চেক বিতরণে বিলম্ব, জামালপুরে ডিসি কার্যালয়ের সামনে আহতদের বিক্ষোভ
Published: 15th, May 2025 GMT
জামালপুরে চেক বিতরণে বিলম্বের অভিযোগ তুলে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ব্যক্তিরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেন। পরে বেলা তিনটার দিকে তাঁদের মধ্যে চেক বিতরণ করা হয়।
আজ বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসনের সভাকক্ষে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৬৭ জনের (সি-ক্যাটাগরি) মধ্যে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণের কথা ছিল। সেই মোতাবেক আহত ব্যক্তিরা যথাসময়ে সেখানে উপস্থিত হন। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে গেলেও চেক বিতরণের কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে তাঁরা বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
আহতদের কয়েকজন জানান, চেক বিতরণের নির্ধারিত সময়ের তিন ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও ডিসিসহ প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তাদের দেখা পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার কারণে অনেকেই আরও অসুস্থ বোধ করেন। অনেকেই না খেয়ে সেখানে উপস্থিত হন। প্রশাসনের একজন মানুষও তাঁদের খোঁজ নেননি। পরে তাঁরা বাইরে বেরিয়ে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভের খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যান এবং বেলা তিনটার দিকে চেক বিতরণ করা হয়।
বিক্ষোভের সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ও আহত এক ব্যক্তি বলেন, ‘ডিসি চাইলে প্রতিনিধির মাধ্যমেও চেকটা বিতরণ করতে পারতেন। কিন্তু উনি সেভাবে বিতরণ করেননি। অথচ তিন ঘণ্টা আমাদের বসিয়ে রাখা হয়েছে। আহতদের জন্য চা বা একটি বিস্কুটের ব্যবস্থাও করা হয়নি। প্রশাসনের কেউ যে এসে বলবে, ডিসির আসতে দেরি হচ্ছে বা হবে, সেটিও কেউ বলেনি।’
ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘তিন ঘণ্টা পর যখন আমরা নিচে আসছি, তখন ডিসি আসছেন, তখনো ডিসি পুলিশের প্রটোকলে ওপরে চলে গেছেন। উনি তো (ডিসি) এখানে দাঁড়িয়ে আমাদের কিছু বলতে পারতেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক হাসিনা বেগম বলেন, ‘আমি আরেকটি অনুষ্ঠানে ছিলাম। ওই অনুষ্ঠানে অনেক সাংবাদিক ও সুশীল ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে ছিলেন। আহত ব্যক্তিদের গুরুত্ব দিতে আমি মাত্র দুটি উপজেলা পরিদর্শন করেছি, বাকি পাঁচটি উপজেলা পরিদর্শন না করেই চলে আসছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ ক ব তরণ
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজারে দুর্ঘটনায় আহতদের বাঁচাতে ইউএনও’র দৃষ্টান্ত স্থাপন
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে গুরুতর আহত তিনজনের জীবন রক্ষায় মানবিক ও দ্রুত তৎপরতার নজির স্থাপন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. সাজ্জাত হোসেন।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুর ৩টার দিকে উপজেলার বিশনন্দি ইউনিয়নের তালতলা মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মদনপুর থেকে যাত্রীবাহী একটি সিএনজি অটোরিকশা বিশনন্দি ফেরিঘাটের দিকে যাচ্ছিল। তালতলা মোড়ে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা গ্যাসভর্তি একটি ট্রাকের সঙ্গে অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এতে ঘটনাস্থলেই অজ্ঞাতনামা দুইজন পুরুষ নিহত হন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন— কুমিল্লার রাবেয়া (৬০), মদনপুর এলাকার সিএনজি চালক আবুল বাশার (৪৫), অজ্ঞাতনামা এক পুরুষ, এক নারী ও এক ১২ বছরের শিশু। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন।
কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সারতি রানী রায় জানান, আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দ্রুত ঢাকায় নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। এ সময় স্থানীয় সাংবাদিক মাসুম বিল্লাহ বিষয়টি ইউএনও মো. সাজ্জাত হোসেনকে অবহিত করেন। খবর পাওয়ার মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে ইউএনও হাসপাতালে পৌঁছে নিজ খরচে চারটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
ঢাকায় নেওয়ার পর আরও দুইজন মারা যান। তবে বাকি তিনজন চিকিৎসাধীন এবং তাদের অবস্থা উন্নতির দিকে বলে জানা গেছে।
মানবিক ভূমিকা সম্পর্কে ইউএনও মো. সাজ্জাত হোসেন বলেন, "মানবিক দায়িত্ব থেকেই আমি দ্রুত হাসপাতালে গিয়েছি। তখন আহতদের জীবন বাঁচানোই ছিল প্রধান কাজ। আশা করছি, তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।"
স্থানীয়রা ইউএনও'র এ উদ্যোগকে ‘সময়ের সঠিক সিদ্ধান্ত’ এবং ‘প্রশংসনীয় দৃষ্টান্ত’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।