হজ ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি এবং সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্য ফরজ। এটি শুধু একটি ধর্মীয় আচার নয়, বরং সমতা, ধৈর্য, শৃঙ্খলা এবং আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের শিক্ষার একটি মাধ্যম। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে হজযাত্রা বহু বছর ধরে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও ব্যয় বৃদ্ধির কারণে হজযাত্রার সংখ্যা কমছে। এই নিবন্ধে হজের শিক্ষা এবং বাংলাদেশে হজযাত্রার বর্তমান প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হলো।

হজের শিক্ষা

হজ মানুষকে গভীর জীবনবোধ ও নৈতিক মূল্যবোধের শিক্ষা দেয়। এর প্রতিটি আচার মানুষের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পাঠ বহন করে:

সমতা ও ভ্রাতৃত্ব: হজ মানুষের মধ্যে বর্ণ, শ্রেণি, পেশা বা অর্থনৈতিক অবস্থানের ভেদাভেদ দূর করে। রাজা থেকে দরিদ্র—সবাই একই সাদা ইহরাম পরে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তাওয়াফ করেন। এটি মানবতার সমতা ও ঐক্যের শিক্ষা দেয়।

শৃঙ্খলা: কাবা শরিফের চারপাশে সুশৃঙ্খলভাবে তাওয়াফ করা জীবনে নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলার গুরুত্ব বোঝায়।

মন্দের বিরুদ্ধে লড়াই: জামরাতে শয়তানের প্রতীকে পাথর নিক্ষেপ অশুভ শক্তি ও মন্দ প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীক।

আনুগত্য: হাজরে আসওয়াদ চুম্বন আল্লাহর প্রতি অবিচল ভক্তি ও আনুগত্যের শিক্ষা দেয়।

ধৈর্য ও অধ্যবসায়: সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে দৌড় (সাঈ) হজরত হাজেরা (আ.

)-এর ধৈর্য ও কষ্ট সহ্য করার ঘটনার স্মরণে পালিত হয়। এটি জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ধৈর্যের শিক্ষা দেয়।

আল্লাহর সন্তুষ্টি: হজের মূল উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। এটি লোকদেখানো বা সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য নয়। যাঁরা ‘হাজি’ বা ‘আলহাজ’ উপাধি ব্যবহার করে প্রতিপত্তি অর্জনের চেষ্টা করেন, তাঁরা হজের প্রকৃত শিক্ষা থেকে বিচ্যুত হন। কোরআনে বলা হয়েছে: ‘তাদের গোশত বা রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, বরং তাঁর কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া।’ (সুরা হজ, আয়াত: ৩৭)

হজ শুধু বাহ্যিক আচার নয়, এটি হৃদয়ের বিশুদ্ধতা ও আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠতার প্রকাশ।

বাংলাদেশে হজযাত্রার বর্তমান প্রেক্ষাপট

বাংলাদেশের মুসলমানদের জন্য হজ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। গত দুই দশকে হজযাত্রীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও ব্যয় বৃদ্ধির কারণে নিবন্ধন কমেছে। নিচে গত ১০ বছরের পরিসংখ্যান ও এর বিশ্লেষণ দেওয়া হলো।

আরও পড়ুনমক্কার জমজম কূপের উৎপত্তি০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

হজযাত্রীর পরিসংখ্যান (২০০৯-২০২৪)

বছর    হজযাত্রীর সংখ্যা জন

২০০৯ ৫৮,৬২৮

২০১০  ৯১,৩৮৪

২০১১  ১,০৭,৩৭২

২০১২  ১,১২,৬৮০

২০১৩ ৮৯,১৯০

২০১৪  ৯৮,৬৮৩

২০১৫  ১,০৬,২৩৮

২০১৬  ১,০১,৭৫৮

২০১৭  ১,২৭,১৯৮

২০১৮  ১,২৬,৭৯৮

২০১৯  ১,২৬,১২৩

২০২২  ৬০,০০০

২০২৩ ১,২৬,১২৩

২০২৪  ৮৩,১৪৯

উপর্যুক্ত তথ্য বিশ্লেষণ করলে জানা যায়, ২০১৭-২০১৯ এই সময়ে হজযাত্রীর সংখ্যা সর্বোচ্চ ছিল, যা বাংলাদেশের কোটা (১,২৭,১৯৮) পূরণের ইঙ্গিত দেয়। ২০২০-২০২১ সালে করোনা মহামারির কারণে হজ সীমিত ছিল এবং বাংলাদেশ থেকে কেউ অংশ নিতে পারেননি। ২০২২ সালে করোনার পর কোটা কমে ৬০,০০০-এ নেমে আসে। ২০২৪ সালে হজযাত্রীর সংখ্যা ৮৩,১৪৯, যা কোটার তুলনায় প্রায় ৩৫% কম। এটি অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও ব্যয় বৃদ্ধির ফলাফল।

পেশাভিত্তিক ও লিঙ্গভিত্তিক হজযাত্রী (২০১৯)

পেশাভিত্তিক হজযাত্রীর তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ব্যবসায়ী ৪০ শতাংশ, গৃহিণী ৩৪ শতাংশ, চাকরিজীবী ৯ শতাংশ, কৃষিজীবী ৬ শতাংশ এবং অন্যান্য হজযাত্রীর হার ১১ শতাংশ। একইভাবে লিঙ্গভিত্তিক হজযাত্রীদের তথ্যে পাওয়া যায়, পুরুষ যাত্রী যেখাকে ৬৩, নারী সেখানে ৩৭ শতাংশ।

অর্থাৎ, হজযাত্রীদের বৃহত্তম অংশ ব্যবসায়ী ও গৃহিণী। গৃহিণীদের উচ্চ অংশগ্রহণ নারীদের ধর্মীয় উৎসাহ ও অর্থনৈতিক সামর্থ্য বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। নারীদের ৩৭ শতাংশ অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য, যা সমাজে নারীদের ধর্মীয় সচেতনতা বৃদ্ধির প্রমাণ।

আরও পড়ুনসহজ ওমরাহ ৩০ জানুয়ারি ২০২৫

হজের খরচ ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ

হজের খরচ মূলত ডলার নির্ভর এবং বেশির ভাগ খরচ সৌদি আরবে হয়। খরচের তুলনা করলে দেখা যায়, ২০১৯ সালে ছিল ৫,০০০ ডলার (প্রায় ৫ লাখ টাকা, ডলারের দাম ১০০ টাকা), আর ২০২৪ সালে ৬,০০০ ডলার (প্রায় ৭.৫ লাখ টাকা, ডলারের দাম ১২৫ টাকা)।

খরচ বৃদ্ধির কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে, প্রথমত ডলারের মূল্যবৃদ্ধি: ডলারের দাম ২৫% বেড়েছে, যা হজের খরচকে মধ্যবিত্তের সাধ্যের বাইরে নিয়ে গেছে। দ্বিতীয়ত সৌদি আরবে খরচ বৃদ্ধি: হারাম শরিফের কাছের হোটেল ভাঙার কারণে বাড়িভাড়া, মোয়াল্লেম ফি এবং সার্ভিস চার্জ বেড়েছে এবং তৃতীয়ত বিমানভাড়া: হজের জন্য বিমানভাড়া অস্বাভাবিকভাবে বেশি (২০২৩-এ ১.৯৮ লাখ টাকা)।

হজ নিবন্ধন কমার কারণ

ধীরে ধীরে হজযাত্রী নিবন্ধনের সংখ্যা কমার বেশ কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করা যায়। প্রথমত অর্থনৈতিক চাপ ও ডলারের মূল্যবৃদ্ধি: বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও ডলারের উচ্চ মূল্য হজকে অনেকের জন্য অপ্রাপ্য করে তুলেছে।

দ্বিতীয়ত সৌদি আরবে ব্যয় বৃদ্ধি: বাড়িভাড়া ও অন্যান্য খরচের বৃদ্ধি হজযাত্রীদের ওপর আর্থিক চাপ সৃষ্টি করেছে এবং ওমরাহর প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি: ওমরাহর খরচ (১-১.৫ লাখ টাকা) হজের তুলনায় অনেক কম। ফলে ২০২৩-এ ওমরাহ পালনকারীর সংখ্যা সোয়া লাখ থেকে আড়াই লাখে উন্নীত হয়েছে।

হজের শিক্ষা ও বর্তমান প্রেক্ষাপটের সমন্বয়

হজের শিক্ষা সমতা ও তাকওয়ার মাধ্যমে মানুষকে আল্লাহর নৈকট্য লাভের পথ দেখায়। তবে বাংলাদেশে হজের ক্রমবর্ধমান খরচ এই ইবাদতকে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য কঠিন করে তুলেছে। হজের সমতার শিক্ষা বাস্তবায়নের জন্য এটি অবশ্যই সাশ্রয়ী ও সবার জন্য সহজলভ্য হওয়া উচিত। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত:

•        বিমানভাড়া নিয়ন্ত্রণ: হজের জন্য বিমানভাড়া কমানোর উদ্যোগ নেওয়া।

•        সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা: বাড়িভাড়া ও সার্ভিস চার্জ কমানোর জন্য দ্বিপক্ষীয় আলোচনা।

হজ একটি আধ্যাত্মিক যাত্রা, যা মানুষকে সমতা, ধৈর্য, শৃঙ্খলা এবং আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের শিক্ষা দেয়। বাংলাদেশে হজযাত্রা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হলেও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এই ইবাদতকে অনেকের জন্য কঠিন করে তুলেছে। হজের শিক্ষা বাস্তবায়ন ও এর প্রকৃত উদ্দেশ্য পূরণের জন্য সরকার, হজ এজেন্সি এবং সমাজের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। আল্লাহর ডাকে সাড়া দেওয়ার এই পবিত্র সুযোগ যেন সবার জন্য সহজলভ্য হয়, সেই প্রত্যাশা।

সূত্র: ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ

আরও পড়ুনহজযাত্রীদের টিকা গ্রহণে লাগবে স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট০৮ এপ্রিল ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হজয ত র র স খ য হজয ত র দ র হজ র শ ক ষ ক জ বন র র জন য ন বন ধ র একট র খরচ ওমর হ

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্গাপূজার আগে ভারতে গেল ১ লাখ ৩০ হাজার কেজি ইলিশ

দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে এবার ১২ লাখ কেজি ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল সরকার। এ অনুমতির মেয়াদ রয়েছে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত। এর আগে গত সোমবার পর্যন্ত ভারতে রপ্তানি হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার কেজি ইলিশ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

এ বছর ৩৭টি প্রতিষ্ঠানকে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সোমবার পর্যন্ত ১৬টি প্রতিষ্ঠান ইলিশ রপ্তানি করেছে। অর্থাৎ ২১টি প্রতিষ্ঠান কোনো ইলিশ রপ্তানি করতে পারেনি। ইলিশ রপ্তানি হয়েছে বেনাপোল ও আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে। এ দুটি স্থলবন্দর দিয়ে শেষ মুহূর্তে আর ইলিশ রপ্তানি হওয়ার খুব বেশি সুযোগ নেই।

এনবিআরের হিসাবে, সব মিলিয়ে এবার ইলিশ রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১৬ লাখ ৩৭ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ২০ কোটি টাকা।

এনবিআরের হিসাবে, সব মিলিয়ে এবার ইলিশ রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১৬ লাখ ৩৭ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ২০ কোটি টাকা।সবচেয়ে কম ইলিশ রপ্তানি

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকের মধ্যে ইলিশ রপ্তানি প্রথম শুরু হয় ২০১৯–২০ অর্থবছরে। গত সাত বছরে সবচেয়ে বেশি ইলিশ রপ্তানি হয়েছে ২০২০–২১ অর্থবছরে। ওই সময় ১৭ লাখ কেজি ইলিশ রপ্তানি হয়। এর আগে সবচেয়ে কম রপ্তানি হয় ২০১৯–২০ অর্থবছরে। সেবার ৪ লাখ ৭৬ হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানি হয়েছিল। সেই হিসাবে এবারই সবচেয়ে কম ইলিশ রপ্তানি হচ্ছে ভারতে।

এ বছর ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন পাওয়া ৩৭টি প্রতিষ্ঠানের একটি চট্টগ্রামের কালুরঘাটের প্যাসিফিক সি ফুডস। প্রতিষ্ঠানটি ৪০ হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন পেয়েছে। তবে সিংহভাগই রপ্তানি করতে পারেনি।

জানতে চাইলে প্যাসিফিক সি ফুডসের পরিচালক আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্থানীয় বাজারে ইলিশের দাম কমতে পারে, এমন আশায় ছিলাম আমরা। তবে স্থানীয় বাজারে ইলিশের দাম কমেনি। ফলে মাত্র দেড় হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানি করেছি আমরা। তাতেও লোকসান হয়েছে। দাম বেশি থাকায় আর রপ্তানি করছি না।’

আবদুল মান্নান বলেন, বাংলাদেশের চেয়ে মিয়ানমারের ইলিশের রপ্তানি মূল্য কম। ফলে ভারতের বাজারে মিয়ানমারের ইলিশ বেচাকেনা হচ্ছে বেশি।

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে দেশটি ইলিশ আমদানি করে ভারত। দেশটি বাংলাদেশের চেয়ে বেশি পরিমাণে কম দামে ইলিশ আমদানি করে মিয়ানমার থেকে।

যেমন ২৪–২৫ অর্থবছরে (এপ্রিল–মার্চ) দেশটি মিয়ানমার থেকে সাড়ে ছয় লাখ কেজি ইলিশ আমদানি করেছে। গড়ে ভারতের আমদানি মূল্য ছিল ৬ ডলার ২৩ সেন্ট। অন্যদিকে একই সময়ে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করেছে ৫ লাখ ৪২ হাজার কেজি ইলিশ। গড় আমদানি মূল্য ছিল ১০ ডলার ৯৩ সেন্ট।

এর আগে সবচেয়ে কম রপ্তানি হয় ২০১৯-২০ অর্থবছরে। সেবার ৪ লাখ ৭৬ হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানি হয়েছিল। সেই হিসাবে এবারই সবচেয়ে কম ইলিশ রপ্তানি হচ্ছে ভারতে।ন্যূনতম রপ্তানি মূল্যেই ইলিশ গেল

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবার সাড়ে ১২ ডলার বা ১ হাজার ৫৩২ টাকা দরে ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য বেঁধে দিয়েছে। এর মানে হলো, এর চেয়ে কমে ইলিশ রপ্তানি করা যাবে না। তবে চাইলেই বেশি দামে রপ্তানি করা যাবে।

এনবিআরের তথ্যে দেখা গেছে, ২০১৯–২০ অর্থবছর থেকে এখন পর্যন্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ন্যূনতম মূল্যে ইলিশ রপ্তানি হয়ে আসছে। ন্যূনতম রপ্তানি মূল্যের চেয়ে বেশি দামে ইলিশ রপ্তানির নজির খুব কম।

এ বছর রপ্তানি হওয়া ৪৫টি চালানের মধ্যে ৪৪টি চালানের ইলিশ রপ্তানি হয়েছে ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য অর্থাৎ সাড়ে ১২ ডলারে। শুধু একটি চালান ন্যূনতম রপ্তানি মূল্যের চেয়ে বেশি দামে রপ্তানি হয়েছে। এই চালান রপ্তানি করেছে ভোলার চরফ্যাশনের রাফিদ এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানটি ৪২০ কেজি ইলিশ কেজিপ্রতি ১৩ ডলার ৬০ সেন্টে রপ্তানি করেছে।

স্থানীয় বাজারে ইলিশের দাম কমতে পারে, এমন আশায় ছিলাম আমরা। তবে স্থানীয় বাজারে ইলিশের দাম কমেনি। ফলে মাত্র দেড় হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানি করেছি আমরা। তাতেও লোকসান হয়েছে। দাম বেশি থাকায় আর রপ্তানি করছি না।আবদুল মান্নান, পরিচালক, প্যাসিফিক সি ফুডসপ্রতিবারই অনুমতির চেয়ে কম রপ্তানি

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি এবং এনবিআরের রপ্তানির হিসাব তুলনা করে দেখা গেছে, প্রতিবারই যে পরিমাণ ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়, বাস্তবে রপ্তানি হয় খুব কম। যেমন গত বছর ২৪ লাখ কেজি ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হলেও বাস্তবে রপ্তানি হয়েছে ৪ লাখ ৪৪ হাজার কেজি ইলিশ। অর্থাৎ অনুমতির ২৩ শতাংশ ইলিশ রপ্তানি হয়েছে। এবারও এখন পর্যন্ত অনুমতির ১১ শতাংশ ইলিশ রপ্তানি হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুর্গাপূজার আগে ভারতে গেল ১ লাখ ৩০ হাজার কেজি ইলিশ