত ফি ছাড়াও অনেক টাকা ঘুষ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে যদি আমরা কোনো লিখিত অভিযোগ পাই, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভোলার জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহানের সভাপতিত্বে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গৌতম চন্দ্র কুন্ডু, পুলিশ সুপার মো. শরীফুল হক, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী (আলমগীর), সদস্যসচিব মো. রাইসুল আলম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন দরবন গ য স ক ম প ন স ল ন ড র ব তরণ গ র হক র জন য এলপ জ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দরবনে ফাঁদসহ হরিণশিকারি আটক
সুন্দরবনের কচিখালী বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য এলাকা থেকে হরিণ শিকারের ৩০০ ফাঁদসহ এক ব্যক্তিকে আটক করেছে বন বিভাগ। আজ সোমবার সকালে শরণখোলা রেঞ্জের কচিখালী এলাকার সুখপাড়া খাল–সংলগ্ন বনে অভিযান চালিয়ে তাঁকে আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তির নাম আরিফুল ইসলাম। তিনি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কোরাইল্যা গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে। অভিযানে ওই বনাঞ্চলে পেতে রাখা হরিণ শিকারের ৩০০ ‘মালা ফাঁদ’, ১টি ছুরি ও করাত, প্লাস্টিকের রশিসহ শিকারের মালামাল উদ্ধার করা হয়। আটক ব্যক্তি ও জড়িতদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, সেখানে ফাঁদ পাততে আসা আরও দুজন অভিযানের সময় বনের ভেতর পালিয়ে গেছেন। তাঁদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাথরঘাটার একাধিক চক্র সুন্দরবনে হরিণ শিকারের সঙ্গে যুক্ত। বিশেষ করে জ্ঞানপাড়াসহ কয়েকটি এলাকায় শক্তিশালী হরিণশিকারি চক্র সক্রিয় আছে। বলেশ্বর নদের পূর্ব পাড়ে পাথরঘাটা উপজেলা আর পশ্চিমে সুন্দরবন। রাতের আঁধারে নদ পার হয়ে শিকারিরা বনে প্রবেশ করে। রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় সুন্দরবনে ঢুকে বন্য প্রাণী শিকার করে আসছে চক্রগুলো। পাথরঘাটার এসব চক্রের সঙ্গে শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার বেশ কিছু ব্যক্তি জড়িত।
এদিকে আটক আরিফুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, তাঁরা পাথরঘাটার হরিণশিকারি চক্র নাসির গ্যাংয়ের সদস্য। নাসির বন বিভাগের তালিকাভুক্ত অপরাধী (হরিণশিকারি)।
সুন্দরবনে বন্য প্রাণী প্রজনন মৌসুম ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ১ জুন থেকে বনে প্রবেশে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা চলছে। এ সময়ে বনজীবী, পর্যটকসহ সাধারণ মানুষের বনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে বন বিভাগ। বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএফও রেজাউল করিম বলেন, দুর্গম সুন্দরবনে পায়ে হেঁটে টহল বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। এসব এলাকায় বাঘ, কুমির, সাপসহ বন্য প্রাণীর আক্রমণের ঝুঁকি বেশি। এর মধ্যেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত আছে। গত দুই মাসে তিন হাজারের বেশি হরিণ শিকারের ফাঁদ উদ্ধার হয়েছে।