দর্শকশূন্য বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় ম্যাচ আয়োজনের সিদ্ধান্ত আপাতত বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তবে শাস্তি থাকছে ‘স্থগিত দণ্ডাদেশ’ হিসেবে। অর্থাৎ ভবিষ্যতে আবার দর্শক হাঙ্গামার মতো ঘটনা ঘটলে কার্যকর হবে দর্শকশূন্য ৬ ম্যাচের শাস্তি।

কেন দর্শক ছাড়া ম্যাচ আয়োজন করা হবে না—এ বিষয়ে বসুন্ধরা কিংসকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল বাফুফের শৃঙ্খলা কমিটি। কিংস কর্তৃপক্ষ সেই নোটিশের জবাব দিলেও তাতে মূলত নিজেদের গুণকীর্তনই করেছে এবং কঠোর সিদ্ধান্ত না নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।

বাফুফেকে পাঠানো কিংসের চিঠিতে আবাহনী ও মোহামেডান এবং তাদের সমর্থকদেরই দোষারোপ করার চেষ্টা ছিল বেশি। এরপরও কিংসের পরবর্তী ম্যাচগুলো দর্শকশূন্য মাঠে আয়োজনের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে ছিল শৃঙ্খলা কমিটি।

কিন্তু বাস্তবতা বিবেচনায় শৃঙ্খলা কমিটিকে নমনীয় হতে হয়েছে। কারণ, বসুন্ধরা গ্রুপ শুধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলের পৃষ্ঠপোষকই নয়, তাদের মাঠ কিংস অ্যারেনা ব্যবহার করে বাফুফেও।

কমিটির এক সদস্য আজ প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘কিংসের মাঠে সাম্প্রতিক হাঙ্গামার কারণে আমরা সবাই হার্ড লাইনে ছিলাম। কিন্তু বাফুফের কিছু বাস্তব সমস্যা আছে। কিংস যদি বেঁকে বসে, ফেডারেশনেরই সমস্যা হবে। তাই আমাদের ওপর অনুরোধ ছিল সিদ্ধান্তটা বুঝেশুনে নিতে।’

ফলে আপসসুলভ আচরণের ভিত্তিতে কিংসের জন্য দর্শকশূন্য ৬ ম্যাচের শাস্তি দেওয়া হলেও সেটি স্থগিত রাখা হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে যদি কিংস অ্যারেনায় এমন কোনো ঘটনা আর না ঘটে, তাহলে এই শাস্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে। তবে এর মধ্যে আবার কিছু ঘটলে তৎক্ষণাৎ শাস্তি কার্যকর হবে।

ওদিকে কিংস ডিফেন্ডার সাদ উদ্দিন কারণ দর্শানোর জবাবে নিজের দোষ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, ঘটনার সময় ‘তার মাথা ঠিক ছিল না’। নিয়ম অনুযায়ী, ম্যাচ অফিশিয়ালকে ধাক্কা দিলে একজন খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ ৬ ম্যাচ নিষিদ্ধ হতে পারেন।

২ মে বসুন্ধরা কিংস ও আবাহনী ম্যাচে কিংসের ফুটবলার সাদ উদ্দিন ম্যাচ কমিশনারকে ধাক্কা দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে তাঁর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।

পেশাদার লিগের দ্বিতীয় স্তরে (বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ) রেফারির ওপর হামলার ঘটনায় ব্যবস্থা নিয়েছে কমিটি। সর্বশেষ গত ১১ মে বাফুফে এলিট একাডেমি ও সিটি ক্লাবের ম্যাচে সিটির তিন কর্মকর্তা রেফারির ওপর শারীরিকভাবে হামলা চালান।

সব মিলিয়ে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের তিন ক্লাবের ৬ কর্মকর্তাকে ৬ ম্যাচ অথবা ৬ মাস নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সঙ্গে শাস্তি দেওয়া হয়েছে এক ফুটবলার ও বলবয়কে। এ ছাড়া সিটি ক্লাবসহ আরও দুই ক্লাবকে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে, যার পরিমাণ ১০ হাজার টাকার আশপাশে।

গতকাল সন্ধ্যায় বাফুফের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে। তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তা ঘোষণা করেনি বাফুফে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্লোটিলা বহরে ভেসে চলা একমাত্র জাহাজ ম্যারিনেট কোথায়

ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-এর একটি মাত্র নৌযান এখনো আটক করতে পারেনি ইসরায়েলি বাহিনী। এই নৌযানটি হলো দ্য ম্যারিনেট।

পোল্যান্ডের পতাকাবাহী এই নৌযানে ছয়জন আরোহী রয়েছেন ।

ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকার অনুযায়ী, ম্যারিনেট আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভেসে চলেছে। এর গতি ঘণ্টায় প্রায় ২.১৬ নট (ঘণ্টায় প্রায় ৪ কিলোমিটার) , গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে ম্যারিনেটের দূরত্ব  প্রায় ১০০ কিলোমিটার।

বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে জাহাজটির ক্যাপ্টেন বলেন, ম্যারিনেটের ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছিল। এটি  এখন সারানো  হয়েছে।

ফ্লোটিলা আয়োজকেরা বলছেন, ম্যারিনেট নৌযান এখনো স্টারলিঙ্কের মাধ্যমে সংযুক্ত। এটি যোগাযোগের আওতার মধ্যেই রয়েছে। লাইভস্ট্রিমও সক্রিয় আছে।  

ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা জানিয়েছে, অন্য জাহাজগুলো আটক করলেও ম্যারিনেট এখনো ভেসে চলছে।

ম্যারিনেট ফিরে যাবে না বলেও ওই পোস্টে জানানো হয়েছে।  পোস্টে বলা হয়েছে, ‘ম্যারিনেট শুধু একটি জাহাজ নয়। ম্যারিনেট হলো ভয়, অবরোধ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তা।’

ফ্লোটিলা আয়োজকরা আরও লিখেছেন, ‘গাজা একা নয়।’ ‘ফিলিস্তিনকে কেউ ভুলে যায়নি। আমরা কোথাও যাচ্ছি না।’

ফ্লোটিলা বহরের প্রায় সব নৌযানে থাকা অধিকারকর্মীদের আটক করেছে ইসরায়েল। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে অনেক দেশ। বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভও হয়েছে।

আরও পড়ুনগাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের৬ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ