ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিরিঞ্জ, ক্যানুলা, স্যালাইনসহ জরুরি চিকিৎসাসামগ্রীর সংকটে সেবা বিঘ্নিত হওয়ার ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অভ্যুত্থানের ৯ মাস পর এসে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের দলীয় সিন্ডিকেটের দোহাই দেওয়াটা কর্তৃপক্ষের অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনারই বহিঃপ্রকাশ। অথচ এসব জরুরি চিকিৎসাসামগ্রী হাসপাতাল থেকেই রোগীরা পেয়ে থাকেন।
ময়মনসিংহ অঞ্চলের জেলাগুলো থেকে জটিল ও সংকটাপন্ন রোগীরাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। এ ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসা শুরুর সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আবার গরিব রোগীদের অর্থেরও সংকট থাকে। ফলে স্বজনদের বাইরে থেকে চিকিৎসাসামগ্রী কিনে আনতে বলা মানে একদিকে যেমন দেরিতে চিকিৎসা শুরু করা, অন্যদিকে স্বজনদের ওপর বাড়তি আর্থিক চাপ তৈরি হওয়া। কেননা, এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ৮০ শতাংশ দরিদ্র। এ বাস্তবতায় অনেক সময় রোগীর স্বজনদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের। হাসপাতালটির এই পরিবেশ চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়।
প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, হাসপাতাল সূত্র জানায়, এক হাজার শয্যার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতি মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার ক্যানুলা প্রয়োজন হয়; কিন্তু সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার। মাসে ১৪ থেকে ১৫ হাজার স্যালাইন সেটের দরকার হলেও সরবরাহ করা হচ্ছে ৮ থেকে ১০ হাজার। হাসপাতালের ওয়ার্ড ও ল্যাব মিলে ১০, ৫ ও ৩ সিসি সিরিঞ্জ প্রতি মাসে দরকার প্রায় আড়াই লাখ। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে ১ লাখ ৩০ হাজারের মতো।
আমরা মনে করি, চিকিৎসকেরা সভা করে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও সরঞ্জাম নিরবচ্ছিন্নভাবে সরবরাহের জন্য হাসপাতাল প্রশাসনের কাছে যে দাবি জানিয়েছেন, সেটা অত্যন্ত যৌক্তিক। হাসপাতালের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা ও দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য রোধ করার দাবিও তাঁরা জানিয়েছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, হাসপাতালের সুস্থ পরিবেশ রক্ষার দাবি কেন চিকিৎসকদের জানাতে হবে? প্রশাসন তাহলে কী করছে?
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, চিকিৎসাসামগ্রী সরবরাহকারী ঠিকাদারেরা বিগত সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া। তাঁরা গা ঢাকা দেওয়ায় এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। নতুন ঠিকাদার নিয়োগ হওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে তাঁরা আশা প্রকাশ করেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দিতে ৯ মাস লেগে যাবে?
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরবর হ
এছাড়াও পড়ুন:
গ্রিস থেকে গ্যাস আমদানিতে সম্মত ইউক্রেন: জেলেনস্কি
রাশিয়ার ধারাবাহিক হামলায় ইউক্রেনের জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। যার ফলে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো, বিদ্যুৎ ও তাপ উৎপাদন ক্ষমতা শূন্যের কাছাকাছি পৌঁছেছে এবং বিভিন্ন শহরে ব্ল্যাকআউট দেখা দিয়েছে। শীত আসার সাথে সাথে এই হামলাগুলো মানবিক সংকট আরো বাড়িয়ে তুলছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় রবিবার (১৬ নভেম্বর) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গ্রিস থেকে গ্যাস আমদানির ঘোষণা দিয়েছেন। খবর রয়টার্সের।
আরো পড়ুন:
ইউক্রেনের হামলা: নভোরো-সিয়েস্ক বন্দরের তেল রপ্তানি বন্ধ করল রাশিয়া
ইউক্রেনের আবাসিক ও জ্বালানি অবকাঠামোতে রাশিয়ার হামলা, নিহত ১১
টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে এক বিবৃতিতে জেলেনস্কি বলেন, “"আজ, আমরা ইউক্রেনের জন্য গ্যাসের বিষয়ে গ্রীসের সঙ্গে একটি চুক্তি প্রস্তুত করেছি, যা শীতের জন্য যতটা সম্ভব আমদানি নিশ্চিত করার জন্য আরেকটি গ্যাস সরবরাহ রুট হবে।”
তিনি জানান, “গ্যাস আমদানির জন্য অর্থায়নের জন্য আমাদের ইতিমধ্যেই চুক্তি রয়েছে। রাশিয়ান হামলার ফলে ইউক্রেনীয় উৎপাদনে যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করার জন্য আমরা গ্যাস আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় ২ বিলিয়ন ইউরো (২.৩ বিলিয়ন ডলার) কভার করব।”
রবিবার গ্রিসে সফর শুরু করার আগে এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এই ঘোষণা দেন। জেলেনস্কি গ্রিস থেকে ফ্রান্স এবং স্পেন সফর করবেন।
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের চতুর্থ বছরে রাশিয়া বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা এবং গ্যাস উৎপাদন সুবিধার উপর হামলা জোরদার করেছে।
জেলেনস্কি বলেন, “কিয়েভ ইউরোপীয় কমিশনের গ্যারান্টির অধীনে ইউরোপীয় অংশীদার এবং ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি ইউক্রেনীয় ব্যাংকগুলো থেকে গ্যাস আমদানির জন্য তহবিল বরাদ্দ করেছে, পাশাপাশি পূর্ণ অর্থায়ন নিশ্চিত করার জন্য মার্কিন অংশীদারদের সঙ্গেও কাজ করছে।”
গ্রিস ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে ইউক্রেনের যোগদানের দাবির অন্যতম প্রধান সমর্থক। গ্রিস ১৯৯১ সালের ৩১ ডিসেম্বর ইউক্রেনকে স্বীকৃতি দেয় এবং উভয় দেশ ১৯৯২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে।
ঢাকা/ফিরোজ