মালয়েশিয়ায় ‘নতুন রাজনৈতিক দলের কাছে প্রবাসীদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার কুয়ালামাপুরের একটি হোটেলে এনসিপি মালয়েশিয়া চ্যাপ্টারের উদ্যোগে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

কেন্দ্রীয় ডায়াস্পোরা এলায়েন্সের মালয়েশিয়া চ্যাপ্টারের সমন্বয়ক ইঞ্জিনিয়ার মো. এনামুল হকের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব আলাউদ্দীন মোহাম্মদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন উত্তরাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক অ্যাডভোকেট আলী নাছের খান। উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়া চ্যাপ্টারের নির্বাহী সদস্যরা।

আলোচনা সভাটি মূলত একটি কর্মশালার মতো করে অনুষ্ঠিত হয়। অংশগ্রহণকারী সদস্যরা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে এনসিপির বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে তাদের জিজ্ঞাসা জানতে চান এবং নেতারা বিষয়গুলো স্পষ্ট করেন।

আলোচনার প্রথম পর্বে এনসিপির ৫টি শক্তিশালী ভিত্তির ওপর আলোচনা করেন আলাউদ্দীন মোহাম্মদ। এগুলো হলো-

১) ২৪ এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান যেটি এনসিপি প্রতিষ্ঠার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি গণঅভ্যুত্থানকে এনসিপির রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে উল্লেখ করেন।

২) গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এনসিপি- বাংলাদেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলো যখন বাংলাদেশের স্বৈরতন্ত্রের জাল ভেদ করতে পারেনি তখন এনসিপির আজকের তরুণ নেতৃত্বই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জীবন বাজি রেখে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল। তাই পরিপূর্ণ সংস্কারের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এনসিপি সোচ্চার থাকবে।

৩) আগ্রাসনবিরোধী অবস্থান- এনসিপির জন্মের পূর্ব থেকেই তার নেতারা গণবিরোধী ও বহি:রাষ্ট্রের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী জাতীয়তাবাদী অবস্থান নিয়ে এখানে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতির ভিত রচনা করেছে। এনসিপি আগামী দিনগুলোতেও বাংলাদেশের জনগণের সম্মতির বাইরে কোনো দেশের বা বহি:রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ প্রতিরোধের মাধ্যমে তার রাজনীতি চালিয়ে যাবে।

৪) বিভাজনের রাজনীতির বদলে জাতীয় ঐক্য- এনসিপি অতীতে জাতীয়তাবাদের নামে, পরিচয়ের নামে, ধর্মের নামে, আদর্শের নামে জাতিকে বিভক্ত রাখার রাজনীতিকে খারিজ করে বিরল ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করেই স্বৈরতন্ত্রের উৎখাত করেছিল। আগামী দিনগুলোতেও বৈচিত্র্যের মধ্যে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমেই এনসিপি বাংলাদেশ রাষ্ট্র পরিচালনা করবে।

৫) প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল- এনসিপি গণঅভ্যুত্থানকারী প্রজন্মের প্রতিনিধি যারা যেকোনো মূল্যে এই প্রজন্মের মূল্যবোধ ও আশা আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ তৈরি করতে চায়। আজকের তরুণ আগামী দিন জাতির হাল ধরবে। তাই তরুণদের রাষ্ট্র গঠনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ গঠনই এনসিপির আগামীর রাষ্ট্রকল্প।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি এডভোকেট আলী নাছের খান এনসিপির আগামীর কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

১) নাগরিক অধিকারভিত্তিক রাজনীতি- যেমন নাগরিকদের প্রাইভেসি, মতামত নেওয়ার ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ, নাগরিক অধিকার, সেলফ রেসপেক্টসহ ইত্যাদি নাগরিক অধিকারভিত্তিক বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়া।

২) প্রতিটি নাগরিকের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ও জীবনের নিরাপত্তা বিধান করা।

৩) বিশ্বজুড়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মূলধারায় যুক্ত করার জন্য কাজ করে যাওয়া।

আলোচনা সভায় প্রবাসীগণ মালয়েশিয়ায় তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে পাসপোর্ট সেবা, এটেস্টেশন ফি ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতাসহ প্রবাসীদের কল্যাণ সাধনে এনসিপির অবস্থান ও পরিকল্পনা জানতে চান।

অনুষ্ঠানে পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প র র জন ত র জন ত ক এনস প র প রব স অন ষ ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

নানা দাবির নামে নির্বাচন ব্যাহত করার চেষ্টা চলছে: মির্জা ফখরুল

কিছু গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে চাইছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নানা দাবি তুলে তারা নির্বাচনকে ব্যাহত, বিলম্বিত বা বন্ধ করতে চায়। কিন্তু দেশের মানুষ এখন চায় একটি নির্বাচিত সরকার, যার পেছনে জনগণের সমর্থন থাকবে।

রবিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

ভারত ‘দাদাগিরি’ দেখালে বাংলাদেশকে বন্ধু হিসেবে পাবে না: ফখরুল

পানির ন্যায্য হিস্যা ও সীমান্ত হত্যা বন্ধে জোর দেবে বিএনপি

এ সময় তিনি বলেন, "আমরা বারবার বলেছি, নির্বাচনই হচ্ছে একমাত্র পথ, যা দিয়ে ট্রানজিশন করে গণতন্ত্রে যাওয়া সম্ভব। হতাশা আর অনিশ্চয়তার মধ্যেও এখন একটি সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে যে ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।"

মির্জা ফখরুল বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের নামে যারা এসেছে, তারা রাজনৈতিক কাঠামোকে একটা জায়গায় নেওয়ার চেষ্টা করেছে, কিন্তু তা জনগণের প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, তা এখনো বলা যায় না। অর্থনীতির অবস্থা খুবই খারাপ হচ্ছে, নির্বাচন ছাড়া এটি আরও খারাপ হবে। আইনশৃঙ্খলার অবস্থাও খারাপ, নির্বাচিত সরকার না থাকলে তা আরও অবনতির দিকে যাবে।”

বিএনপির মহাসচিব বলেন, “আগামীকাল যে ফ্যাসিস্ট হাসিনার গণহত্যার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল রায় দেবে, এটা নিয়ে সারা দেশে এক ধরনের চরম অনিশ্চয়তা, এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে একটি মহল আবারও দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে। আমাদের তা রুখে দিতে হবে।” 

রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমি সব রাজনৈতিক দলকে বলবো আসুন, ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সামনে এগিয়ে যাই। মওলানা ভাসানীর আদর্শ অনুসরণ করে আমরা যেন এই দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারি।”

মওলানা ভাসানী মৃত্যুবার্ষিকী পালন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে ও কৃষকদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমানসহ আরো অনেকে। 

ঢাকা/রায়হান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে জাতি নবজন্ম লাভ করবে: প্রধান উপদেষ্টা
  • হৃদয় থেকে বলছি, শেখ হাসিনা খালাস পেলে খুশি হব: রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী
  • রায় শুনতে ট্রাইব্যুনালে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধারা 
  • ঢাকায় বড় পর্দায় দেখা যাবে শেখ হাসিনার মামলার রায়
  • শেখ হাসিনার মামলার রায়: ন্যায়বিচার ও স্বচ্ছতার দাবি ফখরুলের
  • বেওয়ারিশ জুলাই শহীদদের শনাক্তে আসছে বিদেশি ফরেনসিক টিম
  • বিভ্রান্তি-হতাশা-অনিশ্চয়তার মধ্যেও নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে: ফখরুল
  • নানা দাবির নামে নির্বাচন ব্যাহত করার চেষ্টা চলছে: মির্জা ফখরুল
  • সেই গণতন্ত্র যেন আর কোন ফ্যাসিবাদের জন্ম না দেয় : মামুন মাহমুদ
  • পারভেজের কথায় ‘বিজয় নেবে ধানের শীষ’