চারদফা দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি অব্যহত রেখেছেন। বুধবারের (১৪ মে) চেয়ে তাদের আন্দোলনের ধরন ভিন্ন।

দীর্ঘ ৪০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা ক্লান্তিকর প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচিতে তাদের গল্প, আড্ডা, চা-নাস্তা আর স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাতে কাকরাইল মোড়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।

আরো পড়ুন:

সাম্য হত্যার প্রতিবাদে জাবিতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ

ঢাবির মুরুব্বিয়ানা বন্ধ করতে হবে: শরিফ ওসমান

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবির ব্যাপারে তারা আপসহীন। দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫–২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি কার্যকর করতে হবে; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কোনো কাটছাঁট ছাড়াই অনুমোদন করতে হবে; জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়ন করতে হবে; শিক্ষকদের ওপর হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

জবি শিক্ষার্থী মো.

সাইফ হাসান বলেন, “আমরা উপাচার্য মহোদয় ও উপদেষ্টাদের সংবাদ সম্মেলনের অপেক্ষায় বসে আছি। সময় কাটাতে গল্প করছি। কিন্তু এই অবস্থান কোনো দুর্বলতা নয়। দাবি আদায় না হলে যেকোনো মুহূর্তে আমরা আরো বড় আন্দোলনে যেতে প্রস্তুত।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী সুজন মিয়া বলেন, “আমরা আন্দোলনকে বেগবান করতে বিভিন্ন স্লোগানে চত্বর মুখর রেখেছি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এখান থেকে এক কদমও সরব না।”

শিক্ষার্থী রিমা আক্তার বলেন, “আমাদের এই আন্দোলন শুধু দাবি আদায়ের জন্য নয়, এটি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের একটি সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছি, কিন্তু আমাদের উপেক্ষা করা হলে পরবর্তী কর্মসূচি হবে আরো জোরদার।”

শান্তিপূর্ণ এই অবস্থান কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানাচ্ছেন অনেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের একটি অংশও। তবে এখনো প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। শিক্ষার্থীরা আশা করছেন, দাবি দ্রুত মেনে নিয়ে সংকট সমাধানের পথ খুলে দেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবস থ ন ক

এছাড়াও পড়ুন:

ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা চ্যালেঞ্জের

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা সব সময় চ্যালেঞ্জের। গত এক বছরে এই চ্যালেঞ্জটা আরও বড় করে দেখা দিয়েছে। আমরা শুরু থেকেই বলে এসেছি, পারস্পরিক স্বার্থ আর শ্রদ্ধার ভিত্তিতে আমরা ভারতের সঙ্গে একটা ‘গুড ওয়ার্কিং রিলেশন’ (কাজের ক্ষেত্রে ভালো সম্পর্ক) চাই। আর এই সম্পর্কটা হবে ৫ আগস্ট-পরবর্তী পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে জনগণের প্রত্যাশাকে বিবেচনায় নিয়ে। বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু বলেনি যে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করতে হবে। মানুষ চায় দুই দেশের সম্পর্ক হবে পারস্পরিক স্বার্থ আর পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে। দেশের জনগণের একটা বড় অংশের ধারণা, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী সরকার সেটা করেনি। দেশের স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়নি। কাজেই দুই দেশের স্বার্থ রক্ষা করে ভালো সম্পর্কে যে গুরুত্ব দিয়েছি, এটা আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ।

চীন নিজেও জানে এবং আমরাও তাদের বোঝাতে পেরেছি, ’৭৫ সালে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশটির সঙ্গে সুসম্পর্ক সব সময় বজায় থেকেছে। এমনকি বাংলাদেশের ক্ষমতায় বিপরীতমুখী দল থাকলেও সম্পর্ক এগিয়ে গেছে। এই ধারাবাহিকতায় গত এক বছরে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে।

আরও পড়ুনদ্বিধা আর সমন্বয়হীনতায় সরকারের কূটনীতি৩ মিনিট আগে

পাল্টা শুল্ক নিয়ে সাময়িকভাবে অস্বস্তি তৈরি হলেও গত এক বছরে সামগ্রিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বেশ ভালো। যুক্তরাষ্ট্রকে আমরা বোঝাতে সক্ষম হয়েছি যে চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক তাদের জন্য হুমকি বা ক্ষতিকর কিছু নয়। এটা মূলত অর্থনৈতিক সম্পর্ক। আমাদের নিজেদের স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।

পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমরা ‘আউট অব দ্য ওয়ে’ (নিয়মের বাইরে গিয়ে) কিছু করছি না। অন্য অনেক দেশের মতোই আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে একটা স্বাভাবিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি। যেখানে ব্যবসা, বিনিয়োগের পাশাপাশি মানুষের চলাচল সুগম করার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। পাকিস্তানের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে বৈরী সম্পর্কের প্রয়োজন নেই। অতীতে অকারণে পাকিস্তানের সঙ্গে বৈরী সম্পর্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। আমরা সেখান থেকে বের হয়ে এসেছি। পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক করার সময় অমীমাংসিত তিন বিষয় আলোচনার টেবিলে থাকছে।

রোহিঙ্গা সংকটে জটিলতা বেড়েছে। মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধের অবসানের পর রাখাইনে নতুন পরিস্থিতি তৈরি হবে। সে ক্ষেত্রে সেখানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় চাপ সৃষ্টি করতে হবে। তখন রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো যেতে পারে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের ঢাকা মিশনটি চালুর ক্ষেত্রে দেশের স্বার্থ বিবেচনা করে পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাইয়ের পর সম্মতি দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘ যেভাবে প্রস্তাব দিয়েছিল, সে অনুযায়ী মিশনটি চালু হয়েছে এমনটি নয়। মানবাধিকার সুরক্ষায় আমাদের সমস্যা ছিল এবং এখনো আছে। এখানে জাতিসংঘের মিশন চালুর ফলে মানবাধিকার ইস্যুতে সরাসরি দুই পক্ষের কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

বিদেশে কনস্যুলারকেন্দ্রিক বাংলাদেশের মিশনে জনগণের সেবা সহজলভ্য করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে মালয়েশিয়ার জহুরবারুতে কনস্যুলেট চালু হচ্ছে। সৌদি আরবে আরেকটি কনস্যুলেট চালু করা হবে। ওমানে লোকজনের দুর্ভোগ কমাতে ওমান পোস্টের মাধ্যমে পাসপোর্ট পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তবে মূল চ্যালেঞ্জটা অর্থনীতির ক্ষেত্রে। বিনিয়োগকারীরা রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা পছন্দ করেন না। আমাদের এই সরকার দীর্ঘ মেয়াদে দায়িত্বে থাকবে না। এরপরও বিনিয়োগকারীদের বোঝাতে হয়েছে যে তাঁরা কোনো বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে এলে পরবর্তী সরকার এসে আটকে দেবে না। এরপরও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ আশাব্যঞ্জক নয়। ফলে অর্থনীতির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জটা রয়ে গেছে।

মো. তৌহিদ হোসেন, উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪৪তম বিসিএস : ফল নিয়ে দীর্ঘসূত্রতা, অনিশ্চয়তায় ১,৩১৮ প্রার্থী
  • ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক: ফলপ্রসূ দাবি, অর্জন নিয়ে প্রশ্ন
  • আলাস্কা শীর্ষ বৈঠক ট্রাম্প-পুতিন ও ইউক্রেনের জন্য কী বার্তা আনল
  • গত অর্থবছরে আরও সাত দেশে ওয়ালটনের ব্যবসা সম্প্রসারণ
  • ১২ দিনে প্রবাসী আয় এসেছে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি
  • ১৬০ কোটি টাকার গৃহকর নিয়ে দ্বন্দ্ব মেটাতে যৌথ কমিটি
  • যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি ক্রয়াদেশ অনেক পোশাক কারখানায়
  • সোনারগাঁয়ের আলোচিত চেয়ারম্যান লায়ন বাবুল গ্রেপ্তার
  • ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা চ্যালেঞ্জের
  • ১২ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এল ১০৫ কোটি ডলার